অধ্যাদেশে আটকে আছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল। পরীক্ষা না নিয়ে আগের ফলের ভিত্তিতে ফল দেয়ার সিদ্ধান্তে সৃষ্টি হয় আইনি ৪ জটিলতা।
এ অবস্থা নিরসনে অধ্যাদেশ জারি করে এবারের পরীক্ষার্থীদের ফল দেয়া হবে। যা এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শুরু হয়েছে মোবাইল ফোন নম্বরের প্রাক-নিবন্ধন।
জানা গেছে, অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ৪ জানুয়ারির বৈঠকটি হয়নি। এখন ১১ জানুয়ারি বৈঠক হলে সেখানে অধ্যাদেশটি অনুমোদন দেয়ার সম্ভাবনা আছে।
এরপর এটি জারির প্রক্রিয়া শুরু হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ফল প্রকাশের লক্ষ্যে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ফল প্রকাশের লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম চলছে।
অধ্যাদেশ জারির প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত আছে। অধ্যাদেশ জারির ২-৩ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হতে বলে আশা রাখছি।
এদিকে এসএসসি-এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার ফলের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরের রেওয়াজ আছে। কিন্তু এবারের ফলের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা তা এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি।
এ ধরনের প্রক্রিয়ায় ফল প্রকাশের ১০-১২ দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইল উপস্থাপন হয়ে থাকে। এরপর নির্ধারিত দিনে বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ফলের সার-সংক্ষেপ তুলে দেন। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে মন্ত্রণালয়ের নীতি-নির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, এইচএসসি ও সমমানের ফল তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির গঠিত কারিগরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি করা নীতিমালার ভিত্তিতে এ ফল প্রণীত হয়েছে। ফল যেই পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে সেগুলোই অধ্যাদেশে বিধি আকারে স্থান পাচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, কমিটির গাইড এবং বিভিন্ন ধরনের ছাত্রছাত্রীর বৈশিষ্ট্য ও ইতঃপূর্বে ঘোষিত গ্রেড তৈরির মানদণ্ড অনুযায়ী ডাটা পর্যালোচনা ফল তৈরি করা হচ্ছে। বলতে গেলে কাজ শেষ।
এখন অধ্যাদেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফল দ্রুত প্রস্তুত হবে। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ আমলে নিয়ে সমতা আর ন্যায্যতার আলোকে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। এরপর সেটার ভিত্তিতে বিভিন্ন বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেড সংগ্রহ করেছেন।
৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একইদিন তিনি জানান, জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে এ পরীক্ষার্থীর ছাত্রছাত্রীদের গ্রেড দেয়া হবে।
পরে ২৫ নভেম্বর আরেক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। মাধ্যমিকের ফলের ওপর ৭৫ শতাংশ এবং নিু মাধ্যমিকের ফলের ওপর ২৫ শতাংশ গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হবে শিক্ষার্থীর গ্রেড।
প্রাক-নিবন্ধন : এদিকে ফল প্রকাশের দিন ঘরে বসেই তা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটক এ সেবা দেবে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রাক-নিবন্ধন করতে বলেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, নিবন্ধন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে ঐঝঈ লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডর নাম, রোল লিখে স্পেস দিয়ে ২০২০ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।