তুরস্কের হায়া সুফিয়া একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় হায়া সুফিয়া। পশ্চিমা বিশ্বে এটি হাগিয়া সুফিয়া বলা হয়ে থাকে। রোম সম্রাট জাস্টিসিয়ানের সময় ইস্তানবুলে প্রতিষ্ঠিত হয় ।হাজার বছর ধরে এটি ব্রেকঅর্থোডক্স চার্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ।
ওসমানিয়া সম্রাট দ্বিতীয় মোহাম্মদ ফাতেহ ১৪৫৩ সালে খ্রিস্টান দের কাছ থেকে কিনে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। তখন থেকে এটি হায়া সুফিয়া মসজিদ হিসেবে পরিচিত। স্থাপনাটিকে তুর্কিরা হায়া সুফিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বে হাগিয়া সফিয়া বলা হয়। উসমানীয় সাম্রাটগন শত শত বছর ধরে মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করলে ও তৎকালীন তুর্কি প্রেসিডেন্ট কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৭ সালে এটিকে জাদুঘর হিসেবে ঘোষণা করেন।
হায়া সুফিয়া একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটাই বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্বে গ্রিক অর্থোডক্স ও রুশ অর্থোডক্স সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থাপনা। প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এটি দেখতে আসে। আয়া সোফিয়া একটি বিতর্কিত স্থাপনা।ইসলামপন্থী তুর্কি নাগরিকগণ বহু বছর ধরে একে মসজিদে রূপান্তরিত করার দাবি করে আসছিলেন কিন্তু অতীতে ধর্ম নিরপেক্ষ প্রস্তুতি তুর্কি সরকার গন জনগনের আবেগ অপেক্ষাকরে এসেছেন। তুরস্কে পশ্চিমা প্রভাব ও পার্শ্ববর্তী গ্রিসের আপত্তির কারণে এতদিন এটি জাদুঘর হিসেবে পরিচালিত হচ্ছিল। ইসলামপন্থী তুর্কি সরকার সম্প্রতি এটিকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে আজান চালু হয়ে গেছে। ইতিপূর্বে এরদোগান সরকার এটিকে মসজিদ হিসেবে চালু করার কথা জানায় ।এর অংশ হিসেবে তুরস্কের একটি আদালত হায়া সুফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করে। হায়াত সুফিয়াকে মসজিদ ঘোষণা করার সাথে সাথে তুরস্কের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী রাশিয়ার সংঘাত শুরু হয়েছে ।
ইতিমধ্যে রাশিয়া তীব্র নিন্দা করেছে এবং তুরস্ককে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। আয়া সুফিয়া কে কেন মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করা হলো অনেকের মনেই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক ।জাদুঘর ছিল তাই তো ভালোই ছিল ।আমরা অনেকেই বুঝি না প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত শক্তি হিসেবে তুরস্কের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বেরএকটা চুক্তি হয় এবং চুক্তির অংশ হিসেবে কামাল আতাতুর্ক সরকার হায়া সুফিয়াকে জাদুঘর ঘোষণা করে। তুরস্কের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের একটি সমঝোতা চুক্তি হয় ১৯২৩ সালে এবং এটি শেষ হচ্ছে ২০২৩সালে।
বর্তমান বিশ্বে তুরস্ক একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।হায়া সোফিয়াকে মসজিদ ঘোষণা করার বিষয়টি অনেকেই তুরস্কের শক্তিমত্তার একটি জানান দেওয়া হিসেবে দেখছেন।