রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অঘোষিত মাসিক স্লিপ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাসিক মাসোহারা কারণে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফিটনেসবিহীন গাড়ী চলাচলে সড়কে বাড়ছে দূর্ঘটনা, প্রতিনিয়ত হচ্ছে প্রাণ হানি।
অনুমোদনহীন গাড়িতে ছড়াছড়ি এখন নগরজুড়ে কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ পড়ে আছে মোটরসাইকেলের পিছনে। নামকাওয়াস্তে মামলা প্রদান ও রাজস্ব আয় দেখিয়ে ব্যস্ত আছে মাসিক মাসোহারা নিয়ে।
মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অঘোষিত ক্যাশিয়ার কনস্টেবল রিপন, কনস্টবল বেলাল, নিজে প্রতিটি স্পর্ট থেকে মাসিক চাঁদা নেয়। অপরদিকে টি আই-১ এর অঘোষিত ক্যাশিয়ার আবু বাক্কারসহ আরো একজন পাবলিক বিভিন্ন স্থান থেকে মাসিক মাসোহারা নেয় বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
অনুসদ্ধানে জানা যায়, সিএনজি, ট্রাক, বাস, মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলো থেকে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করেন তারা। মাসে ১০-১৫ লক্ষ টাকা মাসিক চাঁদা আসে বিভিন্ন স্থান থেকে। এদিকে দূরপাল্লার বাস কাউন্টার থেকেও নেওয়া মাসিক চাঁদা। দিনের বেলায় নগরীতে চলাচল করা ইট-বালু বহনকারী ট্রাক মালিকদের নিকট থেকেও নেওয়া হয় মাসিক চাঁদা। শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও অটোরিকশায় মাসিক আসে ৩ লক্ষ টাকা। যা অফিসের প্রসিকিউশন সেকশনসহ অন্যান্যরা ভাগ করে নেন। প্রতিটি অটোরিকশা থেকে মাসিক নেওয়া হয় ৩ শত টাকা করে। নগরী চলাচলকারী অবৈধ ভুটভুটি, নছিমন করিমন আটক করে আদায় করা টাকা, যা অফিসের কর্মরত কনস্টেবল নজরুলসহ অন্যান্যরা ভাগ করে নেন। এছাড়াও অফিসে বেলাল, মাহমুদ, নামে এক কনস্টেবল প্রতিনিয়ত আটক ট্রাক, বাসসহ বিভিন্ন ছোট বড় যানবাহনে দেনদরবার করে মোটা অংকের উৎকোচ ছেড়ে দেন। আর এদের দেনদরবারে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউশন শাখার সার্জেন্ট মাহমুদের কাছে এক পাবলিক।
তবে ট্রাফিক বিভাগে নতুন নিয়মে সরাসরি টাকা জমা দেওয়া হয় ব্যাংকে। এতে কিছুটা অনিয়ম দুর্নীতি কমেছে। এই কৃতিত্বটা ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমার উপর বর্তায়। তিনি অনেক কড়াকড়ি নিয়ে ট্রাফিক বিভাগ পরিচালনা করায় অনেক অংশে অনিয়ম আর দূর্নীতি কমে এসেছে। ডিসি কারো ফোন রিসিভ করেন না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে থেমে নেই ফিটনেসবিহীন ভারী গাড়ির মাসিক চাঁদা। বহু ফিটনেসবিহীন গাড়ী এখন চলাচল করে শুধুমাত্র মাসিক চাঁদায়।
অনুসদ্ধানে জানা যায়, রাজশাহীর বাহিরে থেকে আসা ট্রাক আটক করে মোটা অংকের উৎকোচ ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যথায় চলে হয়রানি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাইসমিলের ট্রাক মালিকদের নিকট থেকে নেওয়া হয় মাসিক মাসোহারা। রাজশাহীতে অবস্থিত প্রতিটি মাইক্রো বাস থেকে নেওয়া হয় মাসিক। ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কার, হাইস, মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে নেওয়া মাসিক মাসোহারা।
এ বিষয়ে কথা বলতে টি আই (ওয়ান) আতাউর আল কোরাইশী, এ বিষয় গুলো আমার জানা নেই। সব মিথ্যা কথা।
কথা বললে আরএমপির মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে কেউ এরুপ করলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ট্রাফিকের উপ পুলিশ কমিশনার অনির্বাণ চাকমাকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এই বিভাগের আরও খবর....