সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় নতুন শিক্ষাক্রমের ‘শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ’ ৫দিনের কর্মসূচির সমাপ্তি হয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ রোববার ১৫ জানুয়ারি বিকেলে সমাপ্তি হয়।
মোহনপুর, বাগমারা ও তানোর উপজেলার মাধ্যমিক ও মাদরাসার প্রায় ৬৮৪ জন শিক্ষক এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা জানান, শিক্ষকদের নাস্তা বাবদ বরাদ্দ জনপ্রতি ৮০ টাকা। প্রথম ২দিন ১৬০ টাকার নাস্তায় মাত্র ৫০ টাকা মূল্যের নাস্তা পরিবেশন করায় প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোক্তাদির আহমেদ এর উপর স্বস্তা নাস্তা দেওয়ার কারণে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী মনিরুল ইসলাম মিলে ৮০ টাকা নাস্তার পরিবর্তে ৫০ টাকা মূল্যের নাস্তা সরবরাহ করতে চান। শিক্ষকরা নাস্তার পরিবর্তে নগদ টাকা চাইলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান প্রশিক্ষণের সমাপনীর দিন সকল শিক্ষককে ২৪০ টাকার জায়গায় ১৫০ টাকা টাকা করে দেওয়া হবে। সমাপনি শেষে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা বিতরণ করেন। নাস্তা বাবদ ১৫০টাকা করে ৬৮৪ জন শিক্ষকের ১লাখ ২ হাজার ৬শ টাকা না দিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা চলে যাবার সময় উপস্থিত শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তাকে মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের কক্ষে আটকে রাখেন। মুহুর্তেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অবরুদ্ধ ঘটনাটি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে গনমাধ্যমকর্মীরা সেখানে যান। সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে প্রশিক্ষনার্থী শিক্ষক ও মাস্টার ট্রেনাররা গণমাধ্যমেকর্মীদের সকল ঘটনা খুলে বলেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি ও শিক্ষকদের তোপের মুখে পড়ে নিরুপায় শিক্ষা অফিসার পুনরায় ৬০৭ জন শিক্ষকদের মাঝে ৭০ টাকা করে ৪২ হাজার ৪’শ ৯০ টাকা বিতরণের জন্য মাস্টার ট্রেনারদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্ত হোন।
প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণকারী একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষকরা জাতির কারিগর। আমাদের নাস্তার টাকা মেরে দিয়ে শিক্ষা অফিসার ও অফিস সহকারী মনিরুল ভালো কাজ করেননি। আমরা শিক্ষিত জাতির আমাদের সাথে এই জঘন্য কাজ করা মোটেও উচিত হয়নি। এদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শিক্ষকদের নাস্তার টাকা মেরে দেওয়ায় শিক্ষিত ও সচেতন সমাজের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। সচেতন মহলরা মনে করেন ঘটনাটি তদন্ত করে অযোগ্য শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
করিশা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিঙ্গান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক সোয়াইবুর রহমান বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষকদের কোন ফাইল পাশের জন্য গেলে খামের উপর টাকার পরিমাণ লিখে দিয়ে তা নিয়ে আসতে বলেন শিক্ষা কর্মকর্তা। আমরা শিক্ষকরা তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক শিক্ষা অফিসের দূর্ণীতির নানা বিষয়ে কথা বলেন। শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী মনিরুলের দূর্ণিতি ও অনিয়ম বন্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এই বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মুকতাদির আহম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি পুরো টাকা দিয়ে দিয়েছি কিছু জানার থাকলে অফিস সহকারী মনিরুলের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিন।
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহা. নাসির উদ্দীন বলেন, বিষয়টি সকালে শুনেছি। এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।
এই বিভাগের আরও খবর....