বর্তমানে উপজেলার আড়ানী পৌরসভাটিতে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন মুক্তার আলী। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন মুক্তার আলী । মেয়র মুক্তার আলী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এর আগে তিনি কয়েকবার আড়ানী পৌর কাউন্সিলর ও ১বার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।
আসন্ন আড়ানী পৌর নির্বাচন নিয়ে বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সাংবাদিকদের বিশেষ সাক্ষাৎকারে মেয়র মুক্তার আলী বলেন, আড়ানী পৌর ভবনটি অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-৬(বাঘা-চারঘাট) আসনের মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলমের নিজ অর্থিক অনুদানে এবং আমার অর্থায়নে পৌরভবনের জন্য ৯৫ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ভবনের কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও জানান,পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আশানুরূপ উন্নয়ন হয়েছে। এই আড়ানী পৌরসভাটি অনেকখানি গুছিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। সমস্যাগুলোর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সমাধান করেছি সকলের সহযোগিতায়। পৌর এলাকায় কিছু উন্নয়নমূলক কাজ এখনও চলমান রয়েছে।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আধুনিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসমৃদ্ধ আড়ানী মডেল পৌরসভা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেটা অনেকাংশেই করতে পেরেছি। বৈদ্যুতিক সাজসজ্জায় সজ্জিত লাইটের ব্যবস্থা করেছি পৌর এলাকায়। এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে এবং রাজনৈতিক কোনো সহিংসতা নেই। যে কারণে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়নি।
মেয়র মুক্তার আলী আরো বলেন, ‘মাদক, ছিনতাই, সন্ত্রাস এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান কঠোর। দায়িত্ব নেওয়ার আগে আমি কথা দিয়েছিলাম ৩ মাসের মধ্যে আড়ানী পৌরসভাকে মাদকমুক্ত করবো, আর সেই কথা বাস্তবায়ন করতে বাঘা থানা পুলিশ,পৌর কাউন্সিল ও এলাবাসীর সহযোগিতায় দেড় মাসের মধ্যেই প্রায় ১৭০/১৮০ টি দেশিও চোলায় মদের ভাঁটি উচ্ছেদ করেছি। সেই সাথে বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ীকে মাদক ব্যবসা বাদদিয়ে সৎ ও হালাল কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এ কারণেই এ ধরনের অপরাধ আমার পৌরসভায় খুব কম হয়। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।
পৌরসভায় দুর্নীতি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পরেই পৌরসভাকে দুর্নীতি মুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ আমি গ্ররহন করি। বর্তমানে আমার অফিস দুর্নীতি মুক্ত রয়েছি।
নাগরিক সেবা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৌরবাসীর নাগরিক সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। সবাইকে সন্তুষ্ট করা তো সম্ভব নয়, তবে আমার কাজে অধিকাংশ মানুষ সন্তুষ্ট বলে আমার বিশ্বাস।
মেয়র মুক্তার বলেন, ‘শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা আমার অধীনে নয়। এগুলো রাজশাহী জেলা পরিষদের হাতে ন্যস্ত। তারপরও পৌর এলাকার মধ্যে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিজ অর্থায়নে কম্পিউটার প্রদান করেছি। বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আড়ানী থেকে ১২ কিলোমিটারের দূরত্ব হওয়ায় আড়ানী পৌরসভাতে মা ও শিশুদের সু-চিকিৎসার জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সফল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলমের একক প্রচেষ্টায় ও আমার সহায়তায় নির্মীত হয়েছে।
মেয়র বলেন, ‘আমি উন্নয়ন কাজে বিশ্বাসী।আড়ানীর উন্নয়ন পৌরবাসীর সামনে দৃশ্যমান। আধুনিক মডেল পৌরসভা গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছি। দীর্ঘদিন কাউন্সিলর থাকার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, সকল কাউন্সিলর ও সচেতন নাগরিকদের নিয়ে পৌরবাসীর সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। কতটুকু পেরেছি, কতটুকু পারিনি- সেই মূল্যায়ন এই আড়ানীর জনগণ করবে।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি-না জানতে চাইলে মুক্তার আলী বলেন, এটি দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। আমার নেতা আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলমের কাছে আমি নৌকার টিকিট প্রত্যাশা করি। তিনি চাইলে আমি প্রার্থী হবো,আমি কখনো উনার সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি, আর যাবোও না কোনো দিন।