শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
রুয়েট কর্মকর্তার প্রাণনাশের হুমকি রাজাকারের শ্যালকের পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সেভ দ্য রোডের ১৫ দিনব্যাপী সচেতনতা ক্যাম্পেইন সমাপ্ত অবৈধ গ্যাস সংযোগে ‘আকাশ” সিন্ডিকেট রাজশাহীতে জালিয়াতি করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতা দিবসে নতুনধারার দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত বাঘায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন পাইকোর (paicoo) ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হাজারো যুবক হাজার কোটি টাকা উধাও মিরপুর ঝিলপাড় বস্তিতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ ফের ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের দাবি দুর্নীতির কারণে নির্মমভাবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে : মোমিন মেহেদী
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

রুমা মোদকের জীবনের গল্প

প্রতিবেদকের নাম / ৫৪০
নিউজ আপঃ রবিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ২:৪৭ অপরাহ্ন

রুমা মোদক। একজন কবি, সাহিত্যিক, নাট্যাভিনেত্রী ও নাট্যকার। সেই সঙ্গে একজন কলামিস্টও। হবিগঞ্জের সাহিত্যাঙ্গনে এক আলোচিত নাম। তিনি ফেসবুকে নিয়মিত স্টেটাস দিয়ে থাকেন। সেই সঙ্গে লিখেন জীবনের গল্পও। যে গল্প অতীতকে নিয়ে। ছোট ছোট এ গল্প গুলো পাঠকদের হৃদয় না ছুয়ে পারে না। অতীত সব সময় সুন্দর ও সোনালী। ভবিষ্যত অনিশ্চিত। ভাল-মন্দে বর্তমান। তাই অতীতকে অস্বীকার করার জো নেই। কিন্তু সমাজের অধিকাংশ মানুষ অতীতকে স্বীকার করতে দ্বিধা-সংকোচে ভুগেন। হবিগঞ্জের আরেকজন আলোকিত মানুষ ব্যারিষ্টার সৈয়দ সাইদুল হক সুমন। সম্প্রতি তিনি অতীতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এক সাক্ষাতকারে বলেন, বাবার জানাযায় আসার জন্য টাকা ছিল না। আজ ব্যারিষ্টার সুমন দেশ ও সমাজের উন্নয়নে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। ইতিমধ্যে তিনি সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন। ফেসবুক লাইভ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তিনি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
রুমা মোদক কিংবা ব্যারিষ্টার সুমনের মতো মানুষ সমাজে খুবই বিরল। আজ তাদের অতীতের স্মৃতিচারণ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। অতীত ও বর্তমান নিয়েই জীবন। দ্বিধা-সংকোচে আক্রান্ত মানুষসহ বর্তমান প্রজন্ম রুমা মোদক কিংবা ব্যারিষ্টার সুমনের আদর্শ অনুসরণ করলে সমাজ উপকৃত হবে। সুপ্রভাত মিশিগান আলোর সাথে, ভালোর সাথে চলবে নিরন্তর। ব্যক্তি রুমা, সুমনের আদর্শ ও চিন্তা-চেতনার জয় হউক। সাহিত্যিক রুমা মোদকের লেখা এই ছোট গল্প গুলো বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। তার এই গল্প গুলো একত্রিত করে ধারাবাহিকভাবে সুপ্রভাত মিশিগান পাঠকদের জন্য প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়া হলো। ]

তখন একটা নোকিয়া মিউজিক এক্সপ্রেস সেট ছিলো, ফেসবুক চালাতাম, ছবি আপ্লোড দিতাম কিন্তু মোবাইলে বাংলা টাইপ করতে পারতাম না। সেদিনের গল্পটা সেদিন বলতে পারিনি। আজ বলি।
পরদিন তার গণিত এক্সাম। এমনিতেই পড়ায় আমার মন বসে না কাঁঠাল চাপার গন্ধে টাইপ ছেলে সে।পরীক্ষার হল ঘুরে এসে কিন্ডারগার্টেন এর প্রিন্সিপাল ফোন দিয়ে বলতো, দিদি আপনার ছেলে তো আপনার মতো কবি হবে। সবাই লিখছে আর সে খোলা জানালা দিয়ে আকাশ, গাছপালা দেখছে।
তো সেই ছেলেকে সারা সকাল দুপুর গণিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ালাম। সে মোটামুটি তৈরি, যাই হোক ফেল টেল করবে না।
দুপুর ২টার দিকে স্নান করিয়ে বললাম বসো খেতে দিচ্ছি। মাছের কাঁটা বেছে খাবার তৈরি করে দেয়ার ফাঁকে সে এসে বললো, মা তুমি খাবার তৈরি করতে করতে আমি একটু টিভি দেখি ? বললাম, না বাবা এখন টিভি দেখলে মাথায় যা গণিত ঢুকছে সব বের হয়ে যাবে। আমি আবার মাছের কাঁটা বাছি, ভাতে লবণ-লেবু মাখিয়ে তৈরি করি।
কতোক্ষণ পর দেখি সে মাথায় আমার একটা ওড়না ভালো করে পেঁচিয়ে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আমি প্রথমটায় বুঝিনি ঘটনা কী। এবার সে বলল, মা এটা পেঁচিয়ে এসেছি, গণিতগুলো মাথা থেকে আর বের হতে পারবে না, এখন দেখি?
