রাজবাড়ী সদর উপজেলার চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন গত শুক্রবার পদ্মা নদীতে বিলীন হয়েছে। কোন বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে গাছের নিচে। এই বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৮৯ সালে৷ প্রথম দফায় একবার এই স্কুলটি ভাঙনের শিকার হয়। পরবর্তীতে চরসিলিমপুর এলাকায় স্থানান্তর করা হয়৷ এবার আবার ভাঙনের শিকার হয় এই স্কুলটি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়টির অর্ধেক পদ্মানদীতে ধ্বংসস্তুপের মতো পড়ে আছে । সেখান থেকে একটু দূরে খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। প্রচন্ড গরমে শিক্ষকেরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা খাতুন বলেন, আমাদের স্কুলটি কিছুদিন আগে নদীতে ভেঙে গেছে। এজন্য গাছতলায় ক্লাস করতে হচ্ছে। এখানে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে বই-খাতা ভিজে যাই। আসা যাওয়া অনেক কষ্ট হয়। এছাড়া বিভিন্ন সমস্যা হয় এই গাছতলায় ক্লাস করতে।
সহকারী শিক্ষক আনছার আলী বলেন, আমরা আপাতত গাছের তলায় ক্লাস নিচ্ছি । স্কুল তৈরি হচ্ছে সেটা কম্পিলিট হলে সেখানে ক্লাস করাতে পারবো। তিনি বলেন এই স্কুলে এখন মোট ১০৮ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। পঞ্চম শ্রেণির মোট ছাত্র-ছাত্রী ১৩ জন উপস্থিত আছে ৭ জন (নিউজ সংগ্রহের দিন ২৮ সেপ্টেম্বর ) । তিনি আরও বলেন এখানের রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো না। দূর থেকে আসা-যাওয়া খুব কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে আরো সমস্যা। একমাত্র যোগাযোগের রাস্তা বর্ষার সময় তলিয়ে যায়। এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক ঈমান আলী ফকির বলেন, নদী ভাঙনে আমাদের স্কুলটি বিলীন হয়ে গেছে । সে সময় কিছু আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে পেরেছি। একটি টিনের ঘর ছিল সেটা ভেঙে স্থানীয় একজনের যাইগাতে ঘর করা হচ্ছে। সেটা কম্পিলিট হলে সেখানে ক্লাস করতে পারবে। এখন অনেকটা কাজ হয়ে গেছে। পাশাপাশি গাছের তলায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। টিন শেডের ঘরটি দেখতে পাওয়া যাই দুইটি রুমের। ঘরটি ছোট হয়ওয়ায় ১০৮ জন ছাত্র-ছাত্রী ক্লাস করতে পারবে কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন বর্তমান রুটিন হিসাবে সমস্যা হবে না।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাওমি মোঃ সায়েম বলেন, নদীতে বিদ্যালয়টি ভেঙে যাওয়ায় পাশেই অস্থায়ী পুননির্মাণের কাজ চলছে। টিনের ঘরটি নির্মাণ হয়ে গেলে সেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে পারবে৷