রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরেরহাট কল্যানী শিশু সদন কর্তৃপক্ষের অসীম দূর্নীতি নিয়ে দৈনিক ‘নাগরিক ভাবনা’ পত্রিকায় তিন পর্বে প্রতিবেদন আকারে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের জেরে পত্রিকার সম্পাদকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের ছেলে শাহদোলা মানসুর। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
রাজশাহীর আমলি আদালতে বুধবার (৩ আগস্ট) এ অভিযোগটি করা হয়। এজাহার গর্ভে বাদি চাঁদাদাবি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের তথ্য তুলে ধরেন।
এর আগে প্রতিষ্ঠানটির সকল দূর্নীতির তথ্য সঠিকভাবে তুলে ধরায় সংবাদের সকল পর্বই তুমুল পাঠকপ্রিয়তা পায়। এরপর নাগরিক ভাবনা পত্রিকায় ডাকযোগে প্রতিবাদ পাঠান সরেরহাট কল্যানী শিশু সদনের পরিচালকের ছেলে। তার দেয়া প্রতিবাদ প্রতিবেদকের ব্যাখ্যাসহ পত্রিকায় ছাপানো হলেও নাগরিক ভাবনার সম্পাদকসহ ৪ জনের নামে মামলা করা হয়।
মামলার অভিযোগে দাবি করা হয়, “নাগরিক ভাবনা পত্রিকায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দেয়া সকল তথ্য মিথ্যা।” তবে প্রকাশিত সংবাদে দেয়া সকল তথ্যের প্রমান দৈনিক “নাগরিক ভাবনা” কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এমতাবস্থায় বলা যায় সরকারের নেয়া মহৎ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং নিজেদের দূর্নীতি গোপন করার লক্ষ্যে নাগরিক ভাবনার পথ রোধ করতেই এমন ষড়যন্ত্রমূলক মামলার আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
এদিকে মামলার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এমন ভূয়া ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন “রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব” নেতৃবৃন্দ। প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু কাওসার মাখন ও সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম এর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দৈনিক নাগরিক ভাবনা পত্রিকার সম্পাদক সহ চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। সেই সাথে তদন্ত পূর্বক দোষীদের শাস্তি দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
ব্যাখ্যাসহ প্রতিবাদ প্রকাশের পরেও কেন দীর্ঘ এত দিন পর মামলার আশ্রয়ে গেলেন তারা, তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য,, বাঘা উপজেলার সরেরহাট কল্যানী শিশু সদন নামের প্রতিষ্ঠানটি শুধুমাত্র কাগজ কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সরকারি অনুদানসহ সাধারণ মানুষের সহানুভূতি ও সাহায্য সহযোগিতা পেতে লোক দেখানো সংখ্যা রাখা হয়েছে। সেখানে প্রকৃত এতিম বাচ্চার সংখ্যা সীমিত । সরকার থেকে পাওয়া অর্থ চড়া সুদে দেওয়া হচ্ছে। অর্থ আত্মসাৎসহ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত এতিমরা। গুটিকয়েক প্রকৃত এতিমসহ অসংখ্য সচ্ছল পরিবারের সদস্য সেখানে সংখ্যা বৃদ্ধিতে দেখানো হয়েছে। এতিমখানায় কোন তদন্ত টিম গেলে বাহির থেকে শিশু সেখানে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে বাঘা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাফিজ শরীফকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই বিভাগের আরও খবর....