বাঘা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আলোচিত শর্মিঠা রানী আত্বহত্যা প্ররোচনা মামলার ১ নং আসামি স্কুল শিক্ষক সুকান্ত সাহাকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলার নারায়পুর বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই মামলার দ্বিতীয় আসামি শর্মিঠার দেবর সোমেন শাহা বর্তমানে প্রবাসে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর বাঘা উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সুকান্ত সাহা (৩২) এর ঘরে গলায় ওড়না বেধে আত্বহত্যা করে তার স্ত্রী শর্মিঠা রানী। এ ঘটনার এক মাস ১০ দিন পর স্বামী, দেবর এবং শাশুড়িসহ তিনজনকে আসামি করে আদালতে আত্বহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করেন শর্মিঠার বাবা সুনীল কুমার সাহা।
মামলার দুইমাস পর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে শরীরে তিন জায়গায় আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়। ফলে বিষয়টি আমলে নিয়ে বাঘা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু থানা পুলিশ রহস্যজনক কারনে এ মামলা বাদির পক্ষে চূড়ান্ত রিপোর্ট না দিয়ে আসামিদের পক্ষে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন।
এরপর শুরু হয় আন্দোলন। রাজশাহী শহরে শর্মিঠার পক্ষে মানববন্ধর থেকে শুরু করে সমাবেশ করে বিভিন্ন মহল। এ নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ ছাপা হয়। এরই মাঝে আদালতে থানা থেকে পাঠানো প্রতিবেদনের বিপক্ষে না রাজি আবেদন করেন শর্মিঠার বাবা।
ফলে আদালত থেকে মামলাটি পুণরায় তদন্তের ভার দেয়া হয় পিবিআইকে। কিন্তু সেখানেও ঘটে নানা বিপত্তি। এরই মাঝে প্রবাসে পাড়ি জমায় এ মামলার দ্বিতীয় আসামি সোমেন সাহা। অতপর এ মামলার দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে। তারা এ বিষয়ে বিস্তর তদন্ত করে বৃহস্পতিবার রাতে মামলার প্রধান আসামি সুকান্ত সাহাকে নারায়নপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার সত্যতা স্বীকার করেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আনেস উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, তিন বছর পূর্বে বাঘা উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা অজিত সাহার ছেলে স্কুলশিক্ষক সুকান্ত সাহার সাথে রাজশাহী শহরের বাসিন্দা সুনীল কুমার সাহার কলেজ (মাস্টার্স) পড়ুয়া মেয়ে শর্মিঠার বিয়ে হয়। এই বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি এবং দেবরের কারণে পারিবারিক কলহে ভুগছিল তার মেয়ে। এ ছাড়াও সুকান্ত যে স্কুলে চাকরি করে সেই প্রতিষ্ঠানে তার ছোট ভাই সোমেন সাহাকে বাদ দিয়ে শশুরের টাকায় শর্মিঠাকে কম্পিউটার বিষয়ে চাকরিতে সুযোগ করে দেওয়ায় পরিবারের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করছিল। এই অশান্তিই এক সময় কালহয় শর্মিঠার জীবনে।