বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
এস এল এ মানবাধিকার সংস্থার মানবাধিকার দিবস পালিত রাজশাহীতে জমি সংক্রান্তের জেরে মিথ‍্যা সংবাদ প্রকাশে প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন বাঘায় দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের দাবিতে চিকিৎসকদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন বাঘায় সমাজসেবার সানোয়ারের জাদুর কাঠিতে সুস্থ-সবল শত মানুষ এখন প্রতিবন্ধি সাভারের গান্ধারিয়ায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন বাঘায় নবাগত ইউএনও’র সাথে প্রধান শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ শিমুলতলা জোনাল অফিসে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগ বাঘায় সাংবাদিক পরিবারের উপর হামলা,থানায় মামলা ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামী কাউন্সিলর সাহেব আলীর শাস্তি চায় এলাকাবাসি মানবিক বাংলাদেশ চায় জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

পাংশা সরকারি কলেজের অর্থের ছয়লাপ,অভিযোগ আপন দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টারঃ / ৪৪০৭
নিউজ আপঃ শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১, ৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট। কোথাও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সেক্রেটারিসহ অন্য সদস্যরা লুটপাট করছেন। আবার কোথাও লুটপাটে খোদ অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উভয় ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর একশ্রেণির শিক্ষক জড়িত।
মূলত শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীত বেসরকারি স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি (এসএমসি) ও গভর্নিং বডি (জিবি) পরিচালনা বিধিমালায় সভাপতিসহ পর্ষদকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকাণ্ডের দায়ভার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে। শাস্তি বলতে সর্বোচ্চ কমিটি ভেঙে দেয়ার ঘটনা। এ কারণে দুর্নীতিবাজরা সেবার পরিবর্তে বৈধ-অবৈধ নানা উপায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দু’হাতে অর্থ লুটে নিচ্ছেন।
এ ক্ষেত্রে চাকরি বাঁচানোর স্বার্থে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নির্দেশ মানে। আবার কোনো ক্ষেত্রে নিজেরাও লুটপাটে যুক্ত হন। আর যে ক’জন প্রতিবাদ করেন তাদের নানা অপমান-অপদস্ত হতে হয়। আমাদের কয়েকজন সংবাদ কর্মীর অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষা রাজনৈতিক বিষয় নয়, তাই শিক্ষাঙ্গনের যেকোনো কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের না রাখার বিধান করা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের নিয়োগ, আয়-ব্যয় ব্যাংকের হিসাব ও কমিটির মাধ্যমে সমাধান ও কোনো শিক্ষক অপরাধী হলে তার বিচার নিশ্চিত করলে প্রতিষ্ঠান থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির বেশিরভাগই দূর হয়ে যাবে।
পাংশা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আতাউল হক খানের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে বেশ আলোচিত রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের পরিচালনা কমিটির অসৎ সদস্যদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার উন্নয়ন কাজের পরিবর্তে আর্থিক কর্মকাণ্ডে বেশি নজর রাখেন। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কমিটির পদক্ষেপ দেখা যায় কমই। অবৈধ নিয়োগ আর নামমাত্র উন্নয়নের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন অভিযোগে উঠে এসেছে পাংশা সরকারি কলেজের এমন দুজন শিক্ষকের নাম।
এই লুটপাট নির্বিঘ্ন করতে তারা বেছে নিয়েছেন সন্ত্রাসী পন্থা। সম্পর্কের সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকায় তার সাইন বোর্ড ব্যবহার করে সাধারণ শিক্ষক ও সাবেক অধ্যক্ষকে হয়রানির রেকর্ডও আছে। জানা গেছে তারা দুই ভাই প্রতিষ্ঠানের প্রতিবাদী শিক্ষক-অভিভাবকদের নাজেহাল করেন। আবার প্রয়োজনের স্বার্থে শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন। দিনে দিনে এ ধরনের অন্যায়-অত্যাচার বাড়ছে। বিষয়গুলো জানার পরও রহস্যজনক কারণে বোর্ড বা এই কলেজ থেকে চিহ্নিতরা বারবার কমিটির সভাপতি ও সদস্যপদে মনোনয়ন পাচ্ছেন।
