প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের মুখে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদারকে ওরফে পিকে হালদার গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
শুক্রবার এই রেড অ্যালার্ট জারি করে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা।
এআইজি বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ (শুক্রবার) ইন্টারপোল পিকে হালদারের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে।
এর আগে পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের সহায়তার আবেদন করে দুদক। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে করা সব মামলার নথি চায় ইন্টারপোল। পরে ২ ডিসেম্বর ইন্টারপোলের মাধ্যমে পিকে হালদারকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।
আর্থিক খাত থেকে আত্মীয়-স্বজন চক্রের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেয়ার কারিগর পিকে হালদারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। দুদক ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে।
এছাড়া দুদকের ক্যাসিনো দুর্নীতির মামলায় চার্জশিট তালিকায় লিজিং কোম্পানি ও আর্থিক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারে জড়িত পিকে হালদারের নামও রয়েছে। ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতায় তার বিরুদ্ধে ৮ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
এদিকে নিরাপত্তা চেয়ে ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) জানায়, আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে জীবনের নিরাপত্তার জন্য আদালতের আশ্রয়ে পিকে হালদার দেশে ফিরতে চাইছেন। আবেদন গ্রহণ করে ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এক আদেশে বলেন, পিকে হালদার বিমান থেকে দেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত আদালতে সোপর্দ করতে হবে। পিকে হালদার যদি দেশে আসেন, তাহলে এ কোম্পানি ম্যাটারটা নিষ্পত্তি করা যাবে।
সেটা নিষ্পত্তি করার জন্য এ কোর্ট দেখতে চায় যে, তিনি বিমানে দেশে পা ফেলা মাত্র তাকে যেন অ্যারেস্ট করা হয় এবং জেলে নেয়া হয়। তাকে যেন বাইরে যেতে না দেয়া হয়। এ কাজটা যদি করা হয়, তাহলে তার আবেদন অনুযায়ী তিনি যে মনে করছেন, তাকে কিডন্যাপ করা হবে, তা আর হবে না। তবে ২৪ অক্টোবর পিকে হালদার দেশে ফিরছেন না বলে দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে আইএলএফএসএলের আইনজীবী ই-মেইল করে জানান।