দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় পশ্চিমের নদী বেষ্টিত জেলা রাজবাড়ীতে পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে রাজবাড়ীতে। বর্তমানে জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চাষিরা। তবে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হলেও কাঙ্খিত দাম পাবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে চাষিরা।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছর রাজবাড়ী জেলার ৫ উপজেলা রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালি, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ৮ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে (২০২০-২১) পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন হবে ১লক্ষ ৬০ হাজার ১৮৫ টন পেঁয়াজ। আর এবছর পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে যা অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি মো. জামাল উদ্দিন জানান, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৫৫ মণ পেঁয়াজ পাবো আশা করছি।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে বাজারে এখনও পেঁয়াজের দাম কম। গতবার পেঁয়াজ বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ করেছিলাম। যদি পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়া যায় তবে এবারো ৫০ মণ পেঁয়াজ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো আশা করছি।
একই গ্রামের মো. ফজলু শেখ জানান, এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ চাষীদের পেঁয়াজ উৎপাদনে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন হাট-বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি মণ পেঁয়াজ সাড়ে ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও সে ভাবে পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়নি। কিছুদিন পর থেকে কৃষকরা মাঠ থেকে পুরোদমে পেঁয়াজ তোলা শুরু করবেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলায় বহরপুর গ্রামের রমজান জানান, গত বছর পেঁয়াজ চাষ করে অনেক লোকসান হয়েছে। অতি বৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এবারও তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের লোকসান এ বছর পুষিয়ে নিতে পারবো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বলেন, রাজবাড়ীতে এবার ১৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। পেঁয়াজের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে।