কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,২৪ আগস্ট।
বানভাসি মানুষের কান্নার রোল, অথৈয় পানিতে “গায়ে হলুদ” মহাউৎসব। এ কোন সিনেমার গল্প কিংবা দৃশ্য নয়। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে একটি বাড়ির উঠানে বিয়ের গায়ে হলুদের আয়োজন। চারিদিকে অথৈ পানি, বাড়ির উঠোনে পানি, ঘরের ভিতরে পানি। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার লালুয়া ইউয়িনের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে রবানাবাদ নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে গ্রামীণ মেঠোপথ, কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এক কথায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে পুরো গ্রাম। এমন দুরাবস্থার মধ্যে সম্পন্ন হলো উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের কলাউপাড়া গ্রামের একটি বিয়ের ‘গায়ে হলুদের’ অনুষ্ঠান। আর এ বিয়ে অনুষ্ঠানের ভিডিও নিয়ে রীতিমত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে তোলপাড়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালুয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ফকির গত মাসের ২৯ জুলাই বিয়ে করেন। তাঁর শশুরবাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের গাববুনিয়া গ্রামে। গত ২০ আগষ্ট তিনি নববধূকে নিজ বাড়িতে তুলে আনেন। ২২ আগষ্ট দুপুরে জোয়ারের পানির মধ্যে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। জোয়ারের পানিতে চারদিক যখন থৈ থৈ করছে, তখন তাঁর বাড়ির উঠোনে চেয়ার পেতে বর-কনেকে হলুদ দেয়া হয়। এসময় আত্মীয়স্বজনরা গ্রামীন গানের সাথে অংশ নেয় গায়ে গলুদে। জোয়ারের পানির মধ্যে ব্যতিক্রমী হলুদ দেয়ার আয়োজন সবাইকে আকৃষ্ট করেছে।
মো.মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের সুখ-শান্তি কিছুই নাই। একটি জনপদ সব সময় পানিতে ডুবে থাকে। জীবনকে তো থামিয়ে রাখা যাবেনা। একটু সুখের সাথে কষ্টের চিত্র বহন করে।
মহিউদ্দিনের বাবা আবদুল বারেক ফকির বলেন, উভয় পরিবারে সিধান্ত এ বিয়ে হয়েছে। বিয়ের দিন তারিখ আগেই দেয়া ছিল। আত্মীয় স্বজনরা সাবাই বাড়িতে এসে। বাধ্য এ আয়োজন করতে হয়েছে।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এ ইউনিয়নের মানুষের সুরক্ষার জন্য বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ না থাকায় এখানকার ১২-১৩টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। প্রতিদিন দু’দফা জোয়ারের পানিতে গ্রামের মানুষরা প্লাবিত হচ্ছে।