পুলোকিত হৃদয় রিমিঝিমি ধারায় নামে বরর্ষা,
শতত প্লাবিত মাঠ-ঘাট প্রান্তর খাল-বিল নদী-নালা।
সিক্ত পাহাড় বনানী মরুভূমি বিরহী আকাশের কান্নায়,
দু’কূল ছাপিয়ে নদী বয়ে চলে আনন্দে আত্ম হারা।
চারা রোপণে ধানের আমনে ভাটিয়ালি গান গাওয়া,
কৃষাণ-কৃষাণীর মাঠে প্রান্তরে স্বপ্নের বীজ বোনা।
লাঙল কাঁধে কৃষক মাঠে হাঁকায় গরু ভোরবেলা,
কৃষাণী চলে পান্তা ভাত নিয়ে কলস কাঁকে সময় যখন আধাবেলা।
পুঁটি, দাঁড়কানী মাছে ধানের ক্ষেতে কর আনন্দেখেলা,
কৃষাণী বধু ছেলে মেয়েরা মাছ ধরে কেটে দেয় দু’পুরবেলা।
আষাঢ় গগনে বজ্রপাতে বৃষ্টির ছন্দে মেঘের দুরন্তপনা,
থৈ থৈ জলে খাল বিল ভরে ঢেউ তোলে হৃদয়ে স্বপ্নের আলপনা।
সাদা বক ভয়ে ডানা মেলে উড়ে সুদূর আকাশ পানে,
কালিয়া মেঘা আসছে ধেয়ে ভয়াল গর্জনে অঝোরে বৃষ্টি নামে।
পক্ষীকুল ভিজে জড়োসড়ো হয়ে খুঁজে নিরাপদ আশ্রয়,
নীড়হারা প্রাণে জেগে উঠে, সবহারা বেদনার প্রশ্রয়।
পুকুর ঝিলে শাপলা ফুটে শালুক ডোবা খালে,
কলমী ঝাড়ে ডাহুক ডাকে পানকৌড়ি নদীর জলে।
নব বধু রূপে প্রকৃতি সাজে সবুজের সমারোহে,
কবি সাহিত্যিক শিল্পীর গানে, ধ্যানের ছবি দোলে।
বিলের বুক চিরে নৌকা চলে নববধূ শ্বশুড়ালয়ে,
আকাশের চাঁদ আছড়ে পড়ে দুঃখী মায়ের ঘরে।
গভীর রাতে ভেসে আসে কানে কাশ বন আঁখ ক্ষেতে শিয়ালের ডাক,
সাঁড়া শব্দহীন নীরব প্রকৃতি অবিরাম বৃষ্টির টুপটাপ অনুরাগ।
ছিপখানি নৌকা পাল উড়িয়ে বড়শি ব্যাশালস জালে,
মৎস্য শিকারে মাঝিমাল্লা সবে জারি-সারি সুর তোলে।
নৌকা বোঝায় ধানে সওদাগর, বেলকাপুর হাটে চলে,
ঢেউয়ের তালে কলকল রবে বৈঠায় সুর তোলে।
পড়েছেে চারিদিকে সাঁজ সাঁজ রব নৌকা বাহিচের সাঁড়া,
বাহারি রঙের নৌকায় মাঝিরা বৈঠায় দিশেহারা।
ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাকে জোনাকিরা জ্বলে আম গাছের সাখে,
মেঘের ভেলা ভেসে চলে সুদূরে, আঁধার রাতে মিটিমিটি তারা জ্বলে।
গরু নিয়ে রাখাল পল্লী মেঠো, পথে গোধূলি লগ্নে ফিরে,
সাঁঝের বেলা পাখিদের নীড়ে, কিচিরমিচির কলরবে, বাঁশ ঝাড় ভরে উঠে।।।
এই বিভাগের আরও খবর....