রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের মেম্বার মাসুদ সহ একাধিক মেম্বার ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের পাকা ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রীর উপহারে ঘরে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে নবাবপুর ইউনিয়নে। এছাড়াও ভি,জি,এফ কার্ড এর মালিকে বছরের পর বছর কার্ড না দিয়ে মেম্বার নিজেই আত্নসাত করেছে বলেও জানা যায়।
ওই ইউনিয়নের এক জন প্রভাবশালী ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদ এই সকল অপকর্ম করে চলেছে।দিলালপুর গ্রামের এক জন বৃদ্ধ অসহায় মহিলা বলেন আমার একটা ভাঙা ছাপড়া আছে সেটায় এখন আর থাকা যায় না। আমি মেম্বার মাসুদ কে একটা সরকারি ঘর দিতে বলি। কিন্তু মাসুদ মেম্বার বলে ২০ হাজার টাকা লাগবে ঘর পেতে। আমি দিতে না পারায় ঘর পেলাম না।
সে আরও বলেন, পাশের বাড়ির জাকির ১৫ হাজার টাকা দিছে বলে সে ঘর পাইছে। তবে জাকিরের বউ বলে, মিথ্যা কথা বলবো না আমরা ৫ হাজার টাকা, ৪ বস্তা সিমেন্ট ও ১ শত ইট কিনে দিছি মাসুদ মেম্বার কে৷
মাসুদ মেম্বারের নামে অভিযোগ তুলেছে হাবিবর শেখের স্ত্রী, সে বলেন ভি জি এফ এর কার্ড আমার স্বামীর নামে করে দীর্ঘ ৪ বছর ৬ মাস চাল তুলে খাইছে সে। পরে আমরা জেনে গেলে ইউএনও অফিসে আমাদের ডাকা হলে আমরা যাই।অফিস থেকে আমার স্বামীকে বলে আপনার নামে কি ভি জি এফ এর কার্ড আছে,সে জানিয়ে দেন নাই। পরে কি হইছে জানি না তবে এলাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি মাসুদ আমার স্বামীকে মারবে। পরে চেয়ারম্যানের কাছে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে গেলে মেম্বারের উপর রাগারাগি করে চেয়ারম্যান। পরে মাসুদ আমার স্বামীকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে হেনস্তা করে।
এ ছাড়াও ইউপি সদস্য কাবিল ও বাবুর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কাবিল মেম্বার ২০ হাজার করে টাকা নিয়েছে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে, কিন্তু আজও আমরা সেই ঘরের দেখা পেলাম না।
ভুক্তভোগী পদমদী ঠাকুর পাড়া গ্রামের খলিল সিকদার জানান, চার বছর পূর্বে আমার কাছ থেকে দুই কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা নিলেও আমি কোন ঘর পাইনি এবং টাকা ফেরত পাইনি।
একই গ্রামের ভুক্তভোগী পঙ্গু জাকির ও তার স্ত্রী জানান, আমাদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে কিন্তু আমরা ঘর পাইনি। পরবর্তীতে আমি টাকা চাইতে গেলে প্রায় ছয়-সাত মাস পর আমাকে ১২ হাজার টাকা দেয় আবার দুই মাস পরে আরও ৪ হাজার টাকা দেয়, মোট আমাকে ১৬ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা আজও পায়নি।
একই গ্রামের ভুক্তভোগী ওবায়দুলের মা জানান, আমাদের কাছ থেকে ঘর দেয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিল। কিন্তু ঘর দিতে না পারায় আমাদের টাকা আবার চার-পাচ মাস পরে ফেরত দিয়ে দেয়।
মাসুদ মেম্বারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিছিভ করেন নাই।
ইউপি সদস্য কাবিল হোসেন জানান, আমাদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আলীর কথামতো টাকা নিয়ে ছিলাম ১৮-১৯ জনের কাছ থেকে এবং আমি পরবর্তীতে টাকা দিয়েও দিয়েছি। তিনি আরো জানান শুধু আমি না আমার ইউনিয়নের প্রতিটা মেম্বারই সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে এবং আবার টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছে।যদিও ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা অরসিকার করেছে।
অন্য ইউপি সদস্য বাবু বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা। আর কিছু দিন পর নির্বাচন এই জন্য আমার বিরুদ্ধে স্বরযন্ত্র মূলক অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয় নিয়ে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আলী বলেন, আমি এই টাকার বিষয়ে কিছুই জানিনা, আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারলাম।আমার মেম্বারা যদি এমন কাজ করে থাকে তবে অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।