রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
প্রকল্পে চাকুরি, লভ্যাংশ প্রদান সহ ৭ দফা দাবিতে পায়রা  তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থদের মানব বন্ধন গণতন্ত্রকে পরিবারতন্ত্র ধ্বংস করছে : নতুনধারা   রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সকল সরকার : মোমিন মেহেদী ফেনী ও নোয়াখালীতে বন্যাদুর্গতদের পাশে এসএলএ ২২ দিন পর লাশ উত্তোলন ৩ আসামি কারাগারে  ত্রান প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট, এবার পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের রাজশাহীতে গৃহবধূকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শশুরকে হত্যার চেষ্টা, প্রতিবাদে মানববন্ধন কলাপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গায়েব করার হুমকী দেয়ায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় সাধারন ডায়রী
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

 ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার হলো সাভারে জোড়া খুনের প্রধান আসামী

রিমন সোহেল ঢাকা জেলা প্রতিনিধি: / ৩৩১
নিউজ আপঃ বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১, ১:৩০ অপরাহ্ন

ঢাকার সাভারে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রধান আসামী শাহাজালাল (২৬) কে নজির বিহীন দ্রুত সময়ের (৪৮ ঘন্টার) মধ্যে গ্রেফতার করেছেন হেমায়েতপুর ট্যানারি পুলিশ ফাড়ির অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম। গ্রেফতার আসামী বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। আলোচিত এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত রবিউল নামে আরও একজন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে ঢাকার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জাবানবন্দি প্রদান করেন গ্রেফতার শাহাজালাল। এর আগে সোমবার ভোর রাতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করেন হেমায়েতপুর ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে সাভার মডেল থানা পুলিশ। পরে দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে, গত শুক্রবার (১১ জুন) সাভারের হেমায়েতপুরের যাদুরচর এলাকায় পাশাপাশি পাট ও ধইঞ্চা ক্ষেতে পড়ে থাকা দুই খালাতো ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐদিনই নিহতের বাবা রতন বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতার শাহাজালাল (২৩) শাহ আলমের ছেলে এবং নিহত রায়হান হোসেনের ফুপাতো ভাই। তিনি রায়হানদের বাসায় থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। শাহজালালের সহযোগী ও মামলার আসামী রবিউলও একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। তার বিস্তারিত পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
নিহতরা হলো- বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার পশ্চিম শেওড়া উত্তরপাড়া গ্রামের রতনের ছেলে রায়হান (১৭) এবং একই এলাকার নেছার মোল্লার ছেলে নাজমুল (১৮)। তারা একে অপরের খালাতো ভাই। এদের মধ্যে রায়হান হেমায়েতপুরের আল-নাছির ল্যাবরেটরি স্কুলের এসএসসি পরিক্ষার্থী। সে উত্তর যাদুরচর এলাকায় বাবা মায়ের সাথে ভাড়া থেকে লেখাপড়া করছিলো। নাজমুল বরিশাল থেকে তার খালার বাসায় বেড়াতে এসেছিল।
এ ঘটনায় অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সাভার মডেল থানার ট্যানারী পুলিশ ফাঁড়ির  অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বিপিএম-পিপিএম জানান, প্রায় দেড় মাস আগে পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে নিহত রায়হানের বোন পপি তার মামাতো বোন সাবানাকে লাথি মারে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ থেকে বোন সাবানার প্রতিশোধ নিতে ভাই শাহাজালাল তারই ফুফাতো ভাই ও পপির আপন ভাই রায়হানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী ১০ জুন রাতে রায়হানকে মদ খাওয়ানোর কথা বলে বাসা থেকে কৌশলে নিয়ে আসে শাহাজালাল। সে সময় রায়হানের সাথে তার খালাতো ভাই নাজমুলও বের হন। নিহত নাজমুল সেই দিনই বরিশাল থেকে রায়হানদের বাসায় বেড়াতে আসে। পরে রাতে ভাকুর্তার একটি ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দুইজনকেই কুপিয়ে হত্যা করে। তবে এ ঘটনায় শাহাজালালের বোন সাবানা কিছু জানতো না।
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও হত্যাকারীর প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সরদার বিপিএম পিপিএম স্যারের সুদক্ষ নির্দেশনায়, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ উত্তর) আব্দুল্লাহ হিল কাফী স্যার ও সাভার মডেল থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম পিপিএম স্যারের প্রত্যক্ষ দিক-নির্দেশনায় মাত্র ৪৮ ঘন্টারও কম সময়ে ঘটনার মুল আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। পরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে আসামি হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম ২০২০ সালের ৫ মার্চ সাভারের হেমায়েতপুর ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়িতে ইনচার্জ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ওই এলাকার সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ দমন, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের চৌকস এই কর্মকর্তা ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ এবং ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ এমনটিই প্রমাণ করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর লগ্ন থেকেই পুলিশ ফাঁড়িতে আগত জনতা ও পুলিশ সদস্যদের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যাবহার করে পুলিশ ফাঁড়িতে প্রবেশের ব্যাতিক্রমী এক কার্যক্রম শুরু করেন। এতে তিনি পুলিশ সদস্যসহ ফাঁড়িতে আগত সেবাগ্রহীতা, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিকট ব্যাপক প্রশংসীত হয়েছেন।
তিনি ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানায় পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনকালে আশুলিয়ার জনপ্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মনি কোঠায় জায়গা করে নিয়েছিলেন। তাই জাতিসংঘ শান্তি মিশনে গমনের প্রাক্কালে আশুলিয়া থানা থেকে বিদায় বেলায় বহু পুলিশ কর্মকর্তা ও আশুলিয়ার জনসাধারণ অশ্রুসিক্ত নয়নে গভীর ভালোবাসায় তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে অসীম সাহসীকতা ও দক্ষতাপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি কুড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম)’। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তি মিশনে গিয়ে গুণী এই পুলিশ কর্মকর্তা ভূষিত হয়েছেন জাতিসংঘ শান্তি পদকে, যা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে মাত্র ১১ বছরের চাকরি জীবনে বিরল।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর