মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
বিরামপুরে শহিদ পরিবারের সাথে জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সনাতন ধর্মালম্বীদের সাথে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নবাবগঞ্জে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক যুগ্মসচিব নিশীথ কুমার সরকার রাজশাহীতে আল আকসা’র বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ২০২৪ জামাল হত্যা মামলার বাদী ইমরানের বসত বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায় হরিলোট প্রতিবাদে মানববন্ধন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ মতবিনিময় সভা মাদ্রাসার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়া প্রকল্পে চাকুরি, লভ্যাংশ প্রদান সহ ৭ দফা দাবিতে পায়রা  তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থদের মানব বন্ধন গণতন্ত্রকে পরিবারতন্ত্র ধ্বংস করছে : নতুনধারা   রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

দেহ ব্যবসায় বাধ্য হচ্ছেন স্কুল শিক্ষিকা

প্রতিবেদকের নাম / ৩৭১
নিউজ আপঃ বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ১:২৬ অপরাহ্ন

দেশে থাকতে তারা ছিলেন স্কুল শিক্ষক, পুলিশের কর্মকর্তা কিংবা পত্রিকার হকার। কিন্তু জীবন বাঁচানোর তাগিদে কর্ম ও অর্থের সন্ধানে তারা নিজ দেশে ছেড়ে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য হয়েছেন।

অর্থনৈতিক সঙ্কটে জর্জরিত ভেনিজুয়েলার নারীরা কলম্বিয়ার বিভিন্ন বারে পতিতাবৃত্তিতে নাম লিখিয়েছেন। দেশে পরিবারের সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করতে যা পাচ্ছেন তাই করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

তিন সন্তানের মা প্যাট্রিসিয়ার (৩০) অভিজ্ঞতাটা একটু তিক্ত। কলম্বিয়ার মধ্যাঞ্চলের কালামারে একটি পতিতাপল্লীতে কাজ করছেন তিনি। সেখানে অনেক সময় নেশাগ্রস্ত খদ্দেরের হাতে মারপিট, ধর্ষণ ও শারীরিক নিপীড়নের শিকার হতে হয় তাকে।

তিনি বলেন, ‘পল্লীতে অনেক খদ্দের আছে, যারা আপনাকে একেবারে খারাপ দৃষ্টিতে দেখবে; যা ভয়ঙ্কর। প্রত্যেকদিন আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, আজকের খদ্দের যেন ভালো।

ইতিহাস এবং ভূগোলের শিক্ষক অ্যালেজরিয়া। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে ভেনিজুয়েলায় তিনি মাসে আয় করতেন ৩ লাখ ১২ হাজার বলিভার; যা এক ডলারেরও কম। তার এই বেতনে এক প্যাকেট পাস্তাও কেনা যায় না। চার সন্তানের মা ২৬ বছর বয়সী এই নারী বার্তাসংস্থা এএফপিকে এসব কথা বলেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কলম্বিয়ায় ঢুকে পড়েন। প্রথম তিন মাস তিনি দেশটির একটি হোটেলে ওয়েট্রেস হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু এর বিনিময়ে তিনি কোনো বেতন পেতেন না। সামান্য কিছু টিপস পেতেন তিনি।

অ্যালেজরিয়া বলেন, দেশে আমার পরিবারের কাছে এই টিপসের অর্থ পাঠাতাম। তার সন্তান-সহ পরিবারে রয়েছে ছয় সদস্য। কিন্তু এই চাকরিটা হারানোর পর অ্যালেজরিয়া কালামারে পাড়ি জমাতে বাধ্য হন। কলম্বিয়ার এই অঞ্চলে দশকের পর দশক ধরে সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছে। মাদক চোরাচালানের অন্যতম একটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত কালামারে দেশটির সাবেক গেরিলাগোষ্ঠী ফার্কের ঘাঁটিও রয়েছে।

অন্য আরো নয়জন নারীর সঙ্গে অ্যালেজরিয়া ৩ হাজার মানুষের শহর কালামারের একটি বারে প্রত্যেক রাতে দেহ ব্যবসা করছেন। প্রত্যেক খদ্দেরের কাছ থেকে পান ৩৭ হাজার থেকে ৫০ হাজার পেসো (১১ থেকে ১৬ ডলার)। কিন্তু তার এই আয়ের সাত হাজার পেসো দিতে হয় বারের ম্যানেজারকে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কোনো রাতে অ্যালেজরিয়ার আয় হয় ৩০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত।

এএফপির সঙ্গে আলাপের সময় গলা ধরে আসছে জলির। তিনিও অ্যালেজরিয়ার মতো নিজ দেশ ছেড়ে কলম্বিয়ায় পৌঁছে দেহ ব্যবসা করে পরিবারের ভরণ-পোষণ চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা কখনোই দেহ ব্যবসা করতে চাই না। আমরা এই কাজ করছি সঙ্কটের কারণে।

৩৫ বছর বয়সী এই নারী দেশে থাকতে পত্রিকারের হকার ছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালে দেশটিতে কোনো পত্রিকাই বের হচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে এই পেশা ছেড়ে কলম্বিয়ায় আসেন তিনি। মন্দার চার বছর ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কয়েক বছর পর ভেনিজুয়েলায় এখনো মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে থাকা দেশটির মানুষ খাদ্য সংস্থান, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও পাচ্ছেন না।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য বলছে, চলতি বছরে দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন শতাংশে পৌঁছেছে। আগামী বছর এই মুদ্রাস্ফীতির হার এক কোটি শতাংশে পৌঁছাতে বলে মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

জলি তার মা ও তিন সন্তানকে দেশে রেখে এসেছেন। দেশে থাকতে একটি চাকরির জন্য এক শহর থেকে অন্য শহর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু হতাশ হয়ে পাসপোর্ট ছাড়াই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কলম্বিয়ায় ঢুকে পড়েন তিনি। কলম্বিয়ায় যখন আসেন তখন পরনের কাপড় ছাড়া তার সঙ্গে কিছুই ছিল না।

জাতিসংঘ বলছে, ভেনিজুয়েলায় অর্থনৈতিক সঙ্কট শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

জলির গল্পটা আরো বেদনাদায়ক। এর আগে স্বামী তাকে তালাক দিয়েছেন। মূত্রাশয়ের সমস্যায় মারা গেছেন তার স্বামী। স্বামী ছেড়ে যাওয়ায় সন্তানদের লালন-পালন করছেন তিনি। জলি বলেন, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন তার স্বামী। ওই সময় পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও ওধুষ পাননি তিনি।

জলি বলেন, আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। দেশে ক্লিনারের কাজ জোগার করতেও সক্ষম হননি তিনি। শেষ পর্যন্ত কলম্বিয়ায় যেতে বাধ্য হন; সেখানে পৌঁছে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। চলতি বছরের জুনে কালামারে তার সঙ্গে এই পেশায় নাম লিখিয়েছেন জলির ভাইয়ের ১৯ বছর বয়সী মেয়ে মিলাগরো।

এই কিশোরী বলেন, প্রথমে আমি ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি এই কাজ করতে বাধ্য হন। কারণ দেশে তার মা অসুস্থ। মায়ের চিকিৎসার পাশাপাশি ছোট ভাই ও দুই বছর বয়সী সন্তানের ভরণ-পোষণ চালাতে হয় তাকে। পরে তার মা মারা যান।

অ্যালেজরিয়ার স্বপ্ন তিনি কলম্বিয়ায় স্কুল শিক্ষিকা হিসেবে আবারো কাজ শুরু করবেন। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া এটি সম্ভব নয়।

সূত্র : এএফপি।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Share
Share