যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পাওয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের দৃষ্টিতে সবচেয়ে কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস সামাল দেয়া দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০ নম্বরে থাকা উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এর আগে বুধবারই যুক্তরাজ্য ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বলে খবর আসে।দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃক তৈরি টিকা ব্যবহারের জন্য বুধবার দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) অনুমোদন দিয়েছে।
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া মোটামুটি শেষ। ভ্যাকসিন আসার একটা সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছিল জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু অনুমোদনের প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় আরও আগে পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়ায় এখন ভারতও অনুমোদন দিয়ে দেবে। হয়ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমোদন দিয়ে দেবে। সেরাম ইন্সটিটিউট আমাদের যেভাবে বলেছে তাতে আমরা আশা করছি, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা তার আগেও আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যেতে পারি। যেহেতু এর অনুমোদন প্রক্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণেই এই মহামারী মোকাবেলায় সফল দেশগুলোর তালিকায় ২০তম স্থানে বাংলাদেশকে রেখেছে ব্লুমবার্গ।
সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে শীতে করোনার সংক্রমণ মোকাবেলায় বিশ্বের দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার আলোকে র্যাংকিং করেছে সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। সেখানে প্রথম স্থানে নিউজিল্যান্ড, পরে তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে এবং সিঙ্গাপুর। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম। তারপরে রয়েছে জার্মানি। তার কয়েক ধাপ পরের অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান, তালিকায় ২৮তম। তারপরে যুক্তরাজ্যের অবস্থান। আর যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে ৩৭তম স্থানে। তার দুই ধাপ পরে অবস্থান প্রতিবেশী দেশ ভারতের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। করোনার কারণে সারা দেশ লকডাউনে চলে গেছে। সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো লকডাউন ছিল না। কারও কোনো ছুটি ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মুবিন খান, স্বাচিপের সভাপতি ডা. এমএ আজিজ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।