দীর্ঘ চার কিলোমিটার সরকারি খাল। খালের মধ্যে বাঁধ দিয়েছে ১১জন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি। তৈরি করা হয়েছে ১৬টি মাছের ঘের। বাড়ি কিংবা রেকর্ডীয় জমির মুখশা দাবি করে দখল করে নিয়েছে যে যার মতো করে। নেয়া হয়নি কোন অনুমোদন কিংবা লিজ। এখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র নেতারা একাট্টা হয়ে দখল বানিজ্যে নেমেছে। যেন দেখার কেউ নেই। প্রায় দু’হাজার একর কৃষি জমির পানি নিস্কাশনের জন্য বিকল্প হিসেবে সরকারি রাস্তার ওপর ছিলো একটি মাত্র কালভাট। কালভাটটিভেঙ্গে যাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান তিন ফুট ব্যাসের একটি পাইপ বসিয়েছিলো। তাও আলমগীর হাওলাদার ও মোক্তার হোসেন নামের প্রভাবশালী মাটি কেটে আটকিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে দু’হাজার একর জমির বর্ষার পানি নামতে পারছে না। সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পাঁচজুনিয়া গ্রামের এ দৃশ্য।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নোমর হাট লাগোয়া পাঁচজুনিয়া কোলার প্রায় দু’হাজার একর কৃষি জমি পানির নিছে তলিয়ে রয়েছে। কোথাও কোমর সমান আবার কোথাও হাটু সমান। কৃষকরা বলেছেন,আমন ধানের মওসুমের অর্ধেকটা সময় পার হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। কিন্তু এখও তারা বীজ তলাই করতে পারেনি। এলাকার শহীদ হাওলাদার, খলীল মুন্সী, স্বপন হাওলাদার, জাহিদ মৃধা, জহিরুল মুন্সী, হাসান হাওলাদার একটি করে এবং আলমগীর হাওলাদার, ওহাব মৃধা, আফজাল হাওলাদার, আনছার উদ্দিন মোল্লা ও রিয়াজ মোল্লা দু’টি করে ঘের তৈরি করেছে।
ওই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম মৃধা(৫১) পাঁচজুনিয়া কোলার প্রায় দু’হাজার একর জমি তিন ফসলী। তিনি ওই কোলায় প্রায় দেড় একর জমির মালিক। জলাবদ্ধতার কারনে সে গত বর্ষা মওসুমে মাত্র নয় মন ধান পেয়েছে। কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, তার সাড়ে ৫ একর জমিতে মাত্র ৩৫ মন ধান পেয়েছে। কৃষক শাহাবুদ্দিন হাওলাদার(৪০) বলেন, তার চার একর জমির ধান গত বর্ষার সময় জলাবদ্ধতার কারনে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার দাবি গত বছরের মতো এ বছর যেন জলাবদ্ধতা না থাকে।
এ ব্যাপারে রিয়াজ মোল্লা বলেন, ২৫ বছর আগে থেকেই এই ঘের করা হয়েছে। পাঁচজুনিয়া কোলায় কোন দিন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। গতবর্ষা মওসুমে পাঁচজুনিয়া সরকারি রাস্তার ওপর পানি নিস্কাশনের জন্য চেয়ারম্যান যে পাইপ বসিয়েছিলো সেখানে আলমগীর হাওলাদার ও মোক্তার হোসেন নামের প্রভাবশালী মাটি কেটে আটকিয়ে দিয়েছে। এ কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পাইপের মুখ খুলে দিলে এ জলাবদ্ধতা আর থাকবে বলে রিয়াজ মোল্লা দাবি করেন।
এ ব্যাপারে ইপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমিইউপি চেয়ারম্যানকে বলে দিচ্ছি দ্রæততম সময়ের মধ্যে যাতে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়।