আমি এখন ভাবছি, ঘটনাটা না ঘটলে এই গল্পটা কোনদিন আমি তৈরি করতে পারতাম!! আমার মাথায় কোনদিন আসতো এই গল্প ???

একে একে সবাই আসছিলেন, মনি কাকু ,স্বপন কাকু,তাহের চাচা, হারুন চাচা….আর আমি চলে যাচ্ছি স্মৃতির ভাটির টানে….অষ্পষ্ট মনে পড়ে আমার শৈশব মানেই এরা। আমার শৈশব মানেই বেড়ার ঘরে যুদ্ধ ফেরত দামাল যুবকদের তুমুল আড্ডা।
সোনাকাকু নিষ্প্রাণ শুয়ে আছেন, আচ্ছা তাঁরও কী চলে যাবার সময় মনে পড়ছিল অকালে মাকে হারানোর স্মৃতি? যাবার সময় বারবার মাকে ডাকছিলেন। তাঁর কী মনে পড়ছিলো মাতৃহারা, শয্যাশায়ী পিতার সংসারে না খেয়ে বেলা কাটানোর স্মৃতি ? মৃত্যুর সময় কোন স্মৃতি মানুষকে ডেকে নিয়ে যায় অমৃতের পাণে?
বাবার মৃত্যুর ঠিক দুবছর পর কাল রাতে চলে গেলেন সোনাকাকু ।বাবা যেদিন গেলেন একটা সোয়েটারের গল্প বলছিলেন আমাকে বারবার । ১৯৭৬ সালে, নতুন চাকরি হয়েছে সোনাকাকুর। চিটাগাং পোস্টিং। নভেম্বর মাস । আমার বাবা তাঁর সুটকেস গুছিয়ে দিচ্ছেন । এটা সেটা। একটা ভালো সোয়েটার নেই । বাবা পুরান মার্কেট থেকে কিনে এনে নিজেই বসে বসে মাপ মতো সেলাই করে ঢুকিয়ে দিলেন সুটকেসে। নিজের পায়ের চটিজোড়া। মাত্র দুবছর আগে কাঁদতে কাঁদতে বিলাপ করছিলেন সোনাকাকু। ৭১ এ ইন্টার ক্লাসের ছাত্র, অসুস্থ বাবা-ভাই-বোন-বৌদিকে আগরতলার শরনার্থী শিবিরে ফেলে যুদ্ধে চলে যাওয়া সোনাকাকু। আমাদের পরিবারে সব সময় নতুন কোন বিপ্লবের নাম সোনাকাকু। বড়ভাইকে দেবতা মানা সোনা কাকু। বড়ভাই চলে যাবার ঠিক দুবছরের মাথায় ঠিক এক সময়ে চলে যাওয়া সোনা কাকু। এসবই কী কাকতাল ? নাকি প্রকৃতির সত্যি কোন হিসাব থাকে ! কোন পাতায়, ডালে, আকাশের কোন একটা মেঘদলের কাছে লেখা থাকে সে হিসাব !!
আমার বাবা চারদিন ছিলেন সিলেটে আইসিইওতে । যেদিন সব ভাইয়েরা আমার সব কাকুরা তাঁকে দেখতে গেলেন দল বেঁধে, তাদের চোখ মেলে দেখলেন তারপর চলে গেলেন । আমার মা চিৎকার করে বিলাপ করে কাঁদছিলেন, আর বলছিলেন ভাইদের জন্য তাঁর প্রাণটা আটকে ছিলো !
অর্থাভাবে, নানা সংকটে হাবুডুবু খেতে থাকা একটা সংসার আট ভাই-বোন এক সাথে যুদ্ধ করে টিকিয়ে রাখা একটা সংসার। একজনের জন্য অন্যজনের আটকে থাকার অভ্যাস কী সহজে যায় ?
