দুই স্বামী, এক গৃহবধু ধর্মীয় রীতিকে তোয়াক্কা না করে অবাধে চলছে তার স্বামী বদল। সম্প্রতি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে গত ৭ বছর যাবত ধর্মীয় রীতি ও সমাজ ব্যাবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চলছে ও-ই গৃহবধূর স্বামী বদলের খেলা। অপর দিকে সমাজপতিদের নেই কোন ভূমিকা। স্থানীয়রা বলছেন এ ঘটনায় সমাজ প্রধানদের নিরব থাকা বা কোন পদক্ষেপ না নেওয়া সমাজ ব্যাবস্থার অবনতির শামিল। ও-ই গৃহবধূর অবাধে স্বামী বদলের এ-ই চঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া সিকদার পাড়া এলাকায়।
জানা যায়, ও-ই গৃহবধূ তেঁতুলিয়া সিকদার পাড়া গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ এ-র ছেলে আকসেদ আলী’র (৫০) প্রথম স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। আকসেদ আলী একজন ভ্যান চালক। চলা ফেরায় আকসেদ আলীর সাথে সু সম্পর্ক গড়ে উঠে একই গ্রামের মৃতঃ কাজিম উদ্দিনের ছেলে মন্টু আলী (৪৫) এ-র। সম্পর্কের সুত্র ধরে মন্টু আসা যাওয়া করতে থাকে আকসেদ আলীর বাড়িতে। আসা যাওয়ার ফাঁকে মুন্টু গত ৯ বছর পূর্বে অনৈতিক (পরকীয়া) সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে আকসেদ আলীর স্ত্রী’র সাথে। এ সম্পর্কের বিষয়টি ২ বছর গোপন থাকলেও পরে ঘটনাটি জানাজানি হয়। স্বামীর পরোকীয়ার ঘটনা জানতে পেরে মুন্টুর ১ম স্ত্রী মুন্টুকে ছেড়ে চলে যায়। অপর দিকে আকসেদের স্ত্রী না থাকায় সে অন্যত্র বিয়ে করে। প্রথম স্ত্রী আকসেদের কাছে আসলে দ্বিতীয় স্ত্রী আবার তাকে ছেড়ে চলে যায়। আকসেদের প্রথম স্ত্রীর রঙ্গলীলা দেখে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী।
তাদের এ-ই অনৈতিক কার্যক্রম ঠেকাতে (৪ অক্টোবর) সোমবার স্থানীয় কয়েকজন সচেতন যুবকের উদ্যোগে সামাজিক ভাবে এক শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সমাজ প্রধানদের উপস্থিতিতে উক্ত শালিসে মন্টু হাজির হলেও উপস্থিত হয়নি আকসেদ ও তার স্ত্রী।
আকসেদ আলী বলেন, আমার স্ত্রীর মুন্টুর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তার সকল আত্নীয় স্বজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তার যাওয়ার মতো কোন জায়গা নেই। তাই আমি শেষ বারের মতো আমার ছেলে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সরল মনে কোর্টর মাধ্যমে মুন্টুকে তালাক দিয়ে আমি তাকে গ্রহন করেছি।
চতুর্থ বারের মতো প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে আসা দুই সন্তানের জননী আকসেদ আলীর স্ত্রী বলেন, এতোদিন আমি ভুল করেছি,এখন আমি ভুল বুঝতে পেরে প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে এসেছি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে মুন্টু সাংবাদিকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় সচেতন ব্যাক্তি বলেন, তালাক না নিয়ে আরেক জনের সাথে সংসার করার বিষয়টি অনৈতিক। এ ঘটনাটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে যা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এমন অনৈতিক কর্মকান্ডে সামাজিকভাবে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া সমাজ প্রধানের অযোগ্যতা প্রমান করে।
স্থানীয় আসাদুল ইসলাম, আনারুল ইসলাম সহ এলাকার সচেতন মহল বলেন, মা, বোন, বৌ সবার ঘরেই আছে। তাদের এই অনৈক কাজ যদি এভাবে অবাধে চলতে থাকে, তাদেরকে যদি রোধ করা না যায় তবে প্রতি ঘরে ঘরে এমন অনৈতিক কার্যক্রম চলতে থাকবে এ-র দায় কে নেবে?
সমাজ প্রধান লিয়াকত আলী (আতব) সিকদার বলেন, আকসেদ আলী শালিসে উপস্থিত হয়নি। তাই আমরা থানা পুলিশের শরণাপন্ন হবো। এদিকে এলাকাবাসীদের মনে একটাই প্রশ্ন, তাহলে কি এভাবেই চলবে তাদের অনৈতিক কাজকর্ম।
বাউসা ইউয়নের কাজী নায়েব উদ্দিন বলেন, একজনের স্ত্রী পূর্বের স্বামী কে তালাক দিয়ে আরেক জন গ্রহন করা অথবা তালাক না দিয়ে অন্য জনের সাথে সংসার করা ইসলামী শরিয়া মোতাবেক সম্পূর্ণ নাজায়েজ বা হারাম।
কোর্ট এভিডেভিডের মাধ্যমে যদি তালাক ও গ্রহন একই সময়ে হয় তবে তা অবৈধ বলে গন্য হবে। কারণ, একমাত্র কাজীকে বৈধভাবে তালাক ও বিবাহ রেজিস্ট্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে কাজী নায়েব জানান।
এই বিভাগের আরও খবর....