বরিশালের গৌরনদী উপজেলার অলিগলি পাড়া মহল্লার বাকেবাকে ক্যারাম বোর্ড খেলার নামে চলছে জুয়া মাদক ব্যাবসা। ক্যারাম আস্তানা থেকে উত্যক্ত করা হয় স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী এমনকি রাস্তায় চলাচলকারী গৃহবধুদেরকে।
এর সাথে জড়াচ্ছে এলাকার উঠতি বয়সি কিশোর, তরুন,ছাত্র,শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ খেলা। বিনোদনের নামে সামাজিক অবক্ষয়ের এক নতুন সংষ্করন এই ক্যারাম জুয়া, এমনটাই মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
জানাগেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের চায়ের দোকান,হাট বাজারসহ বিভিন্ন অলিগলিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্যারাম খেলা চলে। ৫০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার হাজার টাকার খেলা হয় এই মিনি ক্যাসিনো খ্যাত ক্যারাম বোর্ডে। ক্যারাম বোর্ডের মালিক খেলা অনুপাতে প্রতি গেম খেলার জন্য ভাড়াবাবদ ৫শত টাকা থেকে এক হাজার টাকা পান।
যে সব বোর্ডে বেশী টাকার খেলা হয় তা আলাদা চুক্তি করে নেয়া হয়। সুত্রমতে অধিকাংশ ক্যারাম খেলার ঝুপরি ঘরগুলো,কতিপয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কিছু উঠতি বয়সি ক্যাডাররা এর নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রন করে অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে।
এ প্রতিনিধির অনুসন্ধানে, গৌরনদী উপজেলা,পৌর সদর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে এ রকম ৫৭ টি ক্যারাম খেলার ঝুপরি ঘরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ক্যারাম খেলাকে সামান্য বিনোদন মনে করা হলেও এর নেপথ্যে চলছে জুয়া, মাদক ব্যাবসা ও সেবন।
উঠতি বয়সি শিশু কিশোর তরুন, ছাত্র, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ সামান্য বিনোদনের নামে অনায়াসে জড়িয়ে পরছে ক্যারাম জুয়ায়। এর বিস্তৃতি উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের অলিগলি পর্যন্ত।
শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, ক্যারাম জুয়ায় আসক্ত হয়ে পরেছে অনেক ছাত্র। এ ব্যাপারে কয়েকজন ছাত্রের অভিভাবক তাদের সন্তানের ক্যারাম আশক্তির কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি গুরত্বের সাথে দেখার অনুরোধ করছি।
গৌরনদী বন্দরের ব্যাবসায়ী মশিউর রহমান পিন্টু বলেন, ক্যারাম বোর্ড খেলা সামান্য বিনোদন এর বিরোধিতা আমরা করি না, কিন্ত বিনোদনের নামে অবৈধ বা অনৈতিক কাজকে প্রশ্রয় দেয়া উচিত না।
চাঁদশী, টরকী, কসবা, পালরদী, আশোকাঠী, রাজাপুর, বাংলাবাজার ও শাওড়া গ্রামের কয়েকজন ভূক্তভোগী ও শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানিয়েছেন,চলাচলের পথে ক্যারাম খেলার আসর থেকে তাদের বিভিন্ন অশ্লিল কথার্বাতা ও উত্যক্ত করা হয়।
ক্যারাম বোর্ড মালিক ইদ্রিস আলী,কালাম সরদার,নুর আলমসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে,তারা বলেন রাস্তায় চলাচলকারী কোন মেয়েদের উত্যক্ত বা ক্যারামের নামে জুয়া খেলা হয়না। তাদের মতে এটি সামান্য বিনোদন কোন টাকা পয়সা দিয়ে খেলা হয়না। অনেকেই চা খেতে আসেন একটু অলস সময় পার করার জন্য দু এক বোর্ড খেলেন, এতে আমাদের দোকানে একটু বেচাকেনা ভালো হয়।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন এ প্রতিনিধিকে জানান, সম্প্রতি আমি নিজে দুটি স্পডে ক্যারাম বোর্ড খেলা বন্ধ করে দিয়ে বোর্ড দুটি থানায় নিয়ে এসেছি।
এ ব্যাপারে আমাদের নজরদারি এবং সতর্কতা রয়েছে, এর পরেও কোন অভিযোগ পেলে আমরা সাথে সাথে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যাবস্থা নেব।