সিলেট প্রতিনিধি:সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পাথর কোয়ারীর জিরো পয়েন্ট ও ভারতীয় অভ্যন্তর থেকে পাথর আনতে গেলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গুলিতে ৩ পাথর শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় বিএসএফ একটি পাথরবাহী নৌকাও ধরে নিয়ে যায়।
শনিবার (২৯ জুন) রাত আড়াইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে পুলিশি গ্রেপ্তার কিংবা আইনি জটিলতা এড়াতে গুলিবিদ্ধ এসব পাথর শ্রমিকরা সরকারী কিংবা স্থানীয় কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন না বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি তরফ থেকেও স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছেনা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে আহত ৩ পাথর শ্রমিকরা হলো- জাফলং রহমতপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র মো. আব্দুর রহমান (২৭), একই গ্রামের হবি মিয়ার পুত্র শফিকুল ইসলাম (৩০), মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫)।
স্থানীয় শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাফলং পাথর কোয়ারীর জিরো পয়েন্ট এবং ভারতীয় অভ্যন্তরে বিপুল পরিমাণ পাথর মজুদ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে বিজিবি এবং পুলিশের নিযুক্ত একাধিক দালালদের মাধ্যমে প্রতি রাতে নৌকাপ্রতি ১২শ থেকে ১৫শ টাকা হারে বখরা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জিরো পয়েন্ট পেরিয়ে ভারত অভ্যন্তর থেকে পাথর আহরণ করতে যায় খেটে খাওয়া শ্রমিকরা।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০মিনিটের দিকেও শতাধিক নৌকা বিজিবি ও পুলিশ নিযুক্ত দালালদের বখরা দিয়ে পাথর আনতে ভারতে প্রবেশ করে। এসময় ভারত অভ্যন্তর থেকে পাথর লোটের বিষয়টি দেখে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা প্রথমে পাথর উত্তোলনের বাঁধা দেয়। তখন শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পাথর উত্তোলন করতে লাগলে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ৩জন পাথর শ্রমিক গুরুত্বর আহত হয়।
এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতা হানিফ মিয়ার বলেন, শ্রমিকরা পেটের দায়ে পাথর তুলতে যায়। প্রতি রাতে বিজিবি ও পুলিশের নামে টাকা দিয়েই পাথর আনতে যায় জাফলং পাথর কোয়ারীর নিরীহ পাথর শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার বাবুল আহমদ এবং এফএস’র সদস্য বাদল মিয়া বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে তামাবিল কোম্পানি কমান্ডার হুমায়ন কবির জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি কিন্তু বিস্তারিত জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে যোগাযোগ করলে ভালো হবে।
বক্তব্যের জন্য বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের ব্যবহৃত মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, সীমান্তে পাথর উত্তোলনকালে বিএসএফ কর্তৃক গুলি বর্ষণের খবর শুনেছি। তবে আহতদের কোন তথ্য আমার কাছে নেই।