মুজিব শতবর্ষে ‘থাকবে না কেউ গৃহহীন’ অঙ্গীকারকে উপজীব্য করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গৃহহীন, দুঃস্থ, অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্ত ৪৫০ পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের লাল টিনের ঘর। বিনামমূল্যে প্রদানকৃত দুই শতক জমির উপর নির্মিত ঘরটি আধুনিক ডিজাইন সম্পন্ন সেমিপাকা। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুটো বেডরুম, একটি রান্না ঘর, একটি বাথরুম এবং প্রশস্ত বারান্দা। ঘরের উপর লাগানো হয়েছে উন্নতমানের রঙ্গীন টিন। শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উদ্ভোধনী দিনে ২৩৫ পরিবারকে দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার অসহায় এ পরিবারগুলো ঘরের দলিল হাতে পেয়ে খুশি ও আনন্দিত। তারা এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হকের সভাপতিত্বে ঘরের দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামীগের সভাপতি আলহাজ¦ মাহবুবুর রহমান তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসান, পৌরমেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভীন সীমা।
এছাড়া অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখে কলাপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি হুমায়ূন কবির, মহিপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম, উপকারভোগী খুশি আক্তার লায়লা ও রুবিনা।
এ সময় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, গনমাধ্যমকর্মী ও উপকারভোগী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্স’র মাধ্যে সারা এ ঘরের উদ্বোধন করেন।
ঘরের দলিল হাতে পেয়ে খুশি আক্তার লায়লা আবেগআপ্লুত হয়ে বলেন, এক সময় অসহায় ছিলামনা। ভাগ্যক্রমে অসহায় হয়ে পরেছি। স্বামীর বাড়িতে স্থান না হওয়ায় ২০০৭ সালে বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নেই। সেখানেই বসবাস শুরু করি। আয়ের জন্য বেঁচে নেই হাঁস পালন। মেয়ে আদুরীকে নিয়ে খুব স্বাচ্ছন্দে চলছিল ছোট্ট একটি সংসার। হঠাৎ করে গত ঈদের আগের রাতে আমার বসত ঘরটি অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘরটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল পৃথিবীতে আমার চেয়ে অসহায় আর কেউ ছিলনা। কোনোদিন কল্পনা করতে পারিনি আমি পাকা ঘর পাবো। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপহার সেমিপাকা ঘর পেয়ে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। দোয়া করি আল্লাহতায়ালা যেন প্রধান মন্ত্রীকে সুস্থ রাখেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলার গৃহহীন, দুঃস্থ্য, অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্ত ৪৫০ টি সেমি পাকা ঘর পাবে। উদ্ভোধনী দিনে ২৩৫ পরিবারকে দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে।