১৯৭০ সালের এই দিনে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের তবিরকাঠি গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ডায়নামিক লিডার খ্যাত মোহাম্মদ আইয়ুব আলী হাওলাদারের জন্মদিনে দোয়া, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অজস্র শুভ কামনা ও প্রীতি জানিয়েছেন তাঁকে।
৪ বারের নির্বাচিত মহাসচিব হিসেবে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার ১৬ দফা দাবির লক্ষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণের প্রসার ও তাদের সার্বিক মানোন্নয়নকল্পে ভূমিকা রাখায় সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আলোচনায় ছিলেন সবসময়। সংগঠন ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করে নন্দিত হয়েছেন তিনি।
মরহুম সিরাজউদ্দিন ও আয়েশা খাতুন দম্পতির তিন মেয়ে ও চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট মোহাম্মদ আইয়ুব আলী হাওলাদার। বিভিন্ন গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
মোহাম্মদ আইয়ুব আলী হাওলাদার বরিশাল মহানগরের সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন, এরপর বোয়ালিয়া জে এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এসএসসি, বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি, এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজধানীর আবু জর গিফারী কলেজে স্নাতক পাস করেন। এরপর মিরপুরের রূপনগর “ল” কলেজ থেকে আইন বিভাগের প্রথম পর্ব শেষ করে প্রাইম ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে মনোনিবেশ করে প্রবল চাপে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার সমাপ্তি করেন আইয়ুব আলী হাওলাদার।
ছাত্র জীবনে তিনি মহান স্বাধীনতার স্বপক্ষে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণ সাধনে এবং অধিকার বঞ্চিতদের নিয়ে গবেষণা করেন। ছাত্র কল্যাণে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সেমিনারে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। ছাত্রত্ব শেষ হলে মোহাম্মদ আইয়ুব আলী হাওলাদার ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নেন।
এরপর বরিশাল জেলার আগৈলঝড়া উপজেলার বাগদা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাতৃশিরা চান্দ গ্রামের আব্দুল লতিফ বাহাদুর ও রোকেয়া বেগম দম্পত্তির প্রথম কন্যা সালেহা বেগম এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহিত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। বড় ছেলে তানভীর আহমেদ সাকিব (১৯) ও ছোট মেয়ে আফসানা আক্তার মীম (১৭)।
জন্মদিনের অনুভূতি জানিয়ে মোহাম্মদ আইয়ুব আলী হাওলাদার বলেন, জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার পক্ষ থেকে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই। আজকের এই দিনে আমি নিজেও পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করি। আমি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আর এজন্য আমার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের নিয়েই আমার সার্বিক কার্যক্রম।
তিনি আরো বলেন, ছোট বেলা থেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সামাজিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সপ্তাহ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছি।
মহাসচিব আইয়ুব আলী হাওলাদার বলেন, সারাদেশে আজ জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আমাদের গঠনতন্ত্র মতাদর্শে ১৬ দফার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। বিগত বছর গুলোতে সংস্থার যদি কোন অর্জণ হয়ে থাকে তবে তা কেবল সদস্যদেরই। বিশাল এই জগৎ সংসারে আমার অফুরন্ত ভালোবাসা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে আমি নীতির সাথে কখনো আপোষ করিনি। ন্যায় আর অন্যায়,পাপ আর পূণ্য জানি তাই কেবল ত্যাগের পথ ধরেই হাটছি।