শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
প্রকল্পে চাকুরি, লভ্যাংশ প্রদান সহ ৭ দফা দাবিতে পায়রা  তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থদের মানব বন্ধন গণতন্ত্রকে পরিবারতন্ত্র ধ্বংস করছে : নতুনধারা   রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সকল সরকার : মোমিন মেহেদী ফেনী ও নোয়াখালীতে বন্যাদুর্গতদের পাশে এসএলএ ২২ দিন পর লাশ উত্তোলন ৩ আসামি কারাগারে  ত্রান প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট, এবার পর্নোগ্রাফী আইনে মামলা দায়ের রাজশাহীতে গৃহবধূকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শশুরকে হত্যার চেষ্টা, প্রতিবাদে মানববন্ধন কলাপাড়ায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গায়েব করার হুমকী দেয়ায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় সাধারন ডায়রী
নোটিশঃ
দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি আবশ্যক। নুন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ এস সি/ সমমান পাস। যোগাযোগঃ 01715247336

কামারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০ বছরের পুরাতন ঝুকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি / ১০১
নিউজ আপঃ রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কামারখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ বছরের পুরাতন ঝুঁকিপূর্ন ভবনে চলছে পাঠদান। ভবন সংকট থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঝুকিপূর্ন ভবনেই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

এতে করে শিক্ষক-অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সবসময় আংতকের মধ্যে থাকেন। যেকোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। বাইরে থেকে ভবনটিকে দেখে বোঝার কোন উপায় নাই। কিন্ত ভিতরে গেলে চোখে পড়ে ছাঁদ ও দেওয়ালের পলেস্তার খসে পড়ার চিত্র।

দেখা মেলে আরসিসি পিলার ও গ্রেডবিমগুলোর বিস্তৃত ফাটল। ভবনটির নিচতলা ও দ্বিতলা মিলে ১১টি রুমের মধ্যে ইতিমধ্যে নিচতলায় ২টি এবং দোতলার ১টি মোট তিনটি রুমে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

ঝুকি মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়েই ভবন সংকটের কারনে বাকী রুমগুলোতে অফিস ও ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। এ কারনে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতংকে থাকেন অভিভাবকরা।

জানাগেছে, স্থানীয়দের উদ্যোগে ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে কামারখালী উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদ্যালয়টি ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে স্বীকৃতি লাভ করে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রানালয় ১৯৮০ সালের ১ জানুয়ারী বিদ্যালয়টিকে এমপিও ভুক্ত করেন।

স্থানীয়দের উদ্যোগে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত দোতলা এই ভবনটিতে রয়েছে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষক কমন রুম, ছাত্রী কমন রুম, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, বিজ্ঞানাগার ও ছাত্রী শ্রেণি কক্ষসহ মোট ১১টি রুম।

এই বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষক ১৯জন, কর্মচারি ৫জন। ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে মোট ৮ শত জন। দোতলা এই ভবনটিতে অফিস ছাড়াও ৫টি ছাত্রী শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। যেখানে ৪১২ জন ছাত্রী তাদের ক্লাস করে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ১৯৬০ সালে নির্মিত ভবনটির প্রতিটিকক্ষ ধীরে ধীরে জরাজীর্ন হয়েছে পড়েছে । জরাজীর্ণ এই ভবনের নিচ তলায় অফিস করছেন প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক ও কর্মচারিবৃন্দ। ভবনটির ছাত্রী শ্রেণিকক্ষে গেলে চোখে পড়ে ভবনের আরো করুন দশা। শ্রেনি কক্ষের ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা, আরসিসি পিলার আর ভীমের ফাটল। বৃষ্টির সমযে ছাদছুঁয়ে পানি পড়ে মেঝোতে। জানালাগুলো ভাংগা। ক্লাসরত শিক্ষক আর ছাত্রীদের চোখে মুখে আতংকের ছাপ।

অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মহিমাতুন নেসা, উম্মে কুলসুম, স্বত্তিকা চৌধুরি, ১০ম শ্রেণির ছাত্রী লাবিবা চৌধুরীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করার সময় মাথার উপর ছাদের পলিস্তরা, বালু খসে পড়ে। মনের মধ্যে সবসময় ভয় নিয়ে আমারে ক্লাস করতে হয়।

আমাদের পিতা-মাতা আমাদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আতংকে থাকে। তারা জানান, অনেক স্কুলেই পর্যাপ্ত ছাত্র/ছাত্রী না থাকলেও বড় বড় ভবন হচ্ছে অথচ উপজেলার মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়টি ফলাফল সহ শিক্ষার মান ভাল থাকা সত্তেও কোন ভবন হচ্ছেনা।

আমরা শিক্ষা মন্ত্রী সমীপে আবেদন করেছি ।আমা করছি দ্রুত আমাদের নিরাপত্তা ও ভবিষৎ শিক্ষার কথা ভেবে এ বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মান করবেন।

বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মনিরুজ্জামান টার্গেট বলেন, প্রায় ৭০ বছর আগে নির্মিত এই ভবনটির এতই জরাজির্ণ অবস্থা হয়ে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। এ অবস্থা সত্ত্বেও আমরা ভবন ও শেনি কক্ষের সংকটের জন্য ছাত্রীদের ভবিষেৎর কথা শিক্ষার কথা মাথায় রেখে ঝকিপূর্ন ভবনের শেনিকক্ষে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রাকিব হোসেন চৌধুরি ইরান বলেন, ভবনটি ঝুকিপূর্ন হওয়া সত্ত্বেও ছাত্রীদের শিক্ষা চালিয়ে রাখার স্বার্থে ভবনটিকে পরিতক্ত ঘোষনা করা হচ্ছেনা। ইতি মধ্যে আমরা স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যের কাছে একটি চারতলা ভবনের জন্য আবেদন করেছি তিনি আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন।

এ ছাড়াও শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এই বিদ্যালয়ে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হয়ে থাকে। তিনি আশা করেন খুব তাড়াতাড়িই এই স্কুলে একটি ভবন নির্মান হবে।

প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ বশীর উদ্দীনের মাধ্যমে জানা যায় ও দেখা গেছে, ১৯৬০ সালে নির্মিত এ বিদ্যালয় ভবনে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্কুল ভবনে বড় বড় শেল পড়ায় ত্রুটি দেখা দেয়ার পর ধীরে ধীরে শ্রেনী কক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। আমরা ঝুকি নিয়ে নিজেরাও এই ভবনে অফিস করি। ছাত্রী ক্লাস নেওয়ার সময় তাদের সাথে আমরাও আতংকের মধ্যে থাকি।

তিনি মাননীয় সংসদ সদসের‌্য কাছে দ্রুত একটি ভবন এই বিদ্যালয়ে নির্মানের ব্যবস্থা করার দাবী জানান।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের এ দুরাবস্থা থেকে উত্তরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রাও।


এই বিভাগের আরও খবর....
এক ক্লিকে বিভাগের খবর