রিক্সা চালিয়ে লেখা-পড়া করেন ৫ম শ্রেনীর ছাত্র লিমন!
দুই বোনের লেখা পড়াও চলছে তার উপার্জিত অর্থেঃ
।।জসিম মাহমুদঃ
গুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের (বর্তমানে আমতলী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের মিঠা বাজার) এলাকার মো. লিমন রিক্সা চালিয়ে যোগান লেখা পড়ার খরচ। আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্র লিমন। শুধু তাই নয় দুই বোনের লেখা পড়াও চলছে তার উপার্জিত অর্থে।
হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের বাবুল প্যাদার ছেলে মো. লিমন। তিন সন্তানকে রেখে লিমনের পিতা বাবুল প্যাদা দ্বিতীয় বিবাহ করায় লিমনের মা জাহানারা বেগম স্বামী বাবুল প্যাদাকে ডিভোর্স দিয়ে আমতলী পৌর শহরের মিঠাবাজারে একটি ছোট ঘরে ভাড়া থাকে। জাহানারা আমতলী সিনেমা হলের পাশে চা বিস্কুটের দোকান দিয়ে দুই মেয়ে ও ছেলেকে স্কুলে পড়া লেখা করান। জাহানারার আয় দিয়ে তিন সন্তানের খাওয়া জোটে না ঠিকমত।
তাই ১১ বছর বয়সী লিমন বাধ্য হয়ে চালাচ্ছেন রিক্সা। দিনে স্কুল শেষে বাসায় ফিরে ঘণ্টাখানিক পড়া লেখা করে রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে পরে লিমন। রাত ১১ টা পর্যন্ত রিক্সা চালিয়ে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয় তার। সেই টাকা দিয়ে চলছে লিমনের বড় বোন লিয়া মনি ও ছোট বোন ফাতেমার লেখা পড়া। লিয়া মনি আমতলী গালর্স স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী ও ফাতেমা আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর।
লিমনের মা জানান, লিমনের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ তার অনেক বেশি। আমার আয়ে সংসার চালানোই দায়, তাই রিক্সা চালাতে বাধ্য হয়েছে সে।
মো. লিমন জানায়, নিজের এবং বোনদের লেখা পড়ার জন্য যত পরিশ্রমী হোকনা কেন সে করবে। কোন ভাবেই বন্ধ করবেন না লেখাপড়া।
আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, লিমন মেধাবী ছাত্র। সে নিয়মিত স্কুলে আসে। লিমনের কাছ থেকে পরীক্ষার কোন ফি নেয়া হয়না । যতটুকু পারি আমরা শিক্ষকরা লিমন ও তার বোন ২য় শ্রেণীর ছাত্রী ফাতেমাকে সহযোগীতা করি ।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান বলেন, লিমন রিক্সা চালিয়ে নিজে ও তার বোনদের পড়া লেখার খরচের জন্য উপার্জন করেন এতে আমি অভিভুত। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে লিমনকে সহযোগীতা করা হবে।
এমটিনিউজ২৪.কম