রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে এ জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় রাজবাড়ীর তিনটি গেজ স্টেশন পয়েন্টের মধ্যে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও পাংশা উপজেলার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মাহেন্দ্রপুর পয়েন্টে পানি কমতে থাকলেও সবগুলো পয়েন্টেই বিপদসীমার ওপরে রয়েছে।
পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন, গোয়ালন্দ উপজেলার ৪টি, কালুখালী উপজেলার ২টি, বালিয়াকান্দি উপজেলার ১টি এবং পাংশা উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষ। একই সঙ্গে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট। নষ্ট হয়েছে বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি ক্ষেত।
রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়িয়া চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, এখানের প্রায় ৪হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বেশ কয়েকটি রাস্তা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
কালুখালির রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসিনা পারভীন নিলুফা বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রতিবছর বন্যায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যেই সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে জেলায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সহায়তা করা হবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল আহাদ বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২/৩দিন পানি বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি আবার কমতে শুরু করবে। পানি কমলেও নদী ভাঙনের আশংকা করা যাচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক বলেন, এ বছর বড় ধরণের বন্যার কোন আশংকা নেই। আগামী সপ্তাহ থেকে পানি কমতে শুরু করবে। তবে এখন পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় নিম্নাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের পাশের নিচু এলাকা গুলোই পানি উঠেছে। এতে জেলার কয়েকটি গ্রামের ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। বন্যায় জেলার ১৩টি ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এ সকল পানি বন্দি পরিবারের জন্য ৩০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবং জরুরী সেবা ৩৩৩ নম্বরে কেউ ফোন দিলেও তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।