এইতো সেদিন তাদের সাথে যুক্ত হওয়া ছোট্ট আমি, মনে পড়ে একটা বড়ো রান্নাঘরে মাটিতে কাঠের পিঁড়ি পেতে ধোঁয়া উঠা মুগডাল আর আলুভাজা খেয়ে বড় হওয়া আমি। এইতো সেদিনও একান্নবর্তী হাঁড়িতে, মাস্টার্স করে বের হলাম যখন।
এখন তোমাদের কতো সুখের সময়। ছেলেমেয়েরা কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার হয়ে বের হচ্ছে । তোমাদের অক্লান্ত যুদ্ধের দিন শেষ । আর এখনই তোমাদেরকে বলতে হচ্ছে বিদায়।
বিদায় সোনা কাকু। এই বিদায় বলা বড়ো দুঃসহ। বাবা কাকাদের সাথে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো দুঃসহ আর কিচ্ছু নেই।

আজ যখন বাবা তাঁর নশ্বর দেহ নিয়ে চোখের সামনে নেই, তখন আমি ভাবি, হাঁটতে হাঁটতে, পড়তে পড়তে, পড়াতে পড়াতে, হোঁচট খেতে খেতে, ভাতের মাড় উপচে পড়ে যেতে যেতে চুলার আঁচ কমাতে কমাতে ভাবি বাবা যখন ছিলেন তখন কী বাবাকে নিয়ে ভাবতাম এমন ?
এই যেমন ঘড়ি ধরে উঠে যখন লাল চায়ের কাপটাতে টোস্ট বিস্কিট চুবাই, বাবার ছবিটা দেখি । বাবা যখন ছিলেন তখন কী ভেবেছি বাবা এখন কী করছেন!
কিংবা দুপুরে কলেজ থেকে ফিরতে ফিরতে….কিংবা একলা বিকেলে খুব একা হয়ে গেলে ? না ভাবিনি তো ! কখনো ভাবিনি। বাবা যেনো এই হাত-পা নাক মাথা নিয়ে পুরোই আমার অস্তিত্ব। সাথে নিয়েই হাঁটছি। আলাদা করে আর ভাববো কী?
বাবা নেই আজ সাড়ে সাতশো দিন। একটা দিন নেই বাবাকে মনে পড়েনি। ছিলেন যখন তখন টের পাইনি, আছেন। নেই যখন তখন খুব করে টের পাচ্ছি বাবা নেই।
এতো তাড়া কেনো ছিলো বাবা চলে যাবার? তুমি আছো খুব বেশি করে আছো আমি টের পাই প্রতিদিন। তোমার ত্যাগী জীবনের কঠোরতা নিয়ে আছো, তোমার সৎ জীবনের সংগ্রাম নিয়ে আছো, তোমার অসম্ভব ধৈর্যের আদর্শ নিয়ে আছো।
কিন্তু আমি যে তোমার মতো বৃহৎ ত্যাগী আর মহৎ অটল আদর্শবান হতে পারিনি বাবা। পার্থিব শূন্যতা আমাকে বড় পীড়িত করে।
প্রতিটি পার্বণেই মনে পড়ে-আহা বাবা যদি একটা ফোন দিতেন। আমি বাবার বাসায় গিয়ে নিজে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়তাম, বাবাকে বুঝতেই দিতাম না, তাঁর ডাকেই গিয়েছি আমি।
নশ্বর দেহে তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে বাবা ! তুমি গুড় এনে দিচ্ছো, ময়দা, তেল…মা পিঠা বানাচ্ছেন আর তুমি বাটি তুলে ধরে বলছো, এটা খেয়ে দেখ….

আসুন আমাদের সমবয়সীরা একটা হিসাব করি। আমাদের সময়ে কটা মেয়ে বোরকা হিজাব পরতো ?আর কয়টা মেয়ে আমাদের সহপাঠী ছিলো? ধরে নেয়া যায় সংখ্যাটা ২০০। এদের কেউই বোরকা হিজাব পরতো না।
এখন কয়টা মেয়ে বোরকা হিজাব পরে ? আর কতো মেয়ে স্কুলে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে ? প্রায় ২০ গুন বেশি। সবাই বোরকা হিজাব পরে। কিন্তু কেউ ঘরে বসে থাকে না। আনুপাতিক হারটা তুলনা করে অনায়াসে বলা যেতে পারে দুটোই উর্দ্ধমুখি। একটি বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি অন্যটির।
তবে শফি হুজুরের বক্তব্য নিয়ে এতো হৈচৈ করার কী আছে? তাঁর কথায় সব বালিকা বিদ্যালয় ত্যাগ করবে ? অসম্ভব। চ্যালেঞ্জ!
