রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আমোদপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও সভাপতি আলী হোসেনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, চাকুরী দেয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণাসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ জুন ( বুধবার) সকাল ১০ টায় বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ভূক্তভুগীসহ এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য রবিউল ইসলাম,আসকান আলী, আমিরুল ইসলাম বাজু বাঘা ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম,সাবেক ছাত্রনেতা শিমুল আহমেদ,চাকরি নেয়ার জন্য টাকা দিয়ে প্রতারিত মিলন হোসেন, প্রার্থী শিল্পী খাতুন। এ সময় এলাকার প্রায় তিন শতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা মানববন্ধনে অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও সভাপতি আলী হোসেন গোপনে চারটি পদে নিয়োগ দিয়েছেন । ওই নিয়োগে প্রায় ৩০/৪০ হাজার টাকা বানিজ্য করা হয়েছে। মিলন হোসেন নামে এক অসহায় ব্যাক্তির স্ত্রীকে বিদ্যালয়ের আয়া পদে চাকুরী দেয়ার কথা বলে চার লক্ষ টাকা নিয়েও চাকুরী দেয়নি। প্রধান শিক্ষকের নিয়মিত মাদক সেবন করা, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী হোসেনের সুদের ব্যবসা এমন নানাবিধ অভিযোগ করেন। এ সময় তারা আরও অভিযোগ করে বলেন,প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি ঘুষ নিয়ে তাদের চারজন আত্মীয়-স্বজনকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে গোপনে নিয়োগ দেন। অথচ যারা এই প্রতিষ্ঠানের জমি দাতা সেই পরিবারের একজনকেও চাকুরী দেয়া হয় নি। যাদের কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা অন্য গ্রামের। ফলে প্রতিষ্ঠান থেকে দূরত্ব বেশি হওয়ায় তারা নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে হাজির থাকেন না। হাজিরা খাতায় এক মাসের স্বাক্ষর এক দিনে করিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক। আমরা এই মাদক সেবনকারী প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের অপসারণ চাই।
ভুক্তভোগী মিলন হোসেন বলেন, আমার চাচা এই বিদ্যালয়ের জমি দাতা। আমাদের পরিবারে একটি চাকরি দিবে এই মর্মে জানালে আমরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার স্ত্রী শিল্পি খাতুনের আয়া পদের জন্য বলি। তখন সভাপতি আলী হোসেন ও প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন,চাকরি নিতে হলে ৭ লক্ষ টাকা লাগবে।পরে সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা চুক্তিতে চার লক্ষ টাকা প্রদান করি। কিন্তু তারা গোপনে অন্য আরেকজনকে চাকরি দিয়ে দিছে। আমার স্ত্রীর চাকরি হয় নাই।পরে আমার প্রদান কৃত টাকা ফেরত চাইলে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তালবাহানা করেন। একপর্যায়ে তারা অস্বীকার করে বলেন টাকা দেবনা যা পারিস করগা। ফলে আমি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি। বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্তাধিন রয়েছেন। আমি গরীব মানুষ। আমার সঙ্গে এই প্রতারণার বিচার চাই,আমার টাকা ফেরত চাই।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,কবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কোন পত্রিকায় সার্কুলার দেওয়া হয়েছে এই মুহূর্তে কোন কিছুই আমার মনে নাই। টাকা নিয়েও চাকুরী না দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সভাপতির সাথে মিলনের লেনদেন হয়েছে কিনা জানিনা। তবে আমার সাথে কোন লেনদেন হয়নি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে অন্য যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে সভাপতি আলী হোসেন মুঠোফোনে জানান,আমি বাইরে আছি। পরে সাক্ষাতে কথা বলবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আফম হাসান বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি। আমার সেটে কথা ভালো বুঝতে পারছি না। একদিন আসেন । সাক্ষাতে কথা হবে বলেই সংযোগ টি কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন,মানববন্ধনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম। এ বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিভাগের আরও খবর....