স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জু ও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শফিকুল মোর্শেদ আরুজের বিরুদ্ধে একগুঁয়েমি, স্বেচ্ছাচারিতা, প্রতিষ্ঠানের এফডিআর ভেঙে খরচ, অব্যবস্থাপনার দাবি করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, কলেজের অন্যান্য শিক্ষক ও কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে তারা দুজন অর্থ ব্যয় করে থাকেন বলেও অভিযোগ করেছেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আতাউল হক খান।
প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকার এফডিআর ভেঙে খরচ, রেজিস্ট্রার অনুসরণ না করেই আয়-ব্যয়, আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এই প্রতিষ্ঠান থেকে গত ১৪ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে বদলি হয়ে যাওয়া সাবেক অধ্যক্ষ আতাউল হক খান বলেন, শফিকুল মোর্শেদ আরুজ ও তার ভাই শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জুর অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তারা তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেছে। এছাড়াও গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া শামিমা আকতার মিনুকে নিজেদের ফায়দা লুটতে পারবেনা বিধায় অর্থের বিনিময়ে গত ৪ মার্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে চিঠির মাধ্যমে ৮ মার্চ নতুন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুল খালেককে বসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এই পাংশা সরকারি কলেজে আরেকটি দূর্নীতর অভিযোগ পাওয়া গেছে অভিযুক্ত শফিকুল মোর্শেদ আরুজ ও তার ভাই শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জুর বিরুদ্ধে। গত ২০২০ সালের ১৭ মে তারিখে কোনো প্রকার সরকারি বিধি না মেনে ব্যক্তিগত ইস্যুতে কলেজের দুটি গাছ কেটে নিয়ে যায় শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জু। এ ক্ষেত্রে এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। গাছ কাটা শেষে তা স্থানান্তরিত করার সময় বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যায়। যার ফলে ঘটতে পারতো যেকোনো ধরনের বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা। আর এই দূর্ঘটনা এড়াতে ওই দিন শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জু পাংশা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে তিন হাজার টাকা ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে পুরো শহরে তিন ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের কলেজ বেতন কিংবা অন্যান্য টিউশন ফি ঠিকমতো স্কুল তহবিলে জমা হয় কি না সেটা নিশ্চিত নন কেউই। বরং ২০১৫ সালে পাংশা কলেজটি সরকারি হওয়ার পরেও দীর্ঘ সময় কোনো প্রকার অর্থ জমা দেন নাই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শফিকুল মোর্শেদ আরুজ। ২০১৬ সালে কলেজে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন আতাউল হক খান। তখন সাবেক অধ্যক্ষ শফিকুল মোর্শেদ আরুজ আতাউল খানকে কলেজের ১৬ টি ফান্ডে থাকা ৪৯ লক্ষ টাকার আর্থিক হিসেব বুঝিয়ে দেন।
তবে বড় ধরনের আরেকটি অভিযোগ করেছেন কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামিমা আকতার মিনু। গত ৪ মার্চ তারিখে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রেরিত চিঠি অনুযায়ী ৭ মার্চ তারিখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুল খালেকের নিয়োগে।
আরও কিছু ঘটনা : গত ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে অন্যায়-অনিয়মের কারণে বারবার খবরের পাতায় উঠে আসছে পাংশা সরকারি কলেজের নাম। বর্তমান সময়ে শফিকুল মোর্শেদ আরুজ ও শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জুর বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে আমাদের অনুসন্ধানে।
১৭ মে ২০২০ তারিখে পাংশা শহরে বিদ্যুৎ না থাকার বিষয় সম্পর্কে বিদ্যুৎ প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে পাংশা শহরের একাধিক ব্যবসায়ী ও বসবাসকারী বাসিন্দারা বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধানে উঠে আসা এসকল তথ্যের ব্যাপারে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের সাথে কথা বলতে চাইলে এব্যাপারে কোনো প্রকার কথা বলতে রাজি হননি কেউ।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Share
Share