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যখন বিধবা বিবাহ চালু আর সতীদাহ প্রথা রদ সহ স্ত্রী শিক্ষার জন্য লড়ছেন তখন আরেক ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত উপহাস করে কবিতা লিখছেন, এবি শিখে বিবি সেজে ইংরেজি বোল কবেই কবে !
আজ দুশোবছর পর দাঁড়িয়ে আমার এক ঈশ্বরকেই মানছি। অন্যজনকে নির্দ্ধিধায় ছুঁড়ে ফেলেছি।
সময়ের এই নিয়ম, সময়ের চাকা কেউ জোর করে কয়েক সেকেণ্ড থামিয়ে দিতে পারে বড় জোর,পেছন ফেরাতে পারে না।

মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নেয় একা,পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় একা। আমার এই লেখক জীবনও আগমন-প্রস্থানের মতো একা। কোথাও কোন বন্ধু নেই, সুহৃদ নেই, সিণ্ডিকেট নেই এমনকি আমার সেই পজিশনও নেই কেউ কোনো খাতিরে আমার বইয়ের প্রচ্ছদ পোস্ট দেবে। নিশ্চই সেই মানেরও লিখি না কোন সুপাঠক ভালোমন্দ লেখার দায় বোধ করবে ! না এটা আমার বেদনা নয়। নিজেকে দেয়া সান্ত্বনা। জীবনের যেদিন বুঝতে পেরেছি নিজের পা এবং হাত দুটোই সম্বল, তখনই কেউ না কেউ, হয়তো খুব কাছের কেউ ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছে। ধুলা ঝেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছি। দাঁড়িয়েছি তো এই মানুষেরই মাঝে। যা নিয়েছি এই মানুষ থেকেই। নিশ্চই এই প্রাপ্তি ছাড়িয়ে গেছে অবহেলাকে। নইলে দাঁড়িয়ে আছি কী করে!

শৈশবের শেষ সীমান্তে কৈশোর তখন ঠিক এসেছে কী আসেনি, আমার একটা পুতুলের বাক্স ছিলো। কাগজের তৈরি জুতার বাক্সে একটা পরিবার, আমার প্রথম সংসার। মা পুতুল, বাবা পুতুল, বাচ্চা পুতুল। স্টার সিগারেটের বাক্স দুটো পাশাপাশি করে,তার উপর টুকরো কাপড় বিছিয়ে খাট, ম্যাচের বাক্সে টেবিল..। প্রাণহীন পুতুলদের জন্য আহা কী মায়া, কী মায়া ! কতোবার এদের এদিক সেদিক করি বিছানা-পত্তর, ওদের বসাই-শোয়াই। শাড়ি পাল্টাই। যেখানে যা পাই পুঁতি, শিশির ছিপি, রাংতা কাগজ মূল্যবান সম্পদের মতো পুতুলের ঘরে তুলে এনে রাখি। আমার পুতুলেরা সুখি হয়, ধনী হয়, সম্ভ্রান্ত হয়। একদিন এক দর্জির দোকান থেকে কুড়িয়ে পেলাম সোনালী জরির কারুকার্যময় একটুকরো কাপড়, পুতুলের একটি শাড়ি। এযাবতকালে কুড়িয়ে পাওয়া সবচে মূল্যবান ধন। ডেকে ডেকে দেখাই সব সমবয়সী বন্ধুদের। আমার পুতুলদের উদ্বৃত্ত সম্পদে তাদের চোখ টাটায়। শাড়িটা বাক্সে রেখে পুতুলদের আনন্দে আমার সেদিন আর ঘুম আসে না।
এজন্যই কিনা পরদিন বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙে আমার। ডিসেম্বর মাস, বার্ষিক পরীক্ষা শেষে স্কুল নেই, তাই কেউ ডাকেনি আমাকে। ঘুম থেকে ওঠেই দৌড়ে গেলাম পুতুলের বাক্সের কাছে। শাড়িটি বাক্সে নেই। আমি পাগলের মতো এদিক সেদিক খুঁজি। বেশি যত্ন করে কী বালিশের নিচে রেখে শুয়েছিলাম ? না, নেইতো কোথাও নেই……।
একে জিজ্ঞেস করি, ওকে জিজ্ঞেস করি কেউ দেখেনি, কেউ জানেনা। সারাদিন কেঁদে কেটে খাইনি সেদিন। বাবা আবার নিয়ে গেলেন সে দর্জির দোকানে। দুর্মূল্য জরি কাপড়ের ব্লাউজখানা ঝুলছে, হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায় কিন্তু আমার ঘরে আসার মতো একটুকরো কাপড়ও পড়ে নেই কোথাও। আমি রিক্ত হয়ে গেলাম, শূন্য হয়ে গেলাম !
