রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজে দুর্নীতি ও লুটপাটের চক্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একশ্রেণির শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য গড়ে তুলেছেন এই চক্র। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের চেয়ে আর্থিক দিকে বেশি নজর তাদের। কোথাও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের আড়ালে আবার কোথাও অনিয়মের মাধ্যমে লুট হচ্ছে কলেজের লক্ষ টাকা ও সম্পদ।
কলেজের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হওয়ায় সভাপতি বা পর্ষদের অবৈধ ও অন্যায় নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গত ২০১৯ সালে আইনগতভাবে ফেঁসে গিয়ে ছিলেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আতাউল হক খান। আর কোনো কারণে প্রতিবাদ করলে চাকরিচ্যুত হওয়ার পাশাপাশি অপমান-অপদস্থ হতে হচ্ছে কলেজের সাধারণ শিক্ষকদের। এমন পরিস্থিতিতে উভয় সংকটে আছেন সাধারণ শিক্ষকরা। অবশ্য কমিটির লোকজন অধ্যক্ষ ও সাধারণ শিক্ষকদের ব্যবহার করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে একটি অনুসন্ধান চালানো হলে দেখা গেছে, পাংশা সরকারি কলেজের পরিচালনা কমিটির দুর্নীতিবাজ সভাপতি ও সদস্যরা নানা রকম উন্নয়ন, কেনাকাটার কাজকে প্রাধান্য দেন। বিপরীতে শিক্ষার মান কিংবা শিক্ষার্থীদের সমস্যার প্রতি তাদের নজর দিতে দেখা যায় খুব কম। বরং শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাবদ আদায় করা অর্থ অযথা বৈঠক করে সম্মানী গ্রহণসহ নানাভাবে লুটপাটের অভিযোগ উঠছে কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে থাকা শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জুর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে দলাদলি করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, শিক্ষক-কর্মচারী-অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটছে শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জু ও তার ভাই কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল মোর্শেদ আরুজের মাধ্যমে।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য চিত্রে দেখা যায় সম্প্রতি গত ৮ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত প্রায় বিশ লক্ষ টাকার অধিক বিভিন্ন ক্ষাতে হিসেব দেখিয়ে কলেজের ফান্ড থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। এছাড়াও গত ৮ মার্চ কলেজের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুল খালেকের দায়িত্বভার গ্রহণের পর কলেজের হিসাব বিভাগ থেকে আর্থিক হিসাব সংক্রান্ত বিষয় লিপিবদ্ধকৃত খাতা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে ব্যক্তিগত ভাবে করেছে অডিট।
কলেজের কয়েকজন সাধারণ শিক্ষক জানান, গত ২৬ মার্চ কলেজের ৫৭ জন শিক্ষককে কলেজ ফান্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে তারা ৭ হাজার টাকা উল্লেখিত কাগজে স্বাক্ষর করে। কিন্তু তাদের প্রদান করা হয় ৫ হাজার টাকা। বাকি ২ হাজার টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক শিক্ষকদের বলেন, পূর্বের অধ্যক্ষ আতাউল হক খানকে কলেজ থেকে তাড়াতে যে অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল তা এখান থেকে কর্তন করা হয়েছে। এই অজুহাতে প্রায় ১লক্ষ ১৪ হাজার টাকা লোপাট হয়েছে শুধু ২৬ মার্চ।
এই বিভাগের আরও খবর....