আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) মধ্য রাতে শেষ হবে বঙ্গোপসাগরে প্রজনন মৌসুমের ৬৫ দিনের মৎস্য অবরোধ। দীর্ঘদিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার পর ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে সমুদ্রে যাবে জেলেরা। সরগরম হয়ে উঠেছে জেলে পল্লী ও মৎস্যবন্দর গুলো। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর সহ কুয়াকাটা সমুদ্র উপকুলীয় এলাকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও জেলে পল্লী গুলোতে কর্ম-তৎপড়তা ফিরে আসতে শুরু করেছে।
বরফকল গুলোতে বরফ উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু করেছে । মহামারী করোনাভাইরাস ও সমুদ্রে ৬৫ দিনের অবরোধের কারণে কষ্টে জীবন যাপন করা জেলেদের মুখে হাসি ফুটে ওঠেছে। সমুদ্রে ফিরে গিয়ে ইলিশ শিকার করে নিয়ে আসবে তীরে এমন আশা নিয়ে সমুদ্রে যাবে জেলেরা। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মৎস্য আড়ৎগুলোতে নতুন করে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে কর্মব্যস্ত হয়ে পরেছে মৎস্যজীবিরা। মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটাসহ সমুদ্র উপকুলের জেলে পল্লী গুলো আবার দীর্ঘ সময় পর সরগরম হয়ে ওঠেছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে যাওয়া ট্রলার গুলোতে জাল, গেড়াফি, তৈল ও খাদ্যসামগ্রীসহ মৎস্য উপকরণ বোঝাই করে অপেক্ষা করছে ট্রলারগুলো। অপেক্ষা করছে জেলেরা কখন শেষ হবে সময় আজ মধ্যরাতে বন্দর ছেড়ে সমুদ্রের উদ্যেশ্যে যাবে মাছ শিকারে।
গভীর সমুদ্রের ইলিশ শিকারী কুয়াকাটার জেলে মোশাররফ মাঝি বলেন, অবরোধের সময়সীমা যতই ঘনিয়ে এসেছে ততই অপেক্ষার বাধঁও ভেঙ্গে যাচ্ছিলো কখন সমুদ্রে যাবো। কখন ইলিশ ধরে নিয়ে এসে বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের মুখে হাসি ফুটাবো। ১৫দিন আগেই তারা জাল ও ট্রলার মেরামত শেষে মৎস্য উপকরণ বোঝাই করে সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করছে। অবরোধ শেষ শুক্রবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতেই ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন তারা। আরও বলেন, অবরোধকালীণ সময়ে সরকার বিশেষ প্রনোদণার চাল দিলেও তাতে তাদের সংসার চলছে না। তার দাবী অবরোধকালীন সময়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেদের জন্য বিকল্প কর্ম-সংস্থানের ব্যবস্থা করার।
কুয়াকাটা আশার আলো জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি মো: নিজাম শেখ বলেন, প্রজনন মৌসুমের ৬৫দিন অবরোধ শেষে জেলেরা ২৩ জুলাই মধ্যে রাতে সমুদ্রে ইলিশ শিকারে রওয়ানা হয়ে যাবে। অবরোধের ৬৫দিন জেলেরা অনেক কষ্টে জীবণযাপন করেছেন। নিজাম শেখ বলেন, ৬৫দিনে ৫৬ কেজি চাল দিয়ে জেলেদের সংসার জীবন চলে না। প্রজনন মৌসুম ও ঝাটকা মৌসুমের জন্য রেশণ কার্ড চালুর দাবী জানান। আরও বলেন, সমুদ্রে ঝুকিঁ নিয়ে মাছ শিকারের মাধ্যমে দেশের মৎস্য চাহিদা পুরণ করে আসছে জেলেরা। অথচ জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে ঝড় কিংবা জ্বলোচ্ছাসে সমুদ্রে ডুবে মারা যাবার পর তাদের পরিবারকে খাবারের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। তাই তিনি নিবন্ধন কৃত জেলেদের জন্য ঝুকিঁ ভাতা চালুর জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান।
এবিষয়ে কলাপাড়া মৎস্য কর্মকর্তা অপু শাহা বলেন, সরকারের নির্দেশক্রমে ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হবে। ২৩ জুলাই আজ মধ্য রাতে। অবরোকালীন সময় কলাপাড়া উপজেলায় ১৮হাজার ৩’শত পাঁচ জন নিবন্ধনকৃত জেলেদের মাঝে ৫৬ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী জেলেদের জালে এবছর প্রচুর বড় ইলিশ মাছ ধরা পড়বে।