বাংলাদেশে আঘাত হানতে শুরু করেছে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। ইতোমধ্যে সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের অগ্রবর্তী অংশ আঘাত হানতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আবহাওয়া অফিসে জানিয়েছে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাতের মধ্যে বুলবুল পূর্ণশক্তি নিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
সুন্দরবন অতিক্রম করার পর ঘূর্ণিঝড়ের বেগ অনেক থাকবে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পুরো বাংলাদেশে এর প্রভাব ফেলবে। রংপুর বিভাগে প্রভাব একটু কম থাকলেও সারাদেশেই এর প্রভাব থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক আয়েশা খাতুন বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে।
তিনি জানান, বুলবুল পশ্চিমবঙ্গ হয়ে খুলনা উপকূল অতিক্রম করবে। খুলনা উপকূলে যখন আঘাত হানবে তকণ ঘন্টায় বাতাসের বেগ ১০০-১২০ কিমি থাকবে। তবে উপকূলে আঘার হানার আগেই বুলবুল অনেকখানি শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য সুন্দরবন একটা বাধা বলতে পারেন। এটা হয়তো অনেকটাই রক্ষা করবে। যেহেতু এটা প্রবল ঘূর্ণিঝড়, তারপরও ওইরকম ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে জোয়ারের বা জলোচ্ছ্বাসের সর্বোচ্চ উচ্চতা ২ দশমিক ৮৫ মিটার হতে পারে পশুর নদীতে। পশুর নদী ছাড়াও খুলনা ও বরিশালে যেসব নদীতে জোয়ার থাকবে সেখানে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর দুপুরে সিডর এভাবেই প্রথমে আঘাত হানে এবং বিকাল থেকে তা প্রায় ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে দুবলার চরের জেলে পল্লী গুলো তছনছ করে দেয়। সিডরের মতই বুলবুলের গতি প্রকৃতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর বিশেষ দল।
শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় ও দুর্যোগ পরবর্তী সব প্রকার সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব পদাতিক ডিভিশন। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে।