কুড়িগ্রাম বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত, কাপচুপি ও অনিয়মের প্রতিবাদে সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়েছে। রবিবার (৩এপ্রিল) দুপুরে কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমাবেশ শেষে কুড়িগ্রাম-রংপুর সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সভাপতি প্রার্থী লিটন মিয়া, সেক্রেটারী পদপ্রার্থী মোতালেব হোসেন বাচ্চা, কার্যকরী সভাপতি প্রার্থী নুর আলী, সহসভাপতি প্রার্থী নুরু মিয়া, তাজুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক লতিফ মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদ, সড়ক সম্পাদক প্রার্থী এন্তাজ মিয়া, প্রচার সম্পাদক মাসুম প্রমুখ।
সভাপতি প্রার্থী লিটন মিয়া জানান, গত ১১ মার্চ কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের১৯টি পদের বিপরীতে ত্রিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৩হাজার ৭২০জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ওই দিন গভীর রাতে কয়েকটি পদের ফলাফল ঘোষণা করা হলেও নানা অনিয়ম, অসঙ্গতি, ভোটের হিসাবের গড়মিল পরদিন (১২মার্চ) দিনভর চেষ্টা করেও মেলাতে ব্যর্থ হয় নির্বাচন কমিশন।
সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট পূণ:গণনার দাবী ওঠে। এর জের ধরে ভোট কেন্দ্রের বাইরে শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটের ফলাফল স্তগিত করা হয়। উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে নির্বাচনী সরঞ্জামাদী নিয়ে যাওয়া হয় জেলা প্রশাসনে। এরপর শুরু হয় ধুম্রজালের।
প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে বেড়ে যায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। এ ঘটনায় শ্রমিক ও প্রার্থীরা একাধিকবার বিক্ষোভ করে পূনরায় ভোট গণনা অন্যথায় ফলাফল বাতিলসহ পূন:নির্বাচনের দাবীতে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন থেকে অনিয়মের তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র সেক্রেটারী পদের জন্য তদন্ত করায় বিক্ষোভে ফেটে পরে সাধারণ শ্রমিকরা। তারা সকল পদে পূন;গণনা অথবা পূণ;নির্বাচনের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।
এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান জানান, জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা নির্বাচনী ফলাফলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করে। এরই প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার রায়কে আহবায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন এবং সদর ইউএনও মো. রাসেদুল হাসানকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
রোববার (৩এপ্রিল) তদন্ত কমিটি অনিয়ম তদন্তে শুনানীর আয়োজন করে। শুনানীতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ভোট গণনায় জড়িত ব্যক্তিবর্গ এবং অভিযোগকারী সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদেরকে নিয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করা হয়। খুব শীঘ্রই প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।