পাবনার চাটমোহরের হাট-বাজারে ব্যাপারীদের বেধে দেওয়া দামে রসুন বিক্রি করছেন চাষীরা। শস্যভান্ডার বলে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলায় বিনাহালে রসুন আবাদ করে চাষীরা আশাতীত ফলন পেয়েছে।
চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলের হাট-বাজারগুলো এখন নতুন রসুনে সয়লাব। কিন্তু হাসি নেই রসুন চাষীদের মুখে। ফলনে সন্তুষ্ঠ হলেও দাম নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। চাষীদের অভিযোগ লাভ তো দূরে থাক,বীজ,কামলা,জমির মূল্য,সার ও সেচের খরচই উঠছেনা।
বাজারে রসুন নিয়ে আসামাত্র ব্যাপারীরা যে দাম বলছে,সেই দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, বড়াইগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে, অটোভ্যািন, করিমন, নসিমন, মিনি ট্রলিতে করে রসুন নিয়ে বাজারে আসছেন চাষীরা।
ব্যাপারীদের দামে বিক্রি করে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কারণ রসুন বিক্রি না করলে শ্রমিকের মজুরী পরিশোধ করার পাশাপাশি সাংসারিক খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
কয়েক বছরের সাফল্যের পর এবারও ব্যাপকহারে বিনাহালে রসুনের আবাদ হয়েছে এ উপজেলায়। এ অঞ্চলের ‘সাদা সোনা’ বলে খ্যাত মসলা জাতীয় ফসল রসুন এখন অন্যতম অর্ধকরী ফসল। চাষীরা জানালেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার রোগ বালাই কম ছিল,ফলে রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে রসুনের দাম নেই।
চলতি মৌসুমে চাটমোহর উপজেলায় ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি বিনাহালে রসুনের আবাদ হয়েছিল। প্রতিবিঘা জমিতে ৩৫ থেকে ৪০ মণ ফলন হয়েছে। প্রতিমণ রসুনের বর্তমান বাজার মূল্য ৯শত থেকে ১ হাজার টাকা।
উপজেলার ছাইকোলা গ্রামের রসুন চাষী আঃ মজিদ জানান,এবার আবাদে খরচ একটু বেশী। বিঘাপ্রতি ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন ৩৫ মণ। তার বর্তমান বাজার দর ৩০/৩৫ হাজার টাকা। এতে লাভ হচ্ছেনা।
ধানকুনিয়া গ্রামের রসুন চাষী আঃ গণি জানান,এখন অনেকেই শ্রমিক খরচ ও সাংসারিক খরচের জন্য কম দামে রসুন বিক্রি করছে। যখন দাম বাড়বে,তখন চাষীর ঢ়রে রসুন থাকবেনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এ মাসুমবিল্লাহ জানান,রসুন আবাদে লাভ হওয়ায় কৃষক এই ফসল আবাদে ঝুঁকছে। বাজার দরও এখন কম হলেও কিছুদিন পর দাম আরো বাড়বে। এ অঞ্চলের রসুন দেশের অনেকটা চাহিদা পূরণ করছে।