আনোয়ারুল ইসলাম (আনোয়ার)রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীতে ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীদের পাওনা বকেয়া কোটি কোটি টাকা দ্রুত সময়ে পরিশোদের অনুরোধ করেছেন পাট ব্যবসায়ী সমিতি। বিগত কয়েক বছর ধরে বিজেএমসির তত্বাবধানে ২৫টি জুট মিলের কাছে পাট বাকিতে পাট বিক্রি করে আসছেন রাজবাড়ীর ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীরা।কিন্তু ৪ থেকে ৫ বছর ধরে তাদের পাওনা বকেয়া টাকা না পাওয়ার কারনে বর্তমানে ব্যবসায়ীরা হতাশা ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিজেএমসির কাছে টাকা আটকে থাকার কারনে একদিকে ব্যবসা বন্ধ অন্যদিকে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে পরেছেন মারাত্বক ভাবে অর্থ সংকটে। দ্রুত সময়ে পাওনা টাকা আদায়ে রাজবাড়ী পাট ব্যবসায়ী সমিতি জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধ ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
রাজবাড়ীর ৫টি উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী বাজার খানখানাপুর, বহরপুর,পাংশা,বালিয়াকান্দি,কালুখালী জামালপুর ও গোয়ালন্দ পাট বিক্রয়ের অন্যতম বাজার। এই বাজার গুলোতে রয়েছে বিজেএমসির ২৫টি সরকারী জুট মিলের পাট ক্রয়ের প্রতিনিধিদের ঘর। পাটের ক্রয়ের এই বাজার গুলো থেকে ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ ৫ বছর রাজবাড়ীর প্রায় আড়াইশত থেকে তিন শত ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী পাটের মৌসুমে বিভিন্ন ক্রেতাদের নিকট থেকে বাকি এবং নগদে পাট ক্রয় করে তা বিজেএমসিএর নিয়ন্ত্রনাধিীন বিভিন্ন জুট মিলে বাকিতে পাট বিক্রয় করেছেন। অথচ আজ পর্যন্ত এ পাট ব্যবসায়ীরা সরকারী এসব জুটমিল থেকে কোন টাকা পাননি। টাকা না পেয়ে তারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জর্জরিত হচ্ছেন মামলা ও অর্থ কষ্টে। বিভিন্ন অংকে এসব ব্যবসায়ীরা প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা পান বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন বা বিজেএমসি’র কাছে। একদিকে তাদের ব্যবসা বনিজ্য বন্ধ রয়েছে অন্যদিকে তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে পরেছেন বিপাকে। সংসারের খরচ চালাতে তাদের এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্যাংক ঋন নিয়ে ও যাদের কাছ থেকে বাকিতে পাট ক্রয় করেছেন তারা এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে টাকা না পাওয়ায় মামলা করেছেন। এখন তারা মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেরাচ্ছেন যেখানে সেখানে। অথচ সরকারী জুট মিল গুলো তাদের পাওনা প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা আটকে রাখার কারনে বর্তমানে ক্ষুদ্র এ ব্যবসায়ীরা পাটের মৌসুমে ব্যবসা বানিজ্য করতে পারছেন না। সরকারী পাট ক্রয়ের জন্য বাজারে যে ঘর গুলো রয়েছে তা এখন তালাবদ্ধ ভাবে পড়ে রয়েছে অযত্নে। ব্যবহার না হওয়ার কারনে নষ্ট হচ্ছে এই পাট ক্রয়ের ঘর ও পাট বাঁধাই বা বেল্ট করার মেশিন ও যন্ত্রপাতি গুলো। অনেকের পাট ক্রয়ের ঘর ভেঙ্গে পরছে ব্যবহার না হওয়া ও অযত্নে পরে থাকার কারনে। আর কয়েক দিন পর পাট ক্রয়ের সময় অথচ অর্থো অভাবে তারা কিভাবে পাট ক্রয় করবেন এবং ব্যবসা চালাবেন তা নিয়ে পরেছেন চিন্তায়।ব্যবসায়ীরা বলেন, ৪ থেকে ৫ বছর ধরে তারা বিজেএমসির বিভিন্ন জুট মিলে বাকিতে পাট বিক্রি করেছেন। প্রত্যেকে ব্যবসায়ী লক্ষ লক্ষ টাকা জুট মিল গুলোতে আটকে আছে। এই টাকা না পাওয়ার কারনে এখন তরা ব্যবসা বানিজ্য করতে পারছেন। ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে পাট এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাকিতে পাট ক্রয় করে এখন তারা ঋন ও বকেয়া পরিশোধ করতে না পেরে মামলায় জর্জরি হচ্ছেন। এই দুর্দিনে তাদের জীবন যাপন কষ্টদায়ক হয়ে পরেছে। তাই প্রধান মন্ত্রীর কাছে বিজেএমসির কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সরকারের কাছে তাদের দাবী রাজবাড়ীর সব ব্যবসায়ীদের সমস্ত পাওনা টাকা দ্রুত সময়ে পরিশোধ করতে অনুরোধ জানান।
রাজবাড়ী পাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কার্ত্তিক কুন্ডু ও সাধারন সম্পাদক লুৎফর রহমান বাবু বলেন,২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিজেএমসি’র কাছে পাট বিক্রির ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা আটকে আছে। এ টাকা আজ ৫টি বছর হতে চল্লেও কতৃপক্ষ তাদের পাওনা পরিশোধ করছেনা। এতে তাদের পাটের ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছেন তারা।ব্যাংকর লোন ও ব্যবসায়ীরা টাকা না পাওয়ায় মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচেছন। এ টাকা দ্রুত সময়ে পাওয়ার জন্যে প্রধান মন্ত্রী ও সরকারের নিতি নির্ধারকদের কাছে অনুরোধ করেছেন জেলা পাট ব্যবসায়ী সমিতি এ নেতারা।দিলসাদ বেগম জেলা প্রশাসন রাজবাড়ী তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সাথে জুট মিলের যে লেনদেন এর মাঝে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকেনা। ব্যবসায়ীরা যদি স্মারক লিপি দিয়ে থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে স্মারকলিপি বা আবেদন দেখে তিনি তা কতৃপক্ষের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। এ ব্যবসায়ীদের জন্যে যদি পজেটিভ কিছু করার থাকে তিনি তার পক্ষ থেকে করবেন বলে জানান।
এই বিভাগের আরও খবর....