লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট কর্ণপুরের ইটভাটার গ্যাসে কৃষকদের আবাদি জমির ফসল পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ২ শতাধিক স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ২ ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে কৃষকরা তাদের ফসলের ক্ষতি পূরণের দাবিতে মোগলহাট-লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করে।
এর আগে শনিবার রাতে উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের জিরামপুর গ্রামের টুস্টার ইটভাটায় গ্যাস দিয়ে ইট পড়ানোর সময় উক্ত গ্যাস বাতাসের কারণে উত্তর দিকে প্রবাহিত হওয়ায় কৃষকের অনেক আবাদি জমির ধান ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা রবিবার সকালে উক্ত আবাদি জমির ফসলের ক্ষতিপূরণের দাবিতে লালমনিরহাট-মোগলহাট সড়কের জিরামপুর এলাকায় ব্যারিকেড দেয় এসময় প্রায় ২ শতাধিক কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় কৃষক মাহমুদুল জানান, আমাদের আবাদি জমির দুইদিকে দুইটি ভাটার কারণে বরাবরই আমারা ক্ষতিগ্রস্থ হই। এবারে আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি।
ঐ জমির ফসল দিয়েই আমার সারাবছর খাবার যোগান হয়। কিন্তু ভাটার গ্যাসের কারণে আমার সব ফসল জমিতেই পুড়ে গেলো। ধান ছাড়াও আমাদের এলাকার ভুট্টা, গাছ,বাশসহ সকল ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ দিবো প্রস্তুতি চলছে।
কৃষক মেহের আলী বলেন,আমার ৫ সদস্যের পরিবার। আমি এক একর জমির ধান দিয়ে সারাবছর খাবার যোগাই।এটাই আমার একমাত্র আয়ের জায়গা।এখন আমি কি করবো আমার স্বপ্ন ক্ষেতেই পুড়ে গেলো।শুধু আমি নই এই এলাকার শতাধিক কৃষকের স্বপ্নের ফসল এই ভাটার গ্যাসে নষ্ট হয়ে গেছে।
এছাড়া কৃষক মিরাজ, কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক, কৃষক ফজলু,কৃষক ফজলার রহমানসহ শতাধিক কৃষকদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তাদের দাবি দ্রুত পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ ও পরবর্তীতে এমনটা যেন আর ঘটে তার স্থায়ী সমাধান কার হোক।
পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও মোগলহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইটভাটার বর্তমান কার্যক্রম বন্ধ এবং কৃষকের আবাদি জমির ক্ষয়ক্ষতির ক্ষতিপূরণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কৃষকরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। বর্তমান সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা মাসুম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করা হবে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
ঐ ইটভাটার কাউকে খুজে পাই নি।তবে একজন কর্মচারী ছিলো আমরা দ্রুত ভাটার সকল কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছি। ভাটাটি অবৈধ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।