সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটার সৈকতে উৎসব মুখর পরিবেশে বিরাজ করছে। ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছর বরণ করতে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক জড়ো হয়েছেন সৈকতে। সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে নেচে
গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন তারা। আবাসিক সংকট ও অতিরিক্তি ভাড়া নিয়ে অনেকের অসস্তোষ থাকলেও নিরাপত্তা আর আতিথিয়তায় মুগ্ধ পর্যটকরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের
সূত্রে জানা গেছে।
বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের আগমনে সর্বত্রই উৎসবের আমেজ বইছে। আবাসিক হোটেল, খাবার হোটেল, ঝিনুকের দোকান, শুটকির দোকানসহ পর্যটনমূখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেচা-কেনার ধুম পড়ে গেছে।
দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন সৈকতে একটি বাড়তি আকর্ষণ ছিল। আনন্দের এ স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য অনেকেই নিজ নিজ ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও ক্যামেরায় ছবি ধারণ করে রেখেছে। ঠান্ডা বাতাস বইলেও ওইসব পর্যটকরা সমুদ্রের ঢেউয়ের
সাথে দীর্ঘ সময় ধরে উল্লাস করে গোসল করছেন অনেকেই। এ সময় অনেককেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে ভেসে বেড়াতে দেখা গেছে।
পর্যটকরা জানান, ২০২১ সালের দুঃসহ সব স্মৃতি ধুয়েমুছে ২০২২ সালের সূর্যোদয়ের সঙ্গে একটি নতুন পৃথিবী দেখার প্রত্যাশা তাদের। তারা চান নতুন বছর করোনামুক্ত পৃথিবী হোক। তারা আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির পর দীর্ঘদিন কোথাও যাওয়া হয়নি। বছরের শেষ ও নতুন বছরের আগমনটা উপভোগ করতে আসা কুয়াকাটায়।
এদিকে থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে কুয়াকাটায় কোন আয়োজন না থাকলেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে এসেছে হাজারো পর্যটক। আগামী দু’চার দিন এরকম চাপ থাকবে। তবে কিছু কিছু অভিযাত হোটেলে থার্টিফাস্ট নাইটে পর্যটকদের লাইভ কনসার্ট, ডিজে পার্টি ও ফানুস উৎসবের আয়োজন করেছে বলে ট্যুরিজাম ব্যবসায়িরা জানান।
পর্যটক তানভির হাসান বলেন, শহরের এক ঘেয়ে জীবন থেকে একটু পরিত্রান পেতে স্বপরিবারে কুয়াকাটায় এসেছি। এখানে প্রকৃতির গড়া নির্মল শোভা আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। বছরের শেষ সূর্যাস্ত সাগরের মাঝখানে নিমজ্জিত হতে দেখেছি। আশা করি এ সৈকতে দাঁিড়য়ে ২০২২ সালের প্রথম সূর্যোদয় দেখব। অপর এক পর্যটক মিজানুর রহমান বলেন, সূর্যাস্তের মনোলোভা দৃশ্য সমস্ত ক্লান্তি দূর করে দিয়েছে আমাদের। এখানকার ছবি আমার ফেইসবুকেও আপলোড করে দিয়েছি।
কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো.শাহ আলম হাওলাদার জানান, সমিতির আওতাভূক্ত আবাসিক হোটেলের সকল রুমই বুকিং হয়ে গেছে। তবে পর্যটকের ভীড়কে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করতে পারে সেজন্য সাবক্ষনিক তদারকি করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক বলেন, ইংরেজি নতুন বছর বরণে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটকের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দর্শনীয় স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারীতেও রয়েছে।