তারপর কোথায় হারিয়ে গেলো পুরো পুতুলের বাক্সটাই,আর তো একটুকরো কাপড়!
আমার বাবার মৃত্যুর পর জীবনটাকে এমনই একটা পুতুলের বাক্স মনে হয়। যতোদিন বেঁচে থাকা এই পুতুলের মূল্যহীন জীবন আর সম্পদের জন্য দুশ্চিন্তাময় নির্ঘুম রাত, হাহাকার। তারপর চলে গেলে মহাকালে বুদবুদের মতো মিলিয়ে যাওয়া। দু একটা জেনারেশান হয়তো কালেভদ্রে মনে রাখে তারপর নামটাও জানে না কেউ।
আর ভালোবাসার মানুষগুলোর জন্য মায়া, সেই রং-জরির শাড়িটার মতো। আমি এতোটা ভালো না বাসলে এতো দ্রুত হারাতো না মোটেই। হারানোর কষ্ট টা এতোটা আহত করতো না যাপন। আহা অগ্রাহ্য করতে পারা যেতো যদি এই তীব্র ভালোবাসা , বেঁচে থাকা মানুষগুলো বেঁচে যেতো। সবচে বেশি মায়া যার জন্য সে দ্রুত হারিয়ে যায়….।
মানুষ ভুলে থাকুক এই নিজের ভেতরে অজান্তে জন্ম নেয়া এই অচেনা মায়াটুকু, অগ্রাহ্য করতে শিখুক। হাঁসের মতো। সারাদিন জলে কাটিয়ে ডাঙায় ওঠেই যে ঝেড়ে ফেলে ডানার জল।
জানি মানুষ পারবে না। এই জীবন তার মায়ারই অন্য নাম।

সেই শৈশব থেকেই নিজের ইচ্ছেগুলোকে গলায় আটকে ফেলা অভ্যাস হয়ে গেছে। কেমন করে যেনো তখনই বুঝে গিয়েছিলাম, আশার মলিন কাঁথায় মাথা ঢাকতে পা উদোম হয়ে পড়া কিংবা পা ঢাকতে মাথা, এমন নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরে নানাকিছুর বায়না করা মানে বাবাকে অসহায়ত্বের নোনাজলে ধাক্কা মারা।
সেই ছোট্টবেলায় পাশের ধনীদের বাড়ির মেয়েদের কেমন ডিজাইন করা জামা ছিলো। মা আমার জন্য গজ কাপড় কিনে আনতেন তাতে কোনো ডিজাইনই হয়না। ডিজাইন করা জামা পরার ইচ্ছে গলাতেই আটকে রেখেছি। প্রকাশ করিনি। আমার কন্যা যদি এখন বলে, মা জামার ডিজাইনটা খুব সুন্দর না ? আমি ওকে সেটা কিনে দিতে সপ্তাহ দেরি করি না।
কৈশোরে একটা স্টিলের স্যুটকেসের খুব শখ ছিলো, পাশের বাড়ির ধনীরা হাতে ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে স্কুলে যেতো। আমাকে মা বানিয়ে দিলেন পাটের চট দিয়ে একটা ব্যাগ। সেই ব্যাগের পকেটে ওল সুতায় মা বুণে দিলেন একটা পরি,পাখা লাগানো, উড়ছে…। স্কুলে টিফিন পিরিয়ডে ধনীর মেয়েরা আইসক্রিম খায়, চানাচুর খায় আর আমি সেই পরির সাথে উড়ি এ রাজ্য থেকে সে রাজ্য। এসব চানাচুর, আইসক্রিম কোন ছাড়…..আমার তো রয়েছে পুরো একটা রাজ্য,হীরা মণি মাণিক্য…..। পুত্র কন্যার এখন স্কুলে নেবার নানান রকম কয়েকটা ব্যাগ, কোনটা রেখে কোনটা নেবে ঠিক করতে পারে না।
