November 13, 2025, 10:26 pm
Logo
শিরোনামঃ
শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ সাভারে ঐতিহাসিক ৭ ই, নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে, সালাউদ্দিন বাবুর পক্ষে আলোচনা সভা  সাভার পৌরসভায় জামায়াতের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৯ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন ডাঃ দেওয়ান মোঃ সালাউদ্দিন বাবু আশুলিয়ায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মান’ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও গুমের শিকার সুরুজ্জামানের লোমহর্ষক বর্ণনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদেরকে ভোটব্যাংক হিসেবে নয়, সুনাগরিক হিসেবে মূল্যায়ন করে এনসিপি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার আজ মহা অষ্টমী ও কুমারী পূজা সাভারে দুর্গোৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শন এবং উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন সাবেক ছাত্রনেতা ওবায়দুর রহমান অভি সাভারে যুবদল নেতার উপর হামলা, আহত তিন 
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত করতে লাশ উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিনিধি 152
নিউজ আপঃ Wednesday, October 16, 2024

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিস চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিতে কবর থেকে তোলা হলো দেহাবশেষ। আদালতে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাভারের বিরুলিয়া গোলাপ গ্রামের জামিয়া খাতামুন্নাবীয়্যীন মাদরাসর কবরস্থান থেকে দেহাবশেষ তুলে নেয়া হয় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় সাভার রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নূর এর উপস্থিতিতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর জালালাবাদ এলাকায় অবস্থিত জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন ঢাকা মাদ্রাসার নিজস্ব কবরস্থান থেকে তার মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। ডাঃ নাজমুন নাহারের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৪ ঘন্টা ধরে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞরা।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য কবর থেকে লাশ তুলে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ের বিচার শাখা থেকে ৮ই অক্টোবর একটি নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ই অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্টার জেনারেলের কার্যালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সহকারী রেজিস্টার জেনারেল মো. আখতার জামিল এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: হাবিবুর রহমানের পৃথক স্বাক্ষরিত চিঠিতে লাশ উত্তোলনে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী লাশ উত্তোলনে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-১০৭৮৭/২৪-এ হারিছ চৌধুরীর মৃতদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য আদালত আদেশ প্রদান করেন। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এই মর্মে যে, তার পিতা হারিছ চৌধুরীকে জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন ঢাকা মাদ্রাসার কবরস্থানে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়। হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ কবর থেকে উত্তোলন করে তার পরিচয় প্রমাণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করানো, পরিচয়ের ইতিবাচক ফলাফল, মৃত্যু সনদ পাওয়া, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ থেকে তার নাম মুছে ফেলা এবং তাকে নিজ জেলায় মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে দাফন করার আবেদন করেন।

জানতে চাইলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ বলেন, প্রফেসর মাহমুদুর রহমান নামে এখানে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী এমন দাবির প্রেক্ষিতে তার মেয়ের করা এক রিটের ভিত্তিতে হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ টেস্টের জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

সাভার রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম রাসেল ইসলাম নূর বলেন, হারিছ চৌধুরীর মেয়ের করা একটি রিটে হাইকোর্টের নির্দেশে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। এরপরে পরিচয় নিশ্চিতদের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। হারিছ চৌধুরীর মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হলে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানিয়ে দাফন করা হবে।

এ সময় সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশিক ইকবাল, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হেলাল উদ্দিন, বিরুলিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ওয়াজেদ মিয়া, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের (সিএসইউ) কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৫ই জানুয়ারি একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়, হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মারা গেছেন। হারিছের বিলেত প্রবাসী মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী এটা নিশ্চিত করেন। বলেন, তার বাবা হারিছ চৌধুরী ২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন। যদিও তার চাচা আশিক চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, হারিছ ঢাকায় নয়, লন্ডনে মারা গেছেন। এই খবর প্রকাশের পর অনেকেই বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে উড়িয়ে দেন।

গোয়েন্দারাও একাধিকবার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের দৈনিক পত্রিকাটিকে ফোন করে সত্যটা জানতে চান। এরপর থেকে ওই পত্রিকা অনুসন্ধান চালাতে থাকে। অনুসন্ধানে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। হারিছ নয়, মাহমুদুর রহমান মারা গেছেন শিরোনামে প্রকাশিত অনুসন্ধানী রিপোর্টটি দেশ-বিদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী আসলে মারা যাননি। মারা গেছেন মাহমুদুর রহমান। হারিছ চৌধুরী দীর্ঘ ১৪ বছর গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন।

তিনি ভারত কিংবা লন্ডনেও যাননি। বাংলাদেশের ভেতরেই ছিলেন এবং ঢাকাতেই বেশিরভাগ সময় কাটান। ওয়ান ইলেভেনের পরপরই কিছুদিন সিলেটে অবস্থান করেন। ঢাকায় আসার পর তিনি নাম বদল করেন। নাম রাখেন মাহমুদুর রহমান। দীর্ঘ ১৪ বছর এই নামেই পরিচিত ছিলেন। পরিচয় দিতেন একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হিসেবে। ঢাকার পান্থপথে প্রায় ১১ বছর কাটিয়ে দেন এই পরিচয়ে। এই সময় তিনি মাহমুদুর রহমান নামে একটি পাসপোর্টও নেন। পাসপোর্ট নম্বর BW0952982। এতে ঠিকানা দেন শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার। বাবার নাম আবদুল হাফিজ। ২০১৮ সনের ৬ই সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু হয়। পাসপোর্টে দেয়া ছবিতে দেখা যায় এ সময় তার চেহারায় এসেছে অনেক পরিবর্তন।

সাদা লম্বা দাড়ি। চুলের রঙ একদম সাদা। বয়সের ছাপ পড়েছে। শুধু পাসপোর্ট নয় জাতীয় পরিচয়পত্রও পেয়ে যান মাহমুদুর রহমান নামে। তার এনআইডি নম্বর হচ্ছে ১৯৫৮৩৩৯৫০৭। পাসপোর্ট ও এনআইডি‘র সূত্র ধরে দৈনিক পত্রিকাটি অনুসন্ধান চালাতে থাকে। প্রায় দু’মাস অনুসন্ধানের পর প্রতিবেদক জানতে পারে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানই আলোচিত রাজনৈতিক নেতা হারিছ চৌধুরী।


এই বিভাগের আরও খবর....
ThemeCreated By bdit.Com
Share