সোনাই নিউজ:বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এড.মাহবুব আলী বলেছেন-মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও আদর্শ ছিল শোষনহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এ কারণে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কৃষক শ্রমিক ছাত্র জনতা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ অনন্তকাল বেঁচে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম। বৃহস্পতিবার ৪ঠা এপ্রিল ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবসে মুক্তিযোদ্ধা জনতার মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তেলিয়াপাড়া চা বাগান স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফজলুল জাহিদ পাবেলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সেনাপ্রধান ৩নং সেক্টর কমান্ডার কেএম শফিউল্লাহ বলেন ১৯৭১ সালের ১৮ই মার্চ জয়দেবপুর থেকে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একদল সৈন্যবাহিনী নিয়ে ২৮শে মার্চ ভারত সীমান্তবর্তী তেলিয়াপাড়া চা বাগানে আসেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা বাগান বাংলোতে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সামরিক কর্মকর্তাদের বৈঠক করে যুদ্ধ শুরু করেন। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য দেশের মুক্তিকামী জনগণকে প্রশিক্ষণ অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধে ঝাঁিপয়ে পড়েন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তেলিয়াপাড়ার ভূমিকা ঐতিহাসিক। ঐ স্থানটিকে নতুন প্রজন্মের জন্য ইতিহাস শিক্ষার জন্য সংরক্ষণ করে জাতীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন। ম্যানেজার বাংলোটিকে জাদুঘর ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা প্রয়োজন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেজর জেনারেল অবঃ হেলাল মুর্শেদ খান বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তৈরি থাক। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। জাতির জনকের ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ না নিলে দেশ স্বাধীন হত না। ৪ঠা এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বৈঠক হয়েছিল তেলিয়াপাড়া চা বাগান বাংলোতে। ঐ স্থানটিকে ইতিহাসের পাতায় ধরে রাখার জন্য মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধক্ষেত্র সংরক্ষণ স্থান হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। রাজনৈতিক, সামরিক ও কুটনৈতিক প্রচেষ্ঠার সম্বলিত ফল হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ওই স্থানটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানান। জবাবে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী এই স্থানটিকে সংরক্ষনের জন্য সরাকরি ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে ঘোষণা করেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এড. মোহাম্মদ আলী পাঠানের পরিচালনায় মুক্তিযোদ্ধা জনতার সমাবেশে অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী, নরসিংদী জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারজানা কাউনাইন, ঢাকা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি আমির হোসেন, নরসিংদীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আঃ মোতালেব, হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ আতিকুল বাবু, মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মল্লিকা দে প্রমুখ।