একবার স্কুলে কড়া নিয়ম হলো কেউ কেডস ছাড়া স্কুলে ঢুকতে পারবে না। বাবাকে বলছি প্রতিদিন, বাবা আজ নয় কাল করে দেরি করিয়ে দিচ্ছেন। আমরা যারা কেডস পরে যাই না, প্রতিদিন এসেম্বলি শেষে কড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকি দশ মিনিট, শাস্তি। কী লজ্জা ! সারা স্কুলের মেয়েরা দেখে আমাদের কজনের কেডস কেনার সামর্থ্য নেই। একদিন বাসায় ফিরে কান্না জুড়ে দিলাম। বাবা অফিস থেকে ফিরে চায়ে টোস্ট ডুবিয়ে খেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। ঘন্টাখানেক পর ফিরে এসে আমাকে বললেন তৈরি হও, চলো কেডস কিনতে যাই।
আমার নজর কাপড়ের কেডসের দিকে। বাবা আমাকে কিনে দিলেন সস্তা একজোড়া প্লাস্টিকের কেডস। কাপড়ের কেডস কেনার ইচ্ছেটা গলায় আটকে আছে এখনো। আমার কোনোদিন আর কাপড়ের কেডস পরাই হয়নি।
পরের মাসে সুনীল কাকুকে বাবা যখন ধার করা কুড়ি টাকা ফেরত দেন, কাকতালীয় ভাবে আমি তখন বাবার সাথে ছিলাম। কী করে যেনো বুঝতে পেরেছিলাম এ আমার সেই কেডস কেনার টাকা। বাচ্চাদের বাড়ন্ত শরীর। বছরের এ মাথা ও মাথা কয়েকজোড়া জুতা কিনি ওদের জন্য।
আমাদের মাটির ঘরের বারান্দার বাঁশের পাল্লা ঘিরে টিনের চাল বেয়ে একটা মাধুরীলতার ঝোঁপ ছিলো। অদ্ভুত ঘোরলাগা একটা গন্ধ। থোকা থোকা ফুল। আমার একমাত্র সাথী ফুলগুলো,কতো গল্পগাথা এদের সাথে। মাধুরীলতার গাছে বড্ড বিছা হয়। সেই বিছা বেয়ে বেয়ে পৌঁছে যায় ঘর-বিছানা, কাপড়-চোপড়ে।
সবাই একমত হলে একদিন গাছটা কেটে ফেললো ছোটকাকা। আমার নিষেধের কান্নাটাও গলায় আটকে ফেলেছিলাম সেদিন। মনে মনে ভেবেছিলাম বড় হলে আমার যে বাড়ি হবে, তার বারান্দায় একটা মাধুরীলতার গাছ লাগাবো।
আমার কোনো বাড়ি নেই। হয়নি এখনো। ইচ্ছেটাকে গলায় আটকে রাখি। রেখেছি। কখনোই গলা টিপে হত্যা করি না।
ইচ্ছেকে কখনোই গলা টিপে হত্যা করতে হয় না।

মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নেয় একা,পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় একা। আমার এই লেখক জীবনও আগমন-প্রস্থানের মতো একা। কোথাও কোন বন্ধু নেই, সুহৃদ নেই, সিণ্ডিকেট নেই এমনকি আমার সেই পজিশনও নেই- কেউ কোনো খাতিরে আমার বইয়ের প্রচ্ছদ পোস্ট দেবে। নিশ্চই সেই মানেরও লিখি না কোন সুপাঠক ভালোমন্দ লেখার দায় বোধ করবে ! না এটা আমার বেদনা নয়। নিজেকে দেয়া সান্ত্বনা। জীবনের যেদিন বুঝতে পেরেছি নিজের পা এবং হাত দুটোই সম্বল, তখনই কেউ না কেউ, হয়তো খুব কাছের কেউ ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছে। ধুলা ঝেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছি। দাঁড়িয়েছি তো এই মানুষেরই মাঝে। যা নিয়েছি এই মানুষ থেকেই। নিশ্চই এই প্রাপ্তি ছাড়িয়ে গেছে অবহেলাকে। নইলে দাঁড়িয়ে আছি কী করে!

মায়ের দেয়া পাটিসাপটা চিনি ছাড়া চায়ে ডুবিয়ে আয়েশ করে খেতে খেতে গল্প হচ্ছিল এমদাদের সাথে, ম্যাসেঞ্জারে। প্যারিস-পুর্তুগাল……।
অর্ধসমাপ্ত রেখে ঘর থেকে বের হতেই উত্তুরে হুহু ঠাণ্ডা হাওয়া জাপটে ধরলো। শৈত্য প্রবাহ বইছে নাকি?
