রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’ নামে কথিত একটি বারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও বিয়ারসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ। আজ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আকরামুল হোসেন অভিযান চালানো, মাদকদ্রব্য উদ্বার এবং গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’ নামে কথিত একটি বারে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, আবু সালেহ, মোঃ মোহন, মুকুল, মোঃ সিব্বির আহম্মেদ, রাসেল, আবুল কাসেম মিন্টু, নাহিদ দারিয়া, শান্ত ইসলাম, আলিম উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, রহমত আলী, খালেক সাইফুল্লাহ, ইমরান, মোঃ সাহান শেখ, মোঃ মোফাজ্জেল, ওবায়েদ মজুমদার, ইবাদত খান, রাইস উদ্দিন, রায়হান, মোঃ রুবলে, রিফাত, ফয়সাল, শরিফুল ইসলাম, রাসেল, জাহিদ হাসান, রওশন জামিল রাসেল, হুমায়ুন কবির, তোফাজ্জেল হোসনে, মোঃ রিয়াদ হোসেন, আল আমনি, কাইয়ুম, নয়ন দাস, শাওন দাস ও মাহমুদুল হাসান। গ্রেফতারের সময় তাদের নিকট থেকে ৬০০৫ ক্যান বিদেশি বিয়ার ও ৪৫৮ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয় ।
এ বিষয়ে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আকরামুল হোসনের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাজধানীর উত্তরা র্পূব, উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ থানা এলাকায় অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।
এসময় অভিযান চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকার একটি বাসায় বিপুল পরিমান বিদেশি মদ ও বিদেশি বিয়ার মজুদ রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ, সেক্টর ১৩, বাসা নং-৩৯ এর ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম তলায় ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’ নামে কথিত একটি বারে অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ ও বিয়ারসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ডিবি পুলিশ জানায়, এই বারে প্রতিদিন যাতায়াত ছিল সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। তাদের মধ্যে রয়েছে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ। অভিযান পরিচালনার সময়ও বিনা লাইসেন্সে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে বসে মদ্যপান করছিলেন। কিংফিশার রেস্টুরেন্ট নামে কথিত বারটি পরিচালনা করছেন মো. মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি একটি লাইসেন্সর মাধ্যমে প্রায় ৫টি বার পরিচালনা করছেন। অবৈধভাবে বিদেশি মদ ও বিয়ার এনে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করতেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ অসাধুভাবে অবৈধ বিদেশি মদ ও বিয়ার ব্যবসার সহিত জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার ৩৫ জনের মধ্যে কয় জন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট এ বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। উত্তরার কথিত এই বারটিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরও যাতায়াত ছিল। তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের ডিবি প্রধান বলেন, সেখানে কাদের যাতায়াত ছিল, বিষয়টি আমরা তদন্ত করব।
ডিবি প্রধান বলেন, অবৈধ বিদেশি মদ ও বিয়ার ব্যবসার সহিত যারা জড়িত, তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের নামে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আকরামুল হোসনের নির্দেশে অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার আছমা আরা জাহান, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন।