কলাপাড়ায় মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষের আয় কমে গেছে। এ কারনে এলাকার অনেক পরিবার কোরবানীর পশু কেনা থেকে বিরত রয়েছে। সেই সাথে কলাপাড়ার কামারশালায় চিরচেনা দৃশ্যও চোখে পড়ছে না। কামারশালাগুলোতে পোড়া কয়লার গন্ধ, হাঁপরের ফাঁসফাঁস আর হাঁতুড়ি পেটানোর টুং-টাং শব্দে পশু জবাইয়ের কাজে ব্যবহৃত এ ধরনের হরেক রকমের জিনিস তৈরি করার ব্যস্ততাও নেই। চায়নায় তৈরী সব হাতিয়ারে এখন বাজার সয়লাব। ফলে অলস সময় পার করছে চিরচেনা কামাররা।
স্থানীয় পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকার ফনী কর্মকার এ প্রতিবেদককে জানায়, কোরবানীর ঈদ এলেই প্রচুর দেশী ছুরি, চাপাতির প্রয়োজন পড়ে। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে সাধারনত এ সব হাতিয়ার তৈরী করা হয়। লোহার মান ভেদে প্রতি কেজি স্প্রিং লোহা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, সাধারনত দা ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ৭০ থেকে ২০০ টাকা, মাংস তৈরীর দা ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, বটি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দা, বটি শান দেওয়া ৫০ থেকে ৭০ টাকা। তবে এ বছর করোনার কারনে অনেকে কোরবানী দিচ্ছে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের হাতেও নেই তেমন কোন কাজ।
আরেক কামার রতন কর্মকার এ প্রতিনিধিকে জানায়, গত কয়েক বছর যাবৎ বাজারে পাকা লোহার ছুরির চেয়ে চাইনিজ ছুরি চাপাতি চকচকে সহজে ব্যবহারযোগ্য দামেও সস্তা। তাই এ সব জিনিসের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে সাধারন ক্রেতারা। বর্তমানে কামার শিল্পকে গিলে খাচ্ছে চায়না বাজার। ভবিষ্যতে প্রাচীন এ ক্ষুদ্রশিল্প কামারশালাকে টিকিয়ে রাখা মুসকিল হয়ে দাড়াবে। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়বে দেশীয় ঐতিহ্য কামার শিল্পের উপর। আর্থিক সংকট ও নানা প্রতিবন্ধকতার কারনে ধিরে ধিরে বিলুপ্তির পথে যাবে কামার শিল্প।