খুলনার পাইকগাছায় নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে ঈদের আনন্দ ম্লান হচ্ছে। নিত্যপণ্যসহ সয়াবিন তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজারে কোন তদারকি নেই বলেও চলে। সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এমনকি বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে।
খোলা তেলের দাম বেশি হওয়ায় দোকানিরা বোতল খুলে লুজ হিসেবে বিক্রির কারণেই বাজারে কমছে বোতলজাত তেলের সংখ্যা। রবিবার উপজেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি, পৌর সদর, নতুন বাজার, আগড়ঘাটা, গদাইপুর, বোয়ালিয়া, সরল ও র্যালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলাবাজারে (লুজ) প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা আর বোতল ১৯৫ টাকা। ক্রেতারা বলছে তাঁরা সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে গেছেন।
পাইকারী বাণিজ্যিক বাজার কপিলমুনির কয়েকজন ক্রেতা বলেন, অধিকাংশ দোকানী বোতলজাত তেল নেই বলছে। কিন্তু সবার কাছেই বোতলজাত তেল রয়েছে। এগুলো খুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এক লিটারের বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা। এই তেলের বোতল ড্রামজাত করে (লুজ) বিক্রি করলে প্রতি লিটার তেলে ১৫ টাকা বেশি লাভ থাকে। বেশি লাভ পাওয়ার আশায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বোতল খুলে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে এক দোকানি বলেন, ২ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৩৯০ টাকা। খুলে বিক্রি করলে পাওয়া যায় ৪২০ টাকা। ৩ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৫৮৫ টাকা। তা খুলে বিক্রি করলে পাওয়া যায় ৬৩০ টাকা। ৫ লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৯৭৫ টাকা। এটি খুলে ১০৫০ টাকায় বিক্রি করা যায়। বোতল খুলে তেল বিক্রির কারনে বাজার থেকে বোতলজাত তেল উধাও হয়ে গেছে। পৌর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী পীযূষ কুমার সাধু বলেন, প্রায় ১৫ দিন ধরে কোম্পানি আমাদের কোনো বোতলজাত তেল দিচ্ছে না। সে কারনে বাজারে বোতলজাত তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে বোতলজাত তেলের চেয়ে আমাদেরকে খোলা তেল বেশি দাম ধরছে। তাহলে আমরা কীভাবে কম দামে বিক্রি করব।
এদিকে তেল ছাড়া অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বাড়তি। এক কেজি চাল কিনতে ক্রেতাকে ৫০ থেকে ৭০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। চিনির কেজি ৮০ টাকার বেশি।
কপিলমুনি বাজারে মাংস কিনতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, যে গরুর মাংস দেড় মাস আগেও ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন ৬৫০ টাকায় আমাদের কিনতে হচ্ছে।
একই বাজারের আ. সবুর আল-আমিন বলেন, বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের কারনে আমরা চোখে অন্ধকার দেখছি। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪ টাকা।
প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকা। এক মাস আগে ছিল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। বাণিজ্যিক নগরী কপিলমুনিতে তদারকি না থাকায় দোকানীরা দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম বলেন, তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট মেনে নেওয়া হবে না।
যদি তেল বেশি দামে বিক্রি করা হয়, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।