ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর শহরে একটি ক্বওমী মাদ্রাসায় ছেলেকে ভর্তি করতে না পারায় ওই মাদ্রাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেন কোটচাঁদপুর বিদ্যুৎ অফিসের (ওজোপাডিকো) আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ। মঙ্গলবার দুপুরে পৌর এলাকার বড়বামনদাহ রোডে অবস্থিত কোটচাঁদপুর ক্বওমী বালক-বালিকা মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংএ এঘটনা ঘটে। এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরম বিপাকে পড়ে মাদ্রাসার আবাসিক-অনাবাসিক তিন’শ কমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ অভিভাবকদের মধ্যে। প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকার পরও ব্যাক্তি আক্রশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি দীনি প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী কোন প্রকার নোটিশ ছাড়ায় কিভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেন তা জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন পাটোয়ারী জানান, মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদের ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তির জন্য পাঠান। মাদ্রাসার মোহতামিম (প্রিন্সিপল) ছুটিতে থাকায় দায়িত্বরত শিক্ষক মুফতি মাসুম বিল্লাহ তাদেরকে জানান, বছরের শেষের দিকে হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ আছে। ওই শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার জন্য জানুয়ারীতে যোগাযোগ করতে বলেন। এমনকি বেশি জরুরী হলে, মাদ্রাসার মোহতামিম (প্রিন্সিপল) ছুটি থেকে ফিরলে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ভর্তিচ্ছুক শিশুটির পিতা কোটচাঁদপুর বিদ্যুৎ অফিসের (ওজোপাডিকো) আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ ক্ষিপ্ত হন। এবং মূহুর্তেই ওই মাদ্রাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলেন। দুপরে মাদ্রাসার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তিন’শ আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ওযু-গোসল সহ খাবার পানির সংকটে পড়ে। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রত বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু আবাসিক প্রকৌশলী মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
পরবর্তিতে অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তিনি আমাদেরকে জানান, অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত লোডে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার কারনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কোন প্রকার আগাম নোটিশ ছাড়া একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তা, জানতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। অনেক আকুতি মিনতীর এক পর্যায়ে তিনি একটি পেপারসে সাক্ষর করে প্রায় ৫ ঘন্টা পর মাদ্রাসার বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। এঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রকৌশলীর ব্যাক্তি ও কর্মক্ষের্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে। ঘটনার বিষয়ে প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য না। ওই প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ এর লোড ক্যাপাসিটি ২ কিলো ওয়ার্ড। কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে ৪ কিলো ওয়ার্ড। এই কারনেই মাদ্রাসার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পূর্বে কোন প্রকার লিখিত বা মৌখিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন প্রকার সদুত্তর দিতে পারেননি।
এই বিভাগের আরও খবর....