২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হাবিবুল ইসলাম হাবিব এ রায়ে মামলার প্রধান আসামি। তিনিসহ আরও তিনজনের ১০ বছর করে এবং বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলায় ৫০ আসামির মধ্যে হাবিবসহ ৩৪ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।
গাড়িবহরে ওই হামলায় শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তার সফরসঙ্গী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফাতেমা জামান সাথী, আবদুল মতিন, জোবায়দুল হক রাসেল এবং শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনির এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তবে, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবের স্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহানারা আক্তার বকুল বলেন, মামলার এজাহার, পুলিশের অভিযোগপত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দির মধ্যে তথ্যগত ব্যাপক গরমিল ও অসংলগ্নতা রয়েছে। সাক্ষীরা কোনভাবেই আসামিদের দোষী প্রমাণ করতে পারেননি।
সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে প্রতিক্রিয়া জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহানারা পারভিন বকুল
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব কলারোয়ায় উপস্থিত ছিলেন এমন কোন প্রমাণও তারা দিতে পারেননি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। ন্যায়বিচার হলে অবশ্যই সকল আসামি খালাস পাবেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০২ সালে কলারোয়ার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন।
কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ মোসলেম উদ্দিন এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। থানা মামলাটি রেকর্ড না করায় একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর তিনি সাতক্ষীরার আমলি আদালতে মামলাটি করেন।এসময় তদন্ত করে পুলিশ তৎকালীন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় এ মামলা খারিজ হয়ে যাবার পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ।