কলেজ ক্যাম্পাসে ধূমপান, পেশাগত দায়িত্ব পালন না করে চাকুরি বিধি ভঙ্গ করা, শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ন পাঠদানের সময় অনুপস্থিতি, শিক্ষাভিত্তিক আলোচনা এরিয়ে কলেজ চত্বরে রাজনৈতিক চর্চা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে সহকর্মীর বিরুদ্ধে অন্য সহকর্মীকে উত্তেজনায় প্রভাবিত করা ও প্রতিষ্ঠান জুড়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে অলোচনায় থাকার অভিযোগ রয়েছে অনেক। শুধু তাই নয়, সরকার বিরোধী কঠোর আলোচনার মুখপাত্র এবং চিহ্নিত বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেও বেশ আধিক্যেতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে কলেজ শিক্ষক আবুল কালামের বিরুদ্ধে। তবে এতোকিছুর পরেও আলোচিত এই কলেজ শিক্ষককেই এবার ঐতিহ্যবাহী কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজ’র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন উচ্চ পর্যায়ের কর্তারা।
গত ১৭ অক্টোবর মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নির্দেশ প্রদান করা হয়। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক মহল জুড়ে এখন চলছে সমালোচনার ঝড়। তারা বলছেন, বিতর্কিত এই কলেজ শিক্ষককে জেষ্ঠ পদে আশিন করতে যে সুপারিশ করা হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে নিঃসন্দেহে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়বে। এমনকি নতুন করে এই প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙখলা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারনে রয়েছেন আলোচনার শীর্ষে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানিকভাবে একাধিকবার কারণ দর্শানো এবং অধ্যক্ষের সাথে অসাদাচারণ’র দায়ে ৪ বছর সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন তিনি। আর এরই মধ্যে কনিষ্ঠ সহাকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ জেষ্ঠতম সহকারী অধ্যপকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রাদানের লক্ষে মাউশি অধিদপ্তরে আবেদন করেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তার মতামতের প্রেক্ষিতে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে এই শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের জন্য ম্যনেজিং কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। আর এতেই ফের শুরু হয় আলোচনার ঝড়।
কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক পুলিন চন্দ্র হাওলাদার জানান, আমাদের এই শিক্ষককে নিয়ে আমারা খুবই ঝামেলায় রয়েছি। তিনি প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা না করে শিক্ষকদের মধ্যে গ্রæপিং সৃষ্টি করছেন। হঠাৎ করে এখন তিনি ভারপ্রাপ্ত পদে আশিন হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, আমি বুঝিনা যে এতোটা বিতর্কিত হওয়ার পরেও তিনি কিভাবে এই পদের জন্য দাবী করেন। যে কিনা বিভন্ন অপরাধে ১১ সাল থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত বরখাস্ত ছিলেন তার কর্মকান্ডের জন্য। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু তিনি ফের কলেজটির উন্নয়ন এবং শিক্ষাকার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।
কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হুমায়ূন কবির জানান, সম্প্রতি পাঠদান চলাকালীন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধূমপানের অভিযোগ দিয়েছিল ছাত্রীরা। পরে তাকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। আর অফিশিয়াল ভাবে আমি মাউশি অধিদপ্তরের কোন চিঠি পাইনি। পেলে অবশ্যই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করবো।
এবিষয়ে কলাপাড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম জানান, বাংলাদেশ বে-সরকারী কলেজ অধিদপ্তরের যে পরিপত্র রয়েছে সে নিয়মানুযায়ী আমি সঠিক অবস্থানে রয়েছি। আর উর্ধতন কর্তৃপক্ষ যে সিন্ধান্ত গ্রহন করবেন তাতে আমি শ্রদ্ধা জানাই। তবে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস জানান, আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং বরখাস্ত থাকার বিষয়গুলো আমাদের জানা নেই। তবে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন করে নির্দেশ প্রদান করা হবে।
তবে এসব অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে কলেজ শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এসব ষড়যন্ত্র করছেন। আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।