অত্যন্ত অনাদর আর অবহেলায় জন্মে এবং বেড়ে ওঠা বনজুঁই বা ভাটফুল সহজেই মানুষের নজর কাড়ে। ঋতুরাজ বসন্তের শুরু থেকেই ঝোপ-ঝাড়ে, জঙ্গলে, রাস্তার ধারে, এখানে-সেখানে নিজের সুন্দর রূপ ছড়িয়ে থাকে ভাটি ফুল।
স্থানভেদে এটির নাম ভাটফুল, ঘেটু ফুল, ভাত ফুল, ঘণ্টাকর্ণ থাকলেও রাজবাড়ী অঞ্চলে ‘ভাটফুল’ নামেই পরিচিত। সনাতন ধর্মালম্বীরা ভাটি পূজায় এই ফুল ব্যবহার করে থাকে।
এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্লোরোডেনড্রাম ভিসকোসাম. ভারবেনাসেই গণের এই ফুল ল্যামিয়াসেই পরিবারভুক্ত। এটি ইনফরচুনাটাম প্রজাতির এবং বাংলাদেশের আদি ফুল।
ভাটিফুল দেশজ গুল্মজাতীয় বুনোফুল। ছোট আকৃতির নরম শাখা প্রশাখা বিশিষ্ট ঝোপ জাতীয় গাছে তোড়ার মতো ভাটফুল ফোটে। ফুলের রং সাদা। পাঁচটি পাপড়ি। প্রতিটি ফুলের অভ্যন্তরে বেগুনি রঙের ঢেউ যেন ব্রাশ দিয়ে টেনে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে সাদা বেশ দীর্ঘ কয়েকটি মঞ্জরি। রাতে ভাটফুল গন্ধ ছড়ায়।
ভাটফুল ঔষধি উদ্ভিদ। এর পাতা কবিরাজরা অ্যাজমা, টিউমার, সাপের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা জ্বর, চর্মরোগ ও বিছার হুল ফোটানোতে এর পাতা, ফল, ফুল ও মূল ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের সর্বত্রই ভাটফুলের কম বেশী দেখা মেলে । তবে অচাষকৃত বহু বিলুপ্ত উদ্ভিদের মতোন ভাটফুলও বিলুপ্তির দিকে।