১৬ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের মৌলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ এর মহাসচিব বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ এর সভাপতি-বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ কর্ণেল নিরঞ্জন ভট্টাচার্য্য(অবঃ), প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ অহিভূষন চক্রবর্তী, নির্বাহী সভাপতি অসিত কুমার মুকুটমনি, সিনিয়র সহ সভাপতি সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী, সিনিয়র সহ-সভাপতি নেপাল চক্রবর্তী, সহ-সভাপতি তপন কুমার পান্ডে, সহ সভাপতি- অরুন বাগচী, সহ-সভাপতি অলক চক্রবর্তী, সিনিঃ যুগ্ম মহাসচিব-জয়শংকর চক্রবর্তী, যুগ্ম মহাসচিব কেতকী রঞ্জন ভট্টাচার্য্য প্রমূখ।
বক্তাগণ বলেন সমাজে মানুষদের শিক্ষা, দীক্ষা, সামাজিক ও ধর্মীয় উন্নয়নে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় এদেশের জনগণ ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষ যখন উলঙ্গ থাকত, তখন এদেশের ব্রাহ্মণরা গৃহে গৃহে সংস্কৃত কলেজ, মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সমগ্র বিশ্বকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে ব্রতী ছিল। এক সময় প্রতিটি ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল এক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সংস্কৃত শিক্ষা ব্যবস্থা বিলুপ্তির ফলে আজ আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমাদের শাশ্বত ধর্মগ্রন্থ শুদ্ধরুপে চর্চা করতে পারছে না। সেই লক্ষ্যে ব্রাহ্মণ সমাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা,তথা সমগ্র সনাতন সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা গত ১লা ফেব্রুয়ারী ২০১৯ইং, শুক্রবার, বাংলাদেশ রেলওয়ে সর্ব জনীন পূজা মন্দির ,শাহজাহানপুর থানা রোড,ঢাকায় সারাদেশ থেকে আগত প্রায় দেড়হাজার (৬২টি জেলার) ব্রাহ্মণ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ’জাতীয় ব্রাহ্মণ প্রতিনিধি সম্মেলন-২০১৯’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ’বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ’ এর কমিটি গঠন হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ব্রাহ্মণগনের সর্বসম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ কর্ণেল নিরঞ্জন ভট্টাচার্য্য(অবঃ)কে সভাপতি এবং বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্যকে মহাসচিব করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। বক্তাগণ বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদের পক্ষ থেকে সদাশয় সরকারের কাছে নিম্মোক্ত দাবী পেশ করেন।
১. একটি বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দেবভাষা সংস্কৃত শিক্ষা সহ ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
২. বর্তমানে সংস্কৃত টোল, চতুস্পাটি, কলেজে নিয়োজিত শিক্ষকদের মাসিক বেতন ১৪৯.৫০টাকা। শিক্ষকগণের মাসিক বেতন জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের সম-মর্যাদায় মাসিক বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থগুলি সংস্কৃত ভাষায় লেখা, তাই আমরা ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত সংস্কৃত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৪. ১৯৯২ইং সাল হতে বিদ্যালয়ে ধর্মীয় পন্ডিত নিয়োগ বন্ধ রয়েছে, ফলে সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাত্র-ছাত্রীদের ধর্ম শিক্ষা অধ্যয়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। অবিলম্বে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পন্ডিত নিয়োগ করতে হবে।
৫. সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেব-দেবীর পূজা ব্রাহ্মণগণই করে থাকেন। ব্রাহ্মণরাই মঙ্গঁল আচার অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন। সেকারনে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ভূক্তদের পুরোহিত প্রশিক্ষন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. সরকারী কোষাগার হতে মন্দিরের পুরোহিতগনকে মাসিক প্রণামী (ভাতা) প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. বিবাহের পবিত্রতা ও অপব্যবহার রোধ কল্পে বিবাহ সম্পন্নকারী পুরোহিতদেরকে বিবাহ নিবন্ধনকারী হিসাবে নিয়োগ দিতে হবে।