সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:সাতক্ষীরার শ্যামনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সপ্তাহব্যাপী ভগবত-গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ৭ জন, আটক-৪ জন।
বুধবার রাত ৮টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বাধঘাটা গ্রামের হরিমন্দির ও কালীমন্দির সংলগ্ন মাঠে এ হামলা চালানো হয়।
আহতদের মধ্যে মারাত্মক জখম তিনজনকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতদিন ব্যাপী ভগবত ও গীতা পাঠ অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি রণজিৎ বরকন্দাজ জানান, বাধঘাটা গ্রামের রঞ্জন মন্ডলের বাড়ির পাশে হরিমন্দির ও কালীমন্দির সংলগ্ন পাঠে গত ৮ মার্চ থেকে সাতদিন ব্যাপী ভগবত ও গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা সেখানে হাজির হন। তারা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ভগবত ও গীতা পাঠ শ্রবণ করেন।
তিনি জানান, অনুষ্ঠান শুরুর পর থেকে মৌলবাদী একটি মহল নামাজের সমস্যা, পড়াশুনা ও ঘুমের সমস্যা সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা উপস্থিত লোকজনদের সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দেয়।
রণজিৎ বরকন্দাজের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যা থেকে গীতা পাঠ করছিলেন ভারতের শ্রীধাম বৃন্দাবনের হরিচাঁদ দাস ব্রহ্মচারী। রাত সাতটার দিকে বাধঘাটা গ্রামের আকরাম হোসেন বাবু, মিলন হোসেন, গোলাম মোস্তফা, আবুল হোসেন , মফিজুর রহমানসহ কয়েকজন গীতাপাঠ বন্ধ করার কথা বলে।রাজী না হওয়ায় তারা চলে যায়।
একপর্যায়ে ওই পাঁচজনের নেতৃত্বে ১৪/১৫ জন হাতে লাঠি, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে এলে আয়োজক কমিটির সদস্যরা বাধা দেয়। এ সময় হামলাকারীরা গোকুল মন্ডল, সমীর মন্ডল, বনমালী মন্ডল, সুধাংশু মন্ডল ও সুরেশ মন্ডলসহ সাতজনকে পিটিয়ে জখম করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় গোকুল, সমীর ও বনমালীকে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে পুলিশ হামলাকারী চারজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন বাধঘাটা গ্রামের আকরাম হোসেন বাবু, মিলন হোসেন, গোলাম মোস্তফা ও আবুল হোসেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মান্নান আলী ভগবত অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির সভাপতি রণজিৎ বরকন্দাজ বাদী হয়ে মামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।