ঘড়িতে তখন ৮টা। অবসন্ন পা চলছে না। সারারাত ঘুমাই নি। ছেলেটার ১০৪ জ্বর। ওকে বিছানায় রেখে কলেজ যাচ্ছি। গৃহকর্মী মেয়েটাকে বলে যাচ্ছি, আধঘণ্টা খানেক পরে কিছু খেতে দিস,তারপর ওষুধ। নাপার প্যাকেট টা ওভেনের উপরে রেখে আসলাম।
ছেলের বাপও সারারাত ঘুমায় নি। দরজা বন্ধ করে নতুন নাটকের স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করেছে। ছেলের ১০৪ জ্বরের কথা জানে না। ভালোবাসার থিয়েটার জীবন ! কলেজে ক্লাস থেকে বের হয়ে ছেলের খবর নেয়ার জন্য ছেলের বাবার ফোনে কল দিলাম বারকয়েক। ধরলো না। বুঝলাম ঘুমাচ্ছে এখনো।
আর ক্লাস নেই বলে প্রিন্সিপাল কে বলে কয়ে বাসায় ফিরে এলাম। ফেরার পথে ছেলের স্কুলে এপ্লিকেশন জমা দিলাম, ছুটি মঞ্জুরের।
ফিরে ছেলের বাবাকে ঘরে পাই নি। নতুন নাটকের ফাণ্ড যোগাড় করতে বের হয়ে গেছে।ছেলেকে নিয়ে চললাম ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার চেম্বারে নেই। অগত্যা তাঁর বাসায় হামলা।
এক্সরে সহ টেস্ট দিলেন ডাক্তার। পেট ভরতি করে পিঠে খাওয়ালেন খালা-ডাক্তারের মা। এ এক আজব ডাক্তার। ঘরভর্তি বই। আর মাঝখানে আড্ডা। আমরা রোগীরা তাঁর ভালোবাসায় রোগ ভুলে যাই প্রায়শই। ছেলের বাবা এবার ফোন দিয়ে এসে যুক্ত হলো আমাদের সাথে। একটু রাগও করলো কেনো রাতে ডাকলাম না ! তাঁকে বলতে গিয়েও বললাম না যে, এটা থিয়েটারের জন্য আমার ত্যাগ। ডিস্টার্ব দিলাম না তোমাকে। ডায়াগনস্টিকে এসে টেস্ট করিয়ে বাসায় ফিরলাম।
বিকেলে আবার ক্লাস। নাকেমুখে দুটো গুঁজে আবার দৌড়। ইজিবাইকে সামনে দুটি অল্পবয়সী ছেলে।ধোপদোরস্ত। মোবাইলে অকথ্য গালি-গালাজ করছে অপরপ্রান্তে বন্ধু বান্ধব কাউকে। আমি এদের মায়ের বয়সী। মা নই হয়তো। হোক অপরিচিত বয়সে বড় কারো সামনে এভাবে গালি গালাজ করা যায় ? ভব্যতার সংজ্ঞা বদলে গেছে।
ড্রাইভারের পাশের সিটে একটা লোক। কতোক্ষণ পরপর হাতে ধরে একটা দশটাকার নোট পথচারীদের মুখের সামনে মেলে ধরছে, চলতি গাড়ি থেকেই। ফুরুৎ করে গাড়িটা পার হয়ে যাচ্ছে, লোকজন কিছু বুঝে উঠার আগেই, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাচ্ছে তারা। লোকটা কি পাগল ?
একজন পথচারী ক্ষেপে গেলো। এবার দেখি চলতি গাড়ি থেকেই হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছে। কে বেশি পাগল, সামনে বসা ছেলে দুটো নাকি ড্রাইভারের পাশে বসা লোকটা?
নিজে চলি নুন আনতে পান্তা ফুরায়ের জীবনে। এম এল এস এস সিরাজ মিয়া কয়েকমাস আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে সিলেট যাবার সময় বেশ বড় এমাউন্টের টাকা ধার দিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য। এর জন্য কয়মাস বেশ টানাটানিতে চলছে আমার নিজস্ব দিন।
ভালো হয়ে ফিরে আসা সিরাজ মিয়া পি আর এলের লাম গ্র‍্যান্টের টাকা পেয়ে বারবার ফোন দিচ্ছে আজ, ম্যাডাম একটু আসবেন বাসায় ?সুস্থ হলে আমিই আসতাম।
ক্লাস শেষ করে ছেলের রিপোর্ট ডাক্তারকে দেখিয়ে তাঁর বাসায় গেলাম। তাঁর স্ত্রী টাকাটা ফেরত দিয়ে হাতে ধরে কেঁদে ফেললো। ম্যাডাম আপনার জন্য সে বেঁচে ফিরে এসেছে। কেউ কী বেঁচে ফিরে কারো জন্য ?
তাঁর বাড়ি থেকে বের হতে হতে জানালা ফুঁড়ে ভেসে আসা তাদের স্বামী-স্ত্রীর আলাপ শুনতে পেলাম, কিসের হিন্দু কিসের মুসলমান ! মানুষ হইল আসল। দাড়ি-টুপি অলা পরহেজগার মানুষ সিরাজ মিয়া। সে জানে, মানুষ হইল আসল !
১০
আমিই ‘প্রথম’ আমিই ‘একমাত্র’ ইত্যাদি আমিত্বের বড়াইকারী শব্দগুলোর ব্যবহার দেখলেই আমি একটা মানুষকে মেপে নিতে পারি। তা সে যতোই মেধাবী, দক্ষ, সৃজনশীল হোক না কেনো। আমার কাছে এই প্রচারমুখী ঔদ্ধত্যই তাঁকে অশ্রদ্ধার জন্য যথেষ্ট।
আমি শুধু মঞ্চের জন্যই নাটক লিখি, মিডিয়ার জন্য লিখিনা। লিখি নি। কিংবা বলা ভালো লিখতে জানিই না।মঞ্চের ভাষাটাও কী ঠিকঠাক জানি ? আচ্ছা কোন সৃজনশীল শিল্পমাধ্যমকে কী ঠিকঠাক ভাষা আর ব্যাকরণে বাঁধা যায় না বাঁধা উচিত? সৃজনশীল শিল্প এবং সাহিত্য তার সমকালে রচিত হয়ে সমকালীনতা অতিক্রম করে। শিল্পের আগে ব্যাকরণ নয়, ব্যাকরণের আগে শিল্প।
আমি মঞ্চের জন্য লিখি। আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে বলি আমি আমার থিয়েটার দলের জন্য লিখি। আমি ‘নাট্যকার’ পরিচয়ের জন্য লিখি না।
সবার আগে আমি একজন মঞ্চকর্মী। আমি খুব ওতপ্রোত ভাবে দেখি লাভের হিসাব খোঁজা নষ্ট সময়ে আমাদের আ্যমেচার নাট্যকর্মীরা কী কঠোর ত্যাগে ও সাধনায় মঞ্চকে আঁকড়ে ধরে আছেন। কেনো আছেন- এ নিয়ে বিস্তর তর্ক হতে পারে। সভা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম হতে পারে। কিন্তু তাই বলে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো পাগলদের খুব একটা কিছু যায় আসে বলে মনে হয়না। তাঁরা আপন আনন্দে পাগলামি করে যায়।
আমি মূলত আমার দলের এই পাগলদের জন্য নাটক লিখি। যখন আমার দল থিয়েটার করবে না কিংবা আমি থিয়েটার চর্চায় যুক্ত থাকবো না তখন আমিও আর নাটক লিখবো না। যারা আমার এই নাটক লেখাকে অভিনন্দিত করেন, পুরস্কৃত করেন তাঁদের কাছে আমার অনন্ত কৃতজ্ঞতা। কিন্তু বিশ্বাস করুন দিনশেষে আমি একজন মঞ্চকর্মী। শুধু মঞ্চকে ভালোবেসে নাটক লিখি।
আপনারা যারা মঞ্চের জন্য মঞ্চকর্মীদের ত্যাগ আর ভালোবাসা মাপার ক্ষমতা রাখেন না, তারা এসে যদি আমার পিঠ চাপড়ে বলেন, বাহ বেশ হয়েছে,তবুও আমি লিখবো। যদি বলেন, দূর কিচ্ছু হয়নি তবুও লিখবো। কারণ আমি লিখি আমার দলের জন্য। কারণ আমি নাটক লিখি থিয়েটারকে ভালোবেসে। দিনশেষে আমি একজন থিয়েটার কর্মী। আমি শুধুই থিয়েটারটাকে ভালোবেসে জীবন্ত রাখার জন্য লিখি। আপনি আমাকে ‘নাট্যকার’ বলুন কিংবা না বলুন আমি থোরাই কেয়ার করি।-সুপ্রভাত মিশিগান থেকে নেয়া।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর