আনোয়ারুল ইসলাম (আনোয়ার) রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ মানব সেবা পরম ধর্ম, বইতে পড়েছিলাম বাস্তবে তা অবগত হইলাম। বলছি সহজ সরল এমন একজন মানুষের কথা। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউ এন ও) জনাব মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি গত ২০১৮ সালের ১৫ ই জানুয়ারি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার নিবার্হী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে বিশ্বমহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে পাংশা উপজেলা বাসিকে নিরাপদে রাখার জন্য তিনি যে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার ইউএনও, ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্যসামগ্রী। করোনার এই মহাদুর্যোগে দিন-রাত মানুষের পাশে থেকে পুরো উপজেলায় তিনি সাড়া জাগিয়ে তুলছেন। পাংশার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খেটে-খাওয়া মানুষগুলো করোনার এই মহাদুর্যোগে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুঁটে চলেছেন বাড়ি বাড়ি। তাঁর এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ অব্যাহত থাকায় সর্বমহলে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন। রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জনসচেতনতায় বেশ তৎপর রয়েছেন। বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, জরুরি প্রয়োজন ব্যতীরেকে বাসা-বাড়ি থেকে বের না হওয়া। হাটে-বাজারে ব্যবসায়ীরা হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধি করায় তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা। তিনি এ পর্যন্ত ২০১ টি মামলা করেন এবং জরিমানা আদায় করেন ৪,৪৭,৬৫০ টাকা। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে দোকানের সামনে সুরক্ষারেখা অংকন, জনসমাগম রোধে প্রতিদিন বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মহড়া, জনসচেতনতায় দফায় দফায় মাইকিং, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সুবিধাবি তদের মধ্যে নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়াসহ বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছেন এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে ।
চলমান পরিস্থিতিতে সমাজের মধ্যবিত্তসহ অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়লেও ব্যক্তিত্বের কারণে কারো কাছে সাহায্যের জন্য যেতে না পারায় সহায়তা প্রত্যাশীদের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করার কথাও জানান তিনি। তার এ পথ চলা মানবতার কল্যাণের জন্য। মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তার সহযোদ্ধাদের সব সময়ই বলেন, তোমরা মনে রেখো ‘যে জীবন মানুষের কল্যাণে আসে না, সে জীবনের কোনো মূল্য নেই’।
তিনি তার সততা, আদর্শ থেকে কখনও সরে দাঁড়াননি। মিথ্যের সঙ্গে আপোষ করেননি। তাইতো তিনি পাংশার প্রতিটি মানুষের নিকট নিজেকে ভালোবাসার মানুষে পরিণত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এক মহাক্রান্তিকাল পার করছি আমরা সবাই । আমাদের চিরচেনা পৃথিবীর সমস্ত দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিভিন্ন দেশে চলছে মৃত্যুর মিছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। সকলকেই সম্মিলিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে, তবেই আমরা করোনা প্রতিরোধে সফলতা অর্জন করতে পারবো বলে আশা করি। তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সারাদেশের শ্রমজীবি মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছে। ঘরে থাকার এই সময়টাতে তারা যেন পরিবার নিয়ে খাদ্যাভাবে কষ্ট না করেন সেজন্য সরকার খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেয়া রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। আর আমার উপর অর্পিত ওই দায়িত্ব থেকে এই কাজটুকু করা। এ কাজগুলো কোন প্রশংসা অর্জনের জন্য নয়। আমি এবং এই সমাজে বসবাসরত প্রত্যেকেই আমরা মানুষ। এসময় তিনি সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের ভয় পেলে চলবে না। মহান আল্লাহর প্রতি আমাদের আস্থা থাকতে হবে ও সকল নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে রাখতে হবে, “সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।” নাগরিকদের যে কোন সমস্যায় সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের এই জাতীয় সংকটে এগিয়ে এসেছেন মানবতার দূত হিসেবে, সরকারের দেয়া বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন গরীব ও অসহায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। তিনি একজন প্রথম সারির করোনাযুদ্ধা তিনি করোনাকালিন সংকট মোকাবিলায তৎপর। তিনি পাংশার মানুষকে নিরাপদে রাখতে উঠে পড়ে লাগে এই ইউএনও মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। করোনা মোকাবেলায় শুরু থেকেই সাধারন মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহন করেন তিনি।মাইকিং, লিফলেট বিতরন ও বিভিন্ন সভা সেমিনার করেন তিনি। রাজবাড়ী জেলায় করোনা অাক্রান্ত রোগী শনাক্ত হবার পড়েই তিনি পাংশা উপজেলাকে কঠোর নিয়ন্ত্রনে অানেন। পাংশার মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো তদারকি করেন।
এছাড়া পাংশার কেন্দ্রীয় বাজারে যাতে লোক সমাগম কম হয় সেই লক্ষে কাঁচাবাজারের স্থান পরিবর্তন করে পাংশা সরকারী জর্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী বাজারের ব্যাবস্থা করেন। যাতে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে সবাই কেনাবাটা করতে পারে।
এ ভাবেই তিনি কাজ করে যাচ্ছে সবসময়ই। তিনি বলেন মানবতার সেবাই সবচেয়ে বড় কাজ। সবাই নিরাপদে থাকি দুরত্ব বজায় রাখি।নিজে বাঁচি অন্যকে বাঁচাই।