সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পার্শেমারী গ্রামের আশরাফুন্নেছা বেগম (৩৬) নামে ৬ সন্তানের জননী এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
পারিবারিক কলহের জের ধরে সোমবার (২৩ মে) রাতে স্বামী শফিকুল ইসলাম তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্ত্রীর মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় মঙ্গলবার ভোরে চাঁদনীমুখা এলাকা থেকে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে গ্রাম পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
নিহতের সন্তান সহ পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভে থাকা চার মাসের সন্তান ‘নষ্ট’ করতে সম্মত না হওয়ায় তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আশরাফুন্নেছা বেগম শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের পার্শেমারী গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূর ভাই মহিবুল্লাহ জানান, গত তিন বছর আগে ভগ্নিপতি শফিকুল ইসলাম নিজ চাচাতো বোন স্বামী পরিত্যক্তা ফুলমতি বিবিকে (২৬) বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী তার পিত্রালয়ে অবস্থান করে প্রথম স্ত্রী’র সাথে সম্পর্ক ছেদ করার জন্য স্বামীকে চাপ দিতে থাকেন।
সম্প্রতি আশরাফুন্নেছা আবারও সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়ার ঘটনা জানাজানি হলে সাংসারিক অশান্তি বৃদ্ধি পায়। স্বামীর কথামত গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়াতে সোমবার রাতে মারপিটের পর ভোরের দিকে আশরাফুন্নেছার মৃত্যু হয় বলে তার অভিযোগ।
নিহতের বড় ও মেজ ছেলে আনারুল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম জানায়, পিতা শফিকুল ইসলাম গত দুদিন ধরে তার মায়ের উপর বেশ শারীরিক নির্যাতন করছিল। সোমবার ভোরে প্রতিবেশীরা ডাকতে আসার পর পিতার ঘরের মধ্যে মৃত অবস্থায় তারা নিজেদের মাকে দেখতে পায়।
এ সময় বারান্দায় শুয়ে থাকা তার পিতা পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা পাশের গ্রাম থেকে তাকে আটক করেন। এ ঘটনায় তাদের মামা রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে শফিকুল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ মশিউর রহমান জানান, প্রথম স্ত্রী আবারও সন্তান ধারণ করা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে শফিকুলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে আশরাফুন্নেছাকে সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিয়েও কাজ না হওয়ায় মারপিটের সময় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে উল্লেখ করে ঐ জনপ্রতিনিধি আরও জানায় গ্রামবাসী তাকে আটক করে গ্রাম পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, শফিকুলকে আটক করা হয়েছে ও লাশ মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।