কুড়িগ্রামে ২ সপ্তাহের টানা বৃষ্টির কারনে কৃষকের জমিতেই গম পচে গেছে এবং সেই গম থেকে চারাগাছ বের হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে এখানকার কৃষক।
গম চাষে লাভতো দুরের কথা খরচের টাকা তুলতে না পারায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন তারা। অপর দিকে টানা বৃষ্টিতে গম শুকাতে না পেরে পাইকারি ব্যবসায়ীরা গম কিনে বিপাকে পড়েছে।
কিন্তু অসময়ে প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে লাগাতার বৃষ্টির কারনে কৃষকরা গম কাটতে না পারায় ক্ষেতেই গম থেকে চারাগাছ উৎপন্ন হওয়ায় চাষিরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় ৭ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে।
উপজেলার চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আব্দুল জলিল জানান,তিনি প্রায় সাড়ে ৮ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন।
এরমধ্যে ২বিঘা জমির গম কেটেছেন। ২ বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ৩৬ মণ গম। লাগাতার বৃষ্টির কারণে অবশিষ্ট জমির গম কাটতে নাপারায় জমিতেই গমের চারা গজিয়েছে এবং যে সমস্ত গমের চারা গজায়নি সেগুলো পচে গেছে।
তিনি বলেন, সার, পানি ও বীজ বাকীতে নেয়া হয়েছে। গম বিক্রি করে বাকী পরিশোধ করার কথা থাকলেও এখন তিনি দেনা পরিশোধ নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছেন। একই গ্রামের শহিদুল আলম জানান, তিনি গম কেটে ক্ষেতে শুকানোর জন্য আটি বেধে রেখে ছিলেন।
অতিবৃষ্টির কারনে গমের আটি থেকে চারাগাছ বের হওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন। ইসলামপুর গ্রামের মিজান শিকদার, আবুল হোসেন, দক্ষিন তিলাই গ্রামের আব্দুর রহমান, একাব্বর আলী সহ অনেক কৃষকের একই অবস্থা। তারা জানান, এইউনিয়নে প্রায় শতাধিক কৃষকের জমির গম নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা দুঃচিন্তায় পড়েছেন।
গমের পাইকারি ব্যবসায়ী আমজাদ ও হাফিজুর রহমান জানান, প্রতিমণ গম ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা দরে প্রায় দেড় হাজার মণ কাচা গম কিনে গোডাউনে রাখা আছে।
গত ২ সপ্তাহের লাগাতার বৃষ্টিতে গম গুলো রোদে শুকাতে না পারায় গম জমাট বেধে পোকা ধরেছে। কিছু গম পচে গেছে। এতে লাভ তো দ‚রের কথা আসল তুলতে পারবো কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলার বেশিরভাগ গম কাটা হয়েছে। কিছু গম কাটতে বিলম্ব হওয়ায় বৃষ্টির কারণে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানান, কুড়িগ্রামে গত কয়েক দিনে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তাদে গমের ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ারি কথা। কারন গম কাটা শেষের দিকে। তবে বৃষ্টির কারনে বোরো, ভুট্টা, পিঁয়াজ ও চিনার কিছু ক্ষতি